Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কাঠুয়া ধর্ষণ মামলায় মুফতি সরকারের অবস্থান কী, জানতে চাইল আদালত

কাঠুয়া ধর্ষণ ও খুনের মামলা স্থানান্তরিত করার আবেদন নিয়ে মেহবুবা মুফতি সরকারের অবস্থান ২৭ এপ্রিলের মধ্যে জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অন্য দিকে নাবালিকা ধর্ষণের মামলায় দ্রুত বিচার চেয়ে বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক আদালত গড়ার দাবিতে সরব হয়েছেন রাহুল গাঁধী।

হাজিরা: কাঠুয়া গণধর্ষণ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সঞ্জি রাম (একেবারে ডান দিকে)-সহ বাকি ধৃতদের সোমবার আদালতে পেশ করা হয়। পিটিআই

হাজিরা: কাঠুয়া গণধর্ষণ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সঞ্জি রাম (একেবারে ডান দিকে)-সহ বাকি ধৃতদের সোমবার আদালতে পেশ করা হয়। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০৯
Share: Save:

কাঠুয়া ধর্ষণ ও খুনের মামলা স্থানান্তরিত করার আবেদন নিয়ে মেহবুবা মুফতি সরকারের অবস্থান ২৭ এপ্রিলের মধ্যে জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অন্য দিকে নাবালিকা ধর্ষণের মামলায় দ্রুত বিচার চেয়ে বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক আদালত গড়ার দাবিতে সরব হয়েছেন রাহুল গাঁধী। আজ নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে রাহুলের বার্তা, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যদি আন্তরিক হন, তাহলে নাবালিকাদের ধর্ষণের মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ আদালত গঠন করুন।’’

কাঠুয়া ও উন্নাওয়ের ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে রাহুল গাঁধীর মধ্যরাতের মিছিলের পরে মুখ খুলতে বাধ্য হন নরেন্দ্র মোদী। মিছিলের পরের দিনই মোদী জানান, দেশের মেয়েরা বিচার পাবেই। তবে বিজেপির একটি অংশ যে ভাবে অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছে তাতে নিরপেক্ষ বিচার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন শিবিরে। এই পরিস্থিতিতে আজ রাহুল একটি টুইট করে বলেন, ‘‘২০১৬ সালে ১৯,৬৭৫ জন নাবালিকা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। খুবই লজ্জাজনক ঘটনা। যদি আমাদের মেয়েদের সুবিচার দেওয়ার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক হন তাহলে নাবালিকা ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলাগুলির জন্য ফাস্ট ট্র্যাক আদালত গঠন করে দ্রুত নিষ্পত্তি করুক সরকার।’’ বিষয়টি নিয়ে আজ মুখ খুলেছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নয়া প্রধান ভি এস কোকজেও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ঘটনাটি লজ্জাজনক। তবে বিভেদকামী শক্তি ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা করছে।’’

এই টানাপড়েনের মধ্যেই কাঠুয়া মামলা জম্মুর বাইরে চন্ডীগড়ে সরানোর নিয়ে নির্যাতিতার বাবার আর্জির শুনানি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ জানান, রাজ্যে ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ হয়েছে। তাই সব দিক বিচার করেই ওই মামলা সরানোর আর্জি জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীর সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। তবে এই মুহূর্তে তদন্ত সিবিআই করবে না রাজ্য পুলিশ তা নিয়ে কোনও নির্দেশ দিতে রাজি হয়নি শীর্ষ আদালত। বরং নির্যাতিতার পরিবার ও তাঁদের আইনজীবী দীপিকা রাজাবতের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। গত কাল নিজের সুরক্ষা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন দীপিকা। তিনি বলেন, ‘‘আমাকেও ধর্ষণ বা খুন করা হতে পারে। আদালতে কাজ করাও বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।’’

বকরওয়াল জনজাতির আট বছরের ওই মেয়েটির ধর্ষণের মামলাটির বিচার আজ শুরু হয় কাঠুয়া আদালতে। কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল মেহবুবা মুফতির সরকার। শুনানিতে আট অভিযুক্তের আইনজীবী অনুকা শর্মা জানান, তাঁর মক্কেলরা লাই-ডিটেক্টর টেস্টের জন্য তৈরি। বিচারক জানান, মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৮ এপ্রিল।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল জম্মুর আইনজীবীদের একাংশের বিরুদ্ধে। পরে একাধিক দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেন কাঠুয়া ও জম্মুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা। আজ অবশ্য বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার অনুরোধে কাজ শুরু করেন তাঁরা।

এরই মধ্যে প্রায় নিঃশব্দে কাশ্মীর উপত্যকার দিকে রওনা দিয়েছে নির্যাতিতার পরিবার। পেশায় মেষপালক বকরওয়াল জনজাতির মানুষ গ্রীষ্মে থাকেন সেখানেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE