বোধরাজ
পাকিস্তানের পাল্টা হানায় উত্তপ্তই রইল জম্মু-কাশ্মীরের আন্তর্জাতিক সীমান্ত। সেই সঙ্গে আবার বাহিনীর মাথাব্যথা বাড়িয়ে জম্মুর সাম্বাতে গ্রেফতার হয়েছে এক পাক চর।
গত কাল বিএসএফ দাবি করে, তাদের গুলিতে কাঠুয়া জেলার হীরানগর সেক্টরে সাত জন পাক রেঞ্জার্সের মৃত্যু হয়েছে। আজ রেঞ্জার্সদের মৃত্যুর খবর পাকিস্তান অস্বীকার করেছে। কিন্তু ভারতের সেনা চৌকি ও গ্রাম লক্ষ করে প্রবল হামলা চালিয়েছে পাক বাহিনী।
সবচেয়ে বেশি পাক হামলার শিকার হয়েছে কাঠুয়াই। হীরানগর সেক্টরে হামলার তীব্রতা এত বেশি ছিল যে পাক বাহিনীর গোলা সীমান্তের কাছে গ্রামের মধ্যে এসে পড়তে থাকে। ফলে ঝুঁকি না নিয়ে সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামের প্রায় ৪০০ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেওয়া হয়। পাক বাহিনীর গুলি থেকে গ্রামবাসীদের রক্ষা করতে ব্যবস্থা করা হয় বুলেটপ্রুফ গাড়ির।
অন্য দিকে আরএসপুরা সেক্টরে পাক বাহিনীর নিশানায় ছিল মূলত করতানা ও বিধিপুর গ্রাম। গ্রামবাসীরা নিরাপদে থাকলেও পাক বাহিনীর গুলিতে একাধিক গৃহপালিত পশুর মৃত্যু হয়েছে। জম্মুর ডেপুটি কমিশনার সিমরনদীপ সিংহ বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের ঘরের ভিতরে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
এরই মধ্যে আজ জম্মুর সাম্বা এলাকা থেকে এক পাক চরকে গ্রেফতার করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। পুলিশের দাবি, সীমান্তে ভারতীয় সেনার গতিবিধি সম্পর্কে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইকে তথ্য পাচার করছিল ওই ব্যক্তি। পুলিশের সন্দেহ, বোধরাজ নামে জম্মুর ওই বাসিন্দা বেশ কিছু দিন ধরেই চরের কাজ করে আসছিল। এ দিন আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে জেদরা গ্রামে বোধরাজকে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাম্বার সিনিয়র পুলিশ সুপার যোগেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘ধৃতের কাছ থেকে দু’টি পাকিস্তানি সিম, কাশ্মীরের কোথায় সেনা মোতায়েন করা রয়েছে তার মানচিত্র, একটি মেমোরি কার্ড, দু’টি মোবাইল ও ১,৭১১ টাকা পাওয়া গিয়েছে।’’ বোধরাজকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা রামগড়ে তার সঙ্গীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
গত কাল রাতে বারামুলা থেকে জইশ-ই-মহম্মদের দুই জঙ্গিকেও পাকড়াও করেছেন ৫২ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ানরা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সাফির আহমেদ বাট ও ফারহান ফৈয়াজ নামে ওই দুই জঙ্গি জইশের একটি স্থানীয় মডিউলের সদস্য। খালিদ নামে এক পাকিস্তানি ওই মডিউলের মাথা। গ্রামবাসীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাফির ও ফারহানকে পাকড়াও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
গত কাল পাক রেঞ্জার্সের হামলায় চালায় আহত বিএসএফ জওয়ান গুরনাম সিংহের চিকিৎসা নিয়ে আজ কেন্দ্রের কাছে দরবার শুরু করেছেন তাঁর বোন গুরজিৎ কৌর। প্রয়োজনে বিদেশের হাসপাতালে গিয়ে গুরনামের চিকিৎসার করানোর দাবি তুলেছেন তিনি। তবে বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গুরনামের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও, তাঁর চিকিৎসা সঠিক পথেই এগোচ্ছে।
কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখনও অশান্ত। শ্রীনগরে আজ পুলিশকে লক্ষ করে ঢিল ছুড়েছে বিক্ষোভকারীরা। কট্টরপন্থী হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর ছেলে নইম। এ দিন বিকেলে টেলিফোনে গিলানির কাশ্মীরবাসীর উদ্দেশে বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল। গিলানির পরিবার দাবি করেছে, তা পণ্ড করে দিতেই নইমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাড়ির সামনে জ্যামার বসানোয় বক্তৃতাও দিতে পারেননি গিলানি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy