সেই-সফর: সাবরমতীতে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
অফুরন্ত জল পেয়ে ভরে গিয়েছিল চাষের খেত, নালাগুলো। চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছিল। সাবরমতীর টলটলে জলে সি-প্লেন চালিয়ে হাসিমুখে ছবি তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ছবিটা বিধানসভা ভোটের সময়ের।
ভোট শেষ। ছবিটা উল্টে গিয়েছে মোদীর গুজরাতে! জল নেই খেত-খামারে। সেচের নালাগুলো শুকনো। নদীর অবস্থাও তথৈবচ। অবস্থা এমনই, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী বলে দিয়েছেন, বন্ধ করুন চাষবাস। রবি ফসল সরকার বাঁচিয়ে নেবে। কিন্তু গরমের সময় যেন চাষবাস না করেন কৃষকরা। সেচের জন্য জল দেওয়া যাবে না। কারণ, সরকারের অগ্রাধিকার পানীয় জল সরবরাহ করা। কারখানাগুলোয় জল সরবরাহে অবশ্য টান পড়েনি।
এত জল সঙ্কটের কারণ কী? বিরোধীদের অভিযোগ, বিধানসভা ভোটের সময় নর্মদার জল প্রয়োজনের থেকে বেশি খরচ করে ফেলেছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। নর্মদার জল সাবরমতীতে টেনে এনে সি-প্লেন চড়ে তখন সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এখন জলে টান পড়েছে। সর্দার সরোবরের বাঁধে জলস্তর নেমে গিয়েছে ৪০ শতাংশের নীচে। অথচ গরম কাল শুরুই হয়নি। বর্ষা তো তারও পরে। অবস্থা সামাল দিতে মধ্যপ্রদেশের কাছে নর্মদার জলের জন্য দরবার করেছিল গুজরাত। কিন্তু বছরশেষে বিধানসভা ভোটের কথা ভেবে সটান না করে দিয়েছে সেখানকার বিজেপি সরকার। এই অবস্থায় চাষের জল দেওয়া যাবে না বলে কৃষকদের বড় সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে রূপাণী সরকার।
আরও পড়ুন: হাতে ভোট দিলে সরকারি সুবিধা নয়: বিতর্কে যশোধরা রাজে
বাড়তি জল খরচের অভিযোগ উড়িয়ে রূপাণী সরকারের দাবি, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্রেও একই সমস্যা তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি কম হওয়ায় এই অবস্থা। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, গত বছর গুজরাত-সহ পশ্চিম ভারতে বৃষ্টি কিছুটা কম হলেও তা সঙ্কটজনক নয়। তা ছাড়া, সারা বছর জল যাতে সব কাজের জন্য সমান ভাবে ব্যবহার করা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়েই তো এগোয় সরকার।
গুজরাতের কৃষকেরা এ সব কচকচি শুনতে নারাজ। তাঁদের অভিযোগ, সানন্দে ন্যানো কারখানায় জল আসছে, অথচ পাশের খেত শুকনো! প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে জল না পেয়ে মাঠেই শুকিয়ে যেতে বসেছে জোয়ার-গম। তার উপর গরমের চাষও মার গেলে খাবেন কী! কংগ্রেসের শক্তিসিংহ গোহিলের বক্তব্য, বিজেপি বরাবরই হাতে গোনা কিছু শিল্পপতিকে সুবিধে দেয়। চাষিদের কথা কখনওই ভাবে না। আর এক কংগ্রেস বিধায়কের কথায়, ‘‘এখন যতই যন্ত্রণা দিন, ভোটের আগে এই চাষিদের জন্যই কেঁদে ভাসাবেন মোদী!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy