Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভারত-আমেরিকার এই পরিকল্পনার খবর সত্যি? ঘোর দুশ্চিন্তায় চিন

দক্ষিণ চিন সাগরে যৌথ টহলদারি শুরু করতে চলেছে ভারত ও আমেরিকার নৌসেনা! এমনই খবর সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে। আর এই খবরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়ে গিয়েছে এশিয়া মহাদেশের বিশাল জলসীমায়। দক্ষিণ চিন সাগরকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করা চিন মোটেই খুশি হবে না ভারত-মার্কিন যৌথ টলহদারির খবরে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৫:৩৮
Share: Save:

দক্ষিণ চিন সাগরে যৌথ টহলদারি শুরু করতে চলেছে ভারত ও আমেরিকার নৌসেনা! এমনই খবর সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে। আর এই খবরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়ে গিয়েছে এশিয়া মহাদেশের বিশাল জলসীমায়। দক্ষিণ চিন সাগরকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করা চিন মোটেই খুশি হবে না ভারত-মার্কিন যৌথ টলহদারির খবরে। চিনের পক্ষে আশার কথা হল এই যে, ভারতীয় নৌসেনা এই যৌথ টহলদারির পরিকল্পনার কথা এখনও সরকারিভাবে স্বীকার করেনি।

আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সামরিক সমঝোতা গত এক দশকে বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে এক সময় খোলাখুলি পাকিস্তানের পক্ষে থাকা আমেরিকা ধীরে ধীরে মেরু বদলে এখন ভারতের পাশে। পাকিস্তানকে গোটা বিশ্বের সন্ত্রাসবাদীদের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ রাজধানী বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপের খুব কাছে অবস্থিত দেশ ব্রুনেই-এর সঙ্গে ভারত সামরিক সমঝোতা করার পর, নয়াদিল্লির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মার্কিন নৌসেনার প্রধান অ্যাডমিরাল জন রিচার্ডসন। এই সব ঘটনাই চিন এবং পাকিস্তানের পক্ষে উদ্বেগের বিষয়। কিন্তু ভারত আর আমেরিকার নৌসেনা একসঙ্গে দক্ষিণ চিন সাগরে টহল দিতে শুরু করলে চিনের উদ্বেগ আরও বহুগুণ বেড়ে যাবে।

মার্কিন নৌসেনার এক পদস্থ আধিকারিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ভারত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চিন সাগরে এক সঙ্গে নজরদারি চালানোর বিষয়ে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে কথা হয়েছে। ভারতীয় নৌসেনা এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের এক পদস্থ কর্তা এই যৌথ টহলদারির বিষয়ে আলোচনা এগনোর কথা মেনে নিয়েছেন বলে খবর। বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায় তিনি নাকি নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

আরও পড়ুন:

ভিয়েতনামে উপগ্রহ কেন্দ্র দিল্লির, নজরে চিন

চিনের কৃত্রিম দ্বীপের গা ঘেঁষে উপস্থিতি বাড়াচ্ছে ভারতীয় নৌসেনা

গত ডিসেম্বরে হাওয়াইতে মার্কিন নৌসেনার প্যাসিফিক কম্যান্ডের পরিকাঠামো পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। তখনই ভারত মহাসাগর এবং দক্ষিণ চিন সাগরে মার্কিন ও ভারতীয় নৌসেনার যৌথ টহলদারির শুরু করার বিষয়ে আলোচনা হয় বলে পেন্টাগন সূত্রের খবর। দু’দেশের নৌসেনার মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো হবে বলে ২০১৫-র জানুয়ারিতে এক সঙ্গেই ঘোষণা করেছিলেন মোদী-ওবামা। হাওয়াইতে পর্রীকরের সঙ্গে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আলোচনার যে খবর সামনে এসেছে, তা মোদী-ওবামার ঘোষণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণই। তাই এই খবরকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়াও সম্ভব নয়।

চিনা নববর্ষ উপলক্ষে বেজিং এখন ছুটির মেজাজে। এক সপ্তাহ টানা ছুটি চলছে। চিনের তরফ থেকে ভারত-মার্কিন যৌথ নৌ-টহলদারি সম্পর্কে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। কিন্তু দক্ষিণ চিন সাগরকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে সেখানে এক গুচ্ছ কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করা বেজিং যে ভারত-মার্কিন টহলদারিকে মোটেই ভাল চোখে দেখবে না, তা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমেরিকার মতো ভারতও মনে করে, দক্ষিণ চিন সাগর চিনের নয়। ভারতীয় নৌসেনার একটি যুদ্ধজাহাজ ওই বিতর্কিত এলাকায় স্থায়ীভাবে মোতায়েনও করা হয়েছে। চিন ভারতের এই পদক্ষেপে আগেই বিরক্তি প্রকাশ করেছে। এর পর আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতীয় নৌসেনা ভারত মহাসাগর থেকে দক্ষিণ চিন সাগর হয়ে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত টহল দিতে শুরু করলে দক্ষিণ এশিয়ার দুই বৃহত্তম শক্তির মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE