সৌজন্য: ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের বাড়িতে মমতা। ভুবনেশ্বরে বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
আঞ্চলিক শক্তির জোট গড়েই বিজেপি-র মোকাবিলায় এগোতে হবে। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে দেখা করার পরে ফের সেই বার্তাই দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুরী থেকে ভুবনেশ্বরে ফিরে বৃহস্পতিবার বিকালে মমতা গিয়েছিলেন এরোড্রোম রোডের ‘নবীন নিবাসে’। দুই মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে কথা হয় ৯ মিনিট। নবীনের বাবা-মায়ের ছবিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং ফুলের তোড়া বিনিময় করে ভিতরে ঢুকে যান মমতা। কথা শেষে বেরিয়ে নবীন বলেন, ‘‘এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দেখা করতে চেয়েছিলেন। এখানে রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা হয়নি।’’ আর মমতা বলেন, ‘‘৩৬৫ দিনই তো
রাজনীতি থাকে! নবীনের সঙ্গে আমাদের ভাল সম্পর্ক। ওরা আগামী দিনে ভাল ফল করবে।’’ ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়েই কলকাতা ফেরার উড়ান ধরতে চলে যান তৃণমূল নেত্রী।
তবে ওড়িশা ছাড়ার আগে এক দিকে মমতা যেমন বিজেপি-ভীতিকে গুরুত্ব দিতে চাননি, তেমনই আঞ্চলিক শক্তির একজোট হওয়ার কথা ফের বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি-কে বিরাট ভয় পাওয়ার কিছু আছে বলে আমি মনে করি না। ওরা শুধু বিভাজনের রাজনীতি করে। এমনকী, পয়সা দিয়ে সাংসদ-বিধায়কও কিনে নেয় ওরা!’’
আরও পড়ুন: নারদ জয়ন্তীও করবে সঙ্ঘ
সাম্প্রতিক কালে মমতার রাজ্যে তৎপরতা বাড়িয়েছে গেরুয়া শিবির। রামনবমীতে অস্ত্র হাতে দাপিয়ে বেড়িয়েছে সঙ্ঘ পরিবারের নানা সংগঠন। আবার দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভার উপনির্বাচনে ভোট বাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। ভুবনেশ্বরেই জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক থেকে বিজেপি-র অমিত শাহ বার্তা দিয়েছেন, বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই দলকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি-কে মোকাবিলা করার পাল্টা কৌশল হিসাবেই মমতার নবীন-বৈঠক বলে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যা। মমতা নিজেও এ দিন বলেছেন, আঞ্চলিক শক্তিগুলি এখন নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলেছে। বিজেপি-কে আটকাতে তারাই যথেষ্ট।
কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অন্য একাংশের মত, কংগ্রেস শক্তি ফিরে না পেলে জাতীয় স্তরে বিজেপি-কে রোখা এখন কঠিন। ধর্মনিরপেক্ষ, আঞ্চলিক শক্তির জোট কার্যকরী হতে পারে শক্তিশালী কংগ্রেসকে ঘিরেই। তাই শুধু মমতা-নবীনের মতো একটি একটি রাজ্যের ক্ষমতাসীন শক্তির বৈঠককে খুব তাৎপর্যপূর্ণ ধরতে রাজি নন তাঁরা।
বিজেপি-র তরফে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান অবশ্য মমতা-নবীনদের বিঁধে বলেছেন, ‘‘দুর্নীতির সূত্রে তৃণমূল এবং বিজেডি-র সম্পর্ক স্বাভাবিক! দুই রাজ্যের মানুষ শীঘ্রই দু’টো দলকে উৎখাত করে বিজেপি-কে ক্ষমতায় আনবেন।’’ আর দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের কটাক্ষ, ‘‘বিরোধী জোট ধাক্কা খেল নবীন পট্টনায়কের কাছেই। কারণ, মমতাকে পাশে বসিয়ে নবীন বলে দিলেন রাজনৈতিক
আলোচনা হয়নি! তার মানে ওঁর আঞ্চলিক জোটের স্বপ্নে জল ঢেলে দিলেন নবীন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy