দিল্লি সরকার ও উপ-রাজ্যপালের লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের পাশে দাঁড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেজরীকে এ দিন স্বস্তি দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্টও।
বিতর্কের মধ্যে ‘পরামর্শ’ চাইতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী টেলিফোন করেন মমতাকে। পরে মমতা টুইট করেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় এত বেশি নাক গলানো মেনে নেওয়া যায় না। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার নির্বাচনে জিতেই ক্ষমতায় এসেছে। প্রতিটি সরকারের নিজস্ব সীমা রয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের উচিত পরস্পরের প্রতি সম্মান দেখানো।’’ কেজরীবালের সঙ্গে বেশ কিছুদিন থেকেই রাজনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দিল্লির ভোটে বিজেপির বিরোধিতা করতে আপের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই ভোটে বিজেপি খড়কুটোর মতো উড়ে যেতেই তাঁদের সম্পর্ক আরও গভীর হয়ে ওঠে। রাজ্যসভার তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ ব্রায়েন কেজরীবালের সঙ্গে নিয়মিত ভাবে যোগাযোগ রেখে যাচ্ছিলেন। এর আগে মমতা-কেজরীবাল টেলিফোনে কথাও বলেছেন। কিন্তু এ বার দিল্লির উপ-রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত তীব্র ওঠায় এবং এই লড়াইয়ে মোদী সরকার সরাসরি তাঁর বিরোধিতায় নামায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী যোগাযোগ করেন মমতার সঙ্গে। বিজেপিকে বেগ দিতে এ দিন কেজরীবালের পাশে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস নেতা, পি চিদম্বরমও। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘নির্বাচিত সরকারের কাছে অন্তত আমলা নিয়োগের ক্ষমতা থাকা উচিত।’’
তাঁর সরকারের একশো দিনের কাজের খতিয়ান দিতে এ দিন জনতার কাছে গিয়েছিলেন কেজরীবাল। দিল্লির কনট প্লেসের সেন্ট্রাল পার্কের সভাকে প্রত্যাশিত ভাবেই কেন্দ্র-বিরোধী মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করেন তিনি। এরই মধ্যে দিল্লি হাইকোর্টের রায় পক্ষে যাওয়ায় বাড়তি সুবিধে পেয়ে যান কেজরীবাল। দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে। তবু ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দিল্লি পুলিশের এক কনস্টেবলকে দিল্লি সরকারের দুর্নীতি দমন শাখা গ্রেফতার করতে পারে কিনা, তা নিয়ে মামলা ছিল হাইকোর্টে। শুনানিতে দিল্লি সরকারের পক্ষে দাঁড়ায় হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, নির্বাচিত সরকারকে উপেক্ষা করতে পারেন না উপ-রাজ্যপাল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, আমলা নিয়োগে উপ-রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। পাশাপাশি, দিল্লিতে কর্মরত কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের দুর্নীতির অভিযোগে দিল্লি সরকার গ্রেফতার করতে পারে না। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় আদালতে যায় কেজরীবাল সরকার। শুনানিতে উপ-রাজ্যপালের অতিসক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালত পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, উপ-রাজ্যপালের উচিত আইনি অধিকারের বিষয়গুলিতে নির্বাচিত সরকারের পরামর্শ নিয়ে চলা। যে ক্ষেত্রে দিল্লি সরকার আইন প্রণয়ন করতে সক্ষম, সেখানে উপ-রাজ্যপাল যেন নিজের কর্তৃত্ব না ফলান। হাইকোর্টের ওই পর্যবেক্ষণে অস্বস্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যদিও মন্ত্রকের যুক্তি, তারা মামলার অংশীদার ছিল না। আদালত কী বলেছে, তা জানার পরেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
দিল্লিতে চলতি বিতর্কের সূত্রপাত মুখ্যসচিব কে কে শর্মার ছুটিতে যাওয়ার পরে। দশ দিনের ছুটি কাটিয়ে আজ কাজে যোগ দিলেও তাঁর পদে অস্থায়ী নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক থামার কোনও লক্ষণ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy