পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।
লালুপ্রসাদের ‘সেবা’ করতেই কি জেলে তাঁর পিছু পিছু হাজির দুই অনুগত কর্মী—এই প্রশ্নে এখন রাঁচীর পুলিশ রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে নড়েচড়ে বসেছে জেল কর্তৃপক্ষ থেকে পুলিশ, সব মহলই। পুলিশ কর্তারা এই দুই অনুগামীর ‘জেল যাত্রা’-র কার্য-কারণ নতুন করে পর্যালোচনা শুরু করেছেন।
আরজেডি-প্রধান লালুপ্রসাদ রাঁচীতে এলে ২৪ ঘণ্টাই তাঁর সঙ্গে ছায়ার মতো থাকেন মদন যাদব ও লক্ষ্মণ মাহাতো। নেতার যাবতীয় সেবার দায়িত্ব এঁদের। ঝাড়খণ্ডের আরজেডি নেতা কৈলাশ যাদব স্বীকার করেছেন, ‘‘মদন ও লক্ষ্মণ দু’জনেই লালুপ্রসাদের অত্যন্ত অনুগত। তিনি রাঁচী এলেই নেতাজির সঙ্গে এঁরা দু’জনে ২৪ ঘন্টা থাকেন।’’ তবে নেতা জেলে গেলেই তাঁরাও জেলে যান এমন তথ্য তাঁর জানা নেই বলেই কৈলাশ যাদবের বক্তব্য।
যদিও রাঁচী পুলিশ ও বিরসা মুন্ডা জেলের রেকর্ড বলছে, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লালুপ্রসাদ যখন চাইবাসা ট্রেজারি মামলায় পাঁচ বছরের জন্য দণ্ডিত হয়ে বিরসা মুন্ডা জেলে গিয়েছিলেন, তার কয়েকদিনের মধ্যেই একটি মামলায় বিচারাধীন বন্দি হয়ে জেলে হাজির হয়ে যান মদন যাদব। এবারও ঠিক তাই হয়েছে। ২৩ ডিসেম্বর আরজেডি-প্রধান পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির দেওঘর ট্রেজারির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে বিরসা মুন্ডা জেলে যান। সেই দিনই ওই জেলে কয়েদি হিসেবে পৌঁছে যান মদন। এ বার তার সঙ্গী হয়ে জেলে হাজির লক্ষ্মণ মাহাতোও।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কা নৌসেনার হামলা, আক্রান্ত সাড়ে তিন হাজার ভারতীয় মৎস্যজীবী
আরও পড়ুন: পুলিশি অনুমতির তোয়াক্কা না করেই সভা জিগ্নেশের
কী অভিযোগে মদন ও লক্ষ্মণ জেলে গেলেন? পুলিশ সূত্রে খবর, ২৩ ডিসেম্বর সুমিত যাদব নামে রাঁচীর এক যুবক লোয়ার বাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন, মদন ও লক্ষ্মণ তাঁকে মারধর করে তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। লোয়ার বাজার থানার ওসি সুমন কুমার সিনহা জানান, ওই দুই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁরা আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাঁদের জেল হেফাজতে পাঠায়। যদিও বিতর্ক শুরু হওয়ার পর জেল সুপার অশোক চৌধুরি দাবি করেছেন, ‘‘এই জেলে ২ হাজার ৮০০-র কাছাকাছি কয়েদি রয়েছে। লালুপ্রসাদ রয়েছেন আপার ডিভিশন সেলে। এখনও পর্যন্ত ওই নামের দুই কয়েদির সঙ্গে লালুপ্রসাদের মোলাকাত হয়নি।’’
আরও পড়ুন: আপাতত বদলাচ্ছে না মার্কিন ভিসা নীতি, স্বস্তিতে ভারতীয়রা
কিন্তু বার বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে প্রশ্ন উঠেছে, নেতার সঙ্গে অনুগতদের জেলে যাওয়া কি নিতান্তই কাকতালিয়, নাকি পূর্ব পরিকল্পিত? রাঁচীর এসএসপি কুলদীপ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘সমস্ত ঘটনা আমরা নতুন করে পর্যালোচনা করছি। ছিনতাইয়ের মামলাটিতে কতটা সত্যতা আছে তাও আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ তবে আইন মেনেই ওই দুই অভিযুক্তকে জেলে পাঠানো হয়েছিল বলে এসএসপি-র দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy