Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

টিলার মাথায় নেটওয়ার্ক, রেশন তুলতে হয়রান গ্রাম

‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র ঠেলায় নাজেহাল দুমকার কুলডিহা গ্রাম। তাই রেশনের চাল, ডাল, গম তুলতেও পাহাড়-জঙ্গলের পথ ভেঙে টিলার চূড়ায় চড়তে হচ্ছে গ্রামবাসীদের!

ডিজিটাল: নেটওয়ার্কের খোঁজে টিলার মাথায় চলেছেন গ্রামবাসীরা। সঙ্গে পিওএস মেশিন হাতে চলেছেন স্থানীয় রেশন ডিলারও। দুমকার কুলডিহায়। নিজস্ব চিত্র।

ডিজিটাল: নেটওয়ার্কের খোঁজে টিলার মাথায় চলেছেন গ্রামবাসীরা। সঙ্গে পিওএস মেশিন হাতে চলেছেন স্থানীয় রেশন ডিলারও। দুমকার কুলডিহায়। নিজস্ব চিত্র।

আর্যভট্ট খান
রাঁচী শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৭
Share: Save:

‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র ঠেলায় নাজেহাল দুমকার কুলডিহা গ্রাম। তাই রেশনের চাল, ডাল, গম তুলতেও পাহাড়-জঙ্গলের পথ ভেঙে টিলার চূড়ায় চড়তে হচ্ছে গ্রামবাসীদের!

গণবণ্টন ব্যবস্থায় দেশের অনেক প্রান্তে এখন এসেছে ‘বায়োমেট্রিক পয়েন্ট অব সেলস’ যন্ত্র। আঙুলের ছাপ দিলে বের হয় স্লিপ। ডিলারের কাছে তা দেখিয়ে নির্ধারিত মূল্যে মেলে চাল, ডাল, গম। ঝাড়খণ্ড সরকারও চালু করেছে এই ‘বায়োমেট্রিক গণবন্টন’।

দুমকার দরবারপুর পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত কুলডিহায় টাওয়ার নেটওয়ার্ক বেশিরভাগ সময়ই থাকে না। আর নেটওয়ার্ক না থাকায় কাজ করে না ‘পিওএস’। গ্রাম থেকে ক্রোশ খানেক দূরে পাঞ্জি পাহাড়। জঙ্গলের পথে পাথুরে চড়াই ভেঙে পৌঁছতে হয় সেখানে। টিলার চূড়ায় মেলে ঈপ্সিত নেটওয়ার্ক। রেশন তুলতে প্রতি শুক্রবার তাই পাঞ্জি পাহাড়ের মাথায় ভিড় জমান কুলডিহা ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা।

কুলডিহার বাসিন্দা মঙ্গল হেমব্রম শোনালেন পাহাড় চূড়ায় নেটওয়ার্ক আবিষ্কারের সেই কাহিনী। এক দিন স্থানীয় রেশন ডিলার পিওএস যন্ত্র নিয়ে ওই টিলা দিয়ে কোথাও যাচ্ছিলেন। হঠাৎই সেখানে নেটওয়ার্কের সাড়া পান তিনি। মঙ্গলের কথায়, ‘‘সেই থেকে শুরু। রেশনের স্লিপ নিতে তখন থেকেই আমরা যাই ওই পাঞ্জি পাহাড়ের মাথায়।’’ গ্রামে ফিরে রেশন দোকানে সেই ‘স্লিপ’ দেখিয়ে চাল, গম কেনেন তাঁরা। এলাকার বাসিন্দা রসিদি টুডু বলেন, ‘‘পাহাড়ে যেতে অনেক সময় নষ্ট হয়। ক্ষতি হয় কাজের। বয়স্ক মানুষ আর মহিলাদের খুবই অসুবিধা হচ্ছে।’’ পুরনো নিয়মে ফিরতে চান অনেকে।

ইতিমধ্যেই এ ধরণের বেশ কয়েকটি অভিযোগ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছে বলে স্বীকার করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সরয়ূ রায়। তবে পুরনো পদ্ধতি ফেরানোর সম্ভাবনা নেই বলেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতি মোকাবিলায় এই ব্যবস্থা অত্যন্ত কার্যকর হয়েছে। যে সব জায়গায় নেটওয়ার্কের সমস্যা

রয়েছে, সেখানে অন্য ব্যবস্থা করার সুযোগ রয়েছে।’’ মন্ত্রী জানান, নেটওয়ার্ক না থাকলেও ‘অফলাইন’-এ পিওএস যন্ত্রে গ্রাহকদের আঙুলের ছাপ নেওয়া যায়। পরে এক দিন রেশন ডিলার ওই যন্ত্র নিয়ে শহরে গিয়ে যন্ত্র অনলাইন করে স্লিপ বের করে নিতে পারেন। সরযূবাবুর বক্তব্য, ‘‘তা হলেই তো সমস্যা সমাধান সহজ হয়ে যায়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Digital India Kuldiha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE