Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

খতম সুঞ্জওয়ান হামলার পাণ্ডা

১০ ফেব্রুয়ারি জম্মুর সুঞ্জওয়ানে সেনা ঘাঁটিতে ফিদায়েঁ হামলায় পাঁচ সেনা ও এক সেনার বাবার মৃত্যু হয়েছিল। গোয়েন্দাদের মতে, ওই ঘটনার পিছনে হাত ছিল জইশ-ই-মহম্মদের কম্যান্ডার মুফতি ওয়াকাসের।

মুফতি ওয়াকাস

মুফতি ওয়াকাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪২
Share: Save:

কাশ্মীরে সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে খতম হল সুঞ্জওয়ান হামলার পাণ্ডা মুফতি ওয়াকাস। সেই সঙ্গে গত কাল শোপিয়ানে সেনার গুলিতে মৃত্যু নিয়ে অশান্ত হল উপত্যকা। বিষয়টি নিয়ে বিরোধ শুরু হয়েছে কেন্দ্র ও জম্মু-কাশ্মীর সরকারের মধ্যেও।

১০ ফেব্রুয়ারি জম্মুর সুঞ্জওয়ানে সেনা ঘাঁটিতে ফিদায়েঁ হামলায় পাঁচ সেনা ও এক সেনার বাবার মৃত্যু হয়েছিল। গোয়েন্দাদের মতে, ওই ঘটনার পিছনে হাত ছিল জইশ-ই-মহম্মদের কম্যান্ডার মুফতি ওয়াকাসের। জইশের কম্যান্ডার নুর মহম্মদ তান্ত্রে খতম হওয়ার পরে মুফতিকে উপত্যকায় জঙ্গি হামলা পরিচালনার জন্য পাঠিয়েছিল জইশ। ৩১ ডিসেম্বর কাশ্মীরের লেথপোরায় সিআরপিএফ শিবিরে হামলার পিছনেও ওয়াকাসের হাত ছিল বলে দাবি গোয়েন্দাদের।

আজ অবন্তীপোরার হাটওয়ার এলাকায় ওয়াকাসের উপস্থিতির খবর পেয়ে অভিযানে নামে সেনা ও পুলিশ। সেনা জানিয়েছে, নির্দিষ্ট তথ্য থাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েই ওয়াকাসকে খতম করা হয়েছে। কোনও জওয়ান বা স্থানীয় বাসিন্দা হতাহত হননি।

অন্য দিকে শোপিয়ানে গত কালের গুলিচালনার ঘটনা নিয়ে ক্রমশ জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি। সেনার দাবি, গত কাল পাহনু গ্রামের কাছে যৌথ বাহিনীর মোবাইল চেক পোস্ট লক্ষ করে দু’টি গাড়ি থেকে গুলি চালানো হয়। পাল্টা গুলিতে আমির আহমেদ মালিক নামে এক লস্কর জঙ্গি ও আরও তিন জন খতম হয়। সেনার দাবি, ওই তিন জনও জঙ্গিদের গাড়িতেই ছিল। তারা লস্করেরই কর্মী (ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার)।

ভিড়: সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইয়ে নিহত এক বাসিন্দার শেষকৃত্যে। সোমবার শোপিয়ানের পিঞ্জুরায়। রয়টার্স

আজ ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে আরও দু’টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। ২০০ মিটার দূরে পিনজুরা এলাকায় পাওয়া গিয়েছে জঙ্গিদের একটি গাড়ি। তার মধ্যে গওহর আহমেদ লোন নামে এক স্থানীয় যুবকের দেহ পাওয়া গিয়েছে। সইদাপোরায় আপেল বাগান থেকে উদ্ধার হয়েছে আশিক হুসেন বাট নামে আর এক জনের দেহ। সেনার দাবি, এরা দু’জনেও লস্করের সদস্য। গত কালের হামলায় এই দুই জঙ্গিরও সক্রিয় ভূমিকা ছিল।

কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, পাহনু গ্রামে হামলা চালিয়েছে সেনা। তাদের গুলিতে ছ’জন নিরীহ বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন কাশ্মীরে হরতালের ডাক দিয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। উপত্যকার নানা প্রান্তে বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় জনতা। শ্রীনগরে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে আটক হয়েছেন জেকেএলএফ নেতা ইয়াসিন মালিক।

সেনার দাবি মানতে রাজি নয় মেহবুবা মুফতি সরকারও। আজ খোদ মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, জঙ্গিদের সঙ্গে বাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন স্থানীয় পিডিপি বিধায়ক মহম্মদ ইউসুফ বাট। শোপিয়ানেই সেনার গুলিচালনার অন্য একটি ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াইয়ে জড়িয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য। ফের একই ধরনের মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্রের কর্তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘শ্রীনগরের সরকারে বিজেপিও শরিক। কিন্তু তাও জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে বার বার মতবিরোধ হচ্ছে। এমনকী সেনার বিরুদ্ধে এফআইআরও করছে রাজ্য সরকার। এতে উপত্যকার পরিস্থিতি আরও বিগড়োতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE