Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সুরাতে গিয়ে পুরনো খোঁচা মনমোহনের

কেমব্রিজ ফেরত অর্থনীতিবিদ আজ সুরাতের এক জনসভায় বলেন, ‘‘গত বছর ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদী। তার পর যা যা ঘটল, তা ভীষণই দুঃখের এবং তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব বর্তায় ওদের ঘাড়ে।’’

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৭
Share: Save:

দলের অবস্থা হয়তো তেমন ভাল নয়, উত্তরপ্রদেশের পুরভোটে হয়তো মুখ থুবড়েই পড়েছে তারা, তবু একেবারে হারিয়ে যায়নি কংগ্রেস— সে কথা বোঝাতে আজ ফের সরব হলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। খোঁচা দিলেন মোদী সরকারের নোটবন্দি নিয়ে। জিএসটি নিয়েও বলতে ছাড়েননি তিনি।

কেমব্রিজ ফেরত অর্থনীতিবিদ আজ সুরাতের এক জনসভায় বলেন, ‘‘গত বছর ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদী। তার পর যা যা ঘটল, তা ভীষণই দুঃখের এবং তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব বর্তায় ওদের ঘাড়ে।’’ মনমোহন কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘অন্তত ১০০ মানুষ নোট বদলানোর লাইনে দাঁড়িয়ে মারা গিয়েছিলেন।’’

তবে নোটবন্দি নিয়ে মনমোহনের খোঁচা এই প্রথম নয়। সম্প্রতি একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘অনেক হয়েছে। এ বার অন্তত মোদীর স্বীকার করা উচিত, কী ভজঘট-ই না উনি পাকিয়েছেন।’’

জিএসটি নিয়েও মনমোহন বিঁধেছেন মোদী-সরকারকে। তাঁর বক্তব্য, ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (অর্থাৎ জুলাই-অগস্ট-সেপ্টেম্বর) বৃদ্ধির হার বেড়ে ৬.৩ শতাংশ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনই এ নিয়ে খুশি হওয়ার মতো সময় আসেনি। ফের যে পতন ঘটবে না, সেটাই বা কে বলতে পারে। গত পাঁচটি ত্রৈমাসিকে তেমনটাই দেখা গিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘মোদী সরকার যা-ই করুক না কেন, ইউপিএ জমানার দশ বছরের গড় বৃদ্ধির হারকে টেক্কা দেওয়া ওদের পক্ষে সম্ভব নয়।’’

মনমোহন মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘অর্থনীতিবিদদের অনেকেই এ বিষয়ে একমত যে, অংসগঠিত ক্ষেত্রে (যা কি না দেশের অর্থনীতির ৩০ শতাংশ) জিএসটি বা নোট বাতিলের প্রভাব এখনও সঠিক ভাবে বুঝে উঠতে পারেনি কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতর।’’ তিনি জানান, অর্থনীতিবিদদের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হলে বৃদ্ধির হার ৬.৭ শতাংশেও উঠতে পারে। কিন্তু তা হলেও মোদীর চার বছরের গড় আর্থিক বৃদ্ধি ৭.১ শতাংশ হবে। তাতেও তো ইউপিএ জমানাকে ছুঁতে পারবেন না মোদী। ‘‘ইউপিএ-এর দশ বছরের গড় বৃদ্ধিকে ছুঁতে হলে অর্থনীতিকে এই সরকারের পঞ্চম আর্থিক বর্ষে ১০.৬% হারে এগোতে হবে। তা সম্ভব হলে খুশিই হব। তবে সত্যি বলতে কি, সেটা ঘটবে বলে মনে হয় না,’’ বলেন মনমোহন।

বিজেপি অবশ্য তড়িঘড়ি বলেছে সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকে খুশি করতেই নাকি মনমোহন এ সব কথা বলছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, ‘‘নেহরু ও গাঁধী পরিবারকে আনুগত্য দেখাতে গিয়ে উনি ভুল কথা বলছেন।’’ প্রধান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারই জিডিপি-র তথ্যপ্রকাশ করা হয়েছে। আর তাতেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সব সংশয়ের উত্তর রয়েছে।

সামনেই মোদীর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। ঠিক তার আগে মনমোহনের খোঁচায় উত্তপ্ত গুজরাত-রাজনীতি। যদিও গত কালই উত্তরপ্রদেশে বিজয় উৎসব সেরেছে বিজেপি। যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে পুরভোটে গেরুয়া ধ্বজা উড়িয়েছে তারা। দলে তার রেশ রয়েছে এখনও। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এক রকম সতর্কই করে দিয়েছেন, মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতে আরও ভয়াবহ ভাবে মুখ পোড়াতে হবে কংগ্রেসকে। গত কালই তিনি কটাক্ষ করেছিলেন, ‘‘কংগ্রেস এমন ভাবে হারল, যে ‘রাহুল বাবা’র অমেঠীতেও বিজেপি জিতে গেল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE