Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ যাত্রায় রক্ষা, আশায় কাশ্মীর

মেঘ এখনও কাটেনি। আকাশের মুখ ভার হয়েই। যদিও বৃষ্টি থেমেছে অনেক ক্ষণ। ঝিলম এখন বেশ শান্ত। কাশ্মীরের নিচু এলাকাগুলো থেকে বন্যার জল অনেকটাই নেমে গিয়েছে। তাতেই বাসিন্দাদের আশা, এ বারের মতো হয়তো অল্পের উপর দিয়েই ফাঁড়া কেটে গেল। তবে এখনও মাথার উপর ঝুলছে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসের খাড়া। আবহবিদদের আশঙ্কা, কাল থেকে বৃষ্টি শুরু হবে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে হাল্কা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৩২
Share: Save:

মেঘ এখনও কাটেনি। আকাশের মুখ ভার হয়েই। যদিও বৃষ্টি থেমেছে অনেক ক্ষণ। ঝিলম এখন বেশ শান্ত। কাশ্মীরের নিচু এলাকাগুলো থেকে বন্যার জল অনেকটাই নেমে গিয়েছে। তাতেই বাসিন্দাদের আশা, এ বারের মতো হয়তো অল্পের উপর দিয়েই ফাঁড়া কেটে গেল।

তবে এখনও মাথার উপর ঝুলছে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসের খাড়া। আবহবিদদের আশঙ্কা, কাল থেকে বৃষ্টি শুরু হবে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে হাল্কা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত। এরই মধ্যে বন্যা-বিপর্যস্ত এলাকাগুলোয় উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)। গত কালই খবর এসেছিল, বদগাম জেলার লাদেন গ্রামে ধস চাপা পড়েছে কয়েকটি বাড়ি। ছ’জনের দেহ উদ্ধারও করা হয়। আশঙ্কা করা হয়ছিল, আরও ১০ জনের দেহ চাপা পড়ে আছে। তাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়। এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭।

এ দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘পরিস্থিতি গত বারের থেকে ভাল। তবে আমরা তৈরি রয়েছি। যদি প্রয়োজন হয়, তা হলে আরও সাহায্য পাঠানো হবে।’’ শ্রীনগরের ডেপুটি কমিশনার ফারুক আহমেদ-ও জানান, যে কোনও অবস্থার জন্য প্রস্তুত রয়েছে এনডিআরএফ। তা ছাড়া পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে ছ’টি থানাও। যথেষ্ট সংখ্যায় টিউব, দড়ি, বালির বস্তা মজুত রাখা হয়েছে থানাগুলোয়। এনে রাখা হয়েছে মোটরবোটও।

ঝিলমের ধার ঘেঁষে প্রত্যেকটা অঞ্চলের উপর আলাদা করে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। গত বছর সেপ্টেম্বরের বন্যায় সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এই অঞ্চলগুলোই। ভেসে গিয়েছিল নদীর পার্শ্ববর্তী লালচক বাজার। বন্ধ দোকানের মধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল জুতো-জামাকাপড়। তবে আজ নদীস্তর অনেকটাই নেমেছে। কাল সঙ্গমে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছিল ঝিলম। এ দিন সেখানে জলস্তর নেমেছে ফুট আষ্টেক।

বৃষ্টি ধরে যাওয়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে শ্রীনগর-জম্মু ৩০০ কিলোমিটার জাতীয় সড়কের এক দিক। তবে ছোট গাড়িগুলোকেই শুধু যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। বন্যার জন্য তিন দিন বন্ধ ছিল ওই জাতীয় সড়ক। স্কুল-কলেজ এখনও বন্ধ। কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য তাদের পরীক্ষা বাতিল করেনি। জানানো হয়েছে, নির্ধারিত দিন অনুযায়ীই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরু হবে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন কালিম্পংয়ে। বন্যাকবলিত কাশ্মীরে পশ্চিমবঙ্গের আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধারের ব্যাপারে নজর রাখছেন সেখান থেকেই। এ দিন সে কথা জানিয়েছেন আবাসন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি জানান, পহেলগামের একটি হোটেলে বেহালার বাসিন্দা সরোজ বসু-সহ ৩২ জন আটকে আছেন। অন্য একটি হোটেলে টালিগঞ্জের বাসিন্দা গৌতম পোদ্দার-সহ ১৬ জন এবং মতিশীল স্ট্রিটের ৩০ জন বাসিন্দা আটকে আছেন। রাজ্য সরকারের দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি সুরেশ কুমার কাশ্মীর প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ দিন রাতেই ১৫ জনকে বিমানে কলকাতায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাকি আটকে পড়া পর্যটকদের ট্রেনে ও বিমানে যত দ্রুত সম্ভব ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবাসন মন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE