ছবি: রয়টার্স।
এত দিন ছিল পাকিস্তানের আইএসআই-মদতে পুষ্ট জঙ্গি সংগঠন। এ বার কাশ্মীরের যুবকদের মগজ ধোলাইয়ের চেষ্টা করছে পশ্চিম এশিয়ার ভয়ঙ্কর জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসআইএস। কাশ্মীরি যুবকেরা আইএসআইএস-এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছেন। উদ্বিগ্ন নরেন্দ্র মোদী সরকার এ বার পরিস্থিতির মোকাবিলায় সার্বিক পরিকল্পনা তৈরির সিদ্ধান্ত নিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব এন সি গয়াল অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের বিশেষ সচিব অশোক প্রসাদকে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘কাশ্মীরের সমস্যা সম্পর্কে আমরা অবহিত। আইএসআইএস যাতে কাশ্মীরি যুবকদের নিজেদের জঙ্গি কার্যকলাপে টেনে নিতে না পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের কাছে বিভিন্ন সূত্রে খবর আসছে, কাশ্মীরে আইএসআইএস সক্রিয়। এত দিন পাকিস্তান ছায়াযুদ্ধ চালাত। বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণ ঘটানো হত। সেই জন্য নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু কাশ্মীরকে আবার নিশানা করা হচ্ছে। বিশেষত মুফতি ও বিজেপি-র জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর কাশ্মীরে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চলছে।’’
আইএসআইএস পতাকা।
এখনও পর্যন্ত সরাসরি আইএসআইএস এ দেশে কোনও জঙ্গি নাশকতা ঘটায়নি। সংগঠনের প্রভাবও সীমিত। তবুও কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ইসলামিক স্টেটকে (আইএসআইএস) সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকাভুক্ত করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এ দেশে ওই জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতির দু’টি প্রমাণ রয়েছে কেন্দ্রের হাতে। মহারাষ্ট্রের ১১ জন যুবক আইএস-এ যোগ দিতে ইরাকে পাড়ি দিয়েছিল। সাইবার জগতে ওই সংগঠনের ভাবধারা প্রচারের অভিযোগে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার হয়েছিল কলকাতার যুবক মেহদি মসরুর বিশ্বাস। দু’দিন আগে দিল্লির তিহাড় জেল থেকে দুই অভিযুক্ত সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। তাদের সঙ্গেও আইএসআইএস-এর যোগাযোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চিন্তায় বিষয় হল, হুরিয়ত সমর্থকেরা কিছু দিন আগে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পতাকা নিয়ে কাশ্মীর উপত্যকায় মিছিল করেছে। পুলিশকে লক্ষ করে বিক্ষোভকারীরা ইট ছুড়লে কয়েক জন আহতও হন। কাশ্মীরের সোপোরে অজ্ঞাতপরিচয় এক আততায়ীর গুলিতে তেহরিক-ই হুরিয়তের কর্মী আলতাফ শেখের মৃত্যুর পর কট্টরপন্থী হুরিয়ত নেতা সইদ আলি শাহ গিলানি ওই প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেন। সেখানেই ওড়ানো হয় আইএস এবং পাকিস্তানের পতাকা।
আইএস-কে নিষিদ্ধ করা নিয়ে অবশ্য বিদেশ মন্ত্রকের একাংশের আপত্তি ছিল। কারণ এখনও ইরাকে আইএসের হাতে আটক ৩৯ জন ভারতীয় শ্রমিকের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাঁদের উদ্ধার করতে নানা মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে আইএস-এর সঙ্গেই দর কষাকষি করতে হচ্ছে দিল্লিকে। এই পরিস্থিতিতে ওই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে দর কষাকষি করতে অসুবিধে হবে বলে জানানো হয় বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। কিন্তু বেঙ্গালুরু থেকে মেহদি মসরুর বিশ্বাসের গ্রেফতারির পরে আর ঝুঁকি নিতে চায়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy