বাজপেয়ীর জন্মদিনে তাঁর বাড়িতে আত্মীয়দের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। রবিবার। ছবি: পিটিআই
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে সে দিন একটিই বার্তা দিয়েছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। ‘রাজধর্ম পালন করুন।’ সেই সময়ের মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাজপেয়ীর সবচেয়ে চর্চিত ভিডিও বলতে এত দিন ছিল এটাই। আজ নতুন একটি ভিডিও সামনে নিয়ে এলেন খোদ মোদীই। তখন তিনি দলের এক সাধারণ কর্মী। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে মোদীকে দেখেই বাজপেয়ী সস্নেহে পিঠে চাপড় মেরে বুকে টেনে নিচ্ছেন তাঁকে। কাঁচা-পাকা দাড়িতে মোদীও জড়িয়ে ধরেন অটলকে। হাত জোড় করে প্রণাম করেন তাঁকে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী ৯২ পেরোলেন আজ। জন্মদিনে তাঁর বাড়িতে যান প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও। অসুস্থ বাজপেয়ী বহু বছর ধরেই শয্যাশায়ী। তাঁকে এক ঝলক দেখে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে খানিকটা সময় কাটান প্রধানমন্ত্রী। টুইটারে সেই ছবিও পোস্ট করেন। বাজপেয়ীর সঙ্গে পুরনো ভিডিওটি অবশ্য টুইটারে পোস্ট করেছেন তার আগেই। সঙ্গে লিখেছেন, “এই দেখুন, এক জন কর্মীর সঙ্গে দেখা করে অটলজি কী করতেন। তাঁর সারল্য ও উষ্ণতা সব সময় মনে রাখি।” বাজপেয়ীর আরোগ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে তাঁর নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব, সর্বজনগ্রাহ্যতার প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী।
বুকে টেনে নিয়েছেন বাজপেয়ী। মোদীর সেই টুইট-ভি়ডিও।
প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পরই বাজপেয়ীর জন্মদিনকে ‘সুশাসন দিবস’ হিসেবে পালন করার কথা ঘোষণা করেছেন মোদী। এ বার থেকে ১০০ দিন ধরে তা পালন করা হবে। এ বারের একশো দিন মূলত ব্যয় হবে নোট বাতিলের ধাক্কা সামলাতে। ডিজিটাল লেনদেনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে। বর্তমান ক্রীড়ামন্ত্রী বিজয় গয়াল বাজপেয়ীর জমানায় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। প্রতি বারের মতো আজও তিনি দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন।
কিন্তু মোদী আজ যে ভাবে বাজপেয়ীর সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্কের পুরনো ভিডিও প্রকাশ করলেন, অনেকেই সেটাকে পুরনো ক্ষত মেরামতের চেষ্টা বলে মনে করছেন। মোদীর স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব ও ঔদ্ধত্য নিয়ে গোড়া থেকেই বিরোধীরা কটাক্ষ করে যাচ্ছেন। ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নেও বাজপেয়ী ও মোদী দুই ভিন্ন মেরুতে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে রাজনীতিক থেকে আমজনতার ঘরোয়া আলোচনায় যে প্রশ্নগুলি আজ ঘুরপাক খেয়েছে, সেগুলি এই রকম: মোদীর আজকের এই প্রয়াস কি বাজপেয়ী হয়ে ওঠার চেষ্টা? নাকি তিনি বোঝাতে চাইছেন, বাজপেয়ীর পথেই হাঁটছেন তিনি? কিংবা অতীতেও মোদীর পথে বাজপেয়ীর সিলমোহর ছিল, সেটাই কি বোঝাতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী?
কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি অবশ্য প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘‘হাজার চেষ্টা করেও মোদী কোনও দিন অটলবিহারী বাজপেয়ী হয়ে উঠতে পারবেন না।’’ মণীশের যুক্তি, যিনি নিজের দলের নেতাদেরই বিশ্বাস করেন না, দলের প্রবীণদের অবজ্ঞা করেন, বিরোধীদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনার প্রয়োজন মনে করেন না, তিনি কী ভাবে বাজপেয়ীর মতো বড় মাপের নেতা হয়ে উঠবেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy