নরেন্দ্র মোদী।
ভোটে জিতেই হাত গুটিয়ে বসে থাকতে নারাজ নরেন্দ্র মোদী। উত্তর-পূর্বে একের পর এক রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পর মোদী সরকার তথা বিজেপি সেখানে পাকাপাকি শিকড় গাড়তে চাইছে।
সেই লক্ষ্যেই এক দিকে মোদী সরকার উত্তর-পূর্বের উন্নয়নে বিপুল টাকা ঢালার পরিকল্পনা নিচ্ছে। পাশাপাশি, আরএসএস উত্তর-পূর্বের আদি জনগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করতে চাইছে।
সরকারি সূত্রের খবর, নরেন্দ্র মোদী উত্তর-পূর্বে ‘উন্নয়নের কর্মযজ্ঞের’ নকশা তৈরির দায়িত্ব দিয়েছেন নীতি আয়োগকে। আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমার ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহের যৌথ নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে পৃথক ‘নীতি ফোরাম ফর নর্থ-ইস্ট’। আর্থিক উন্নয়ন ও সকলের কাছে তার সুফল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোথায় বাধা আসছে, তা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই ফোরামকে।
মোদী আজ কর্নাটকের এক যুব-সম্মেলনে দেওয়া ভিডিও বক্তৃতায় যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘আমাদের সরকার এ ভাবে কাজ করতে চায়, যাতে দেশের কোনও অংশ বা গোষ্ঠী নিজেদের বিচ্ছিন্ন না ভাবে। উত্তর-পূর্বের ভাই-বোনেরা ঘৃণার রাজনীতি প্রত্যাখান করেছেন। ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। দেশের ঐক্যের জন্য এই ভাবনার কদর করা জরুরি।’’
উত্তর-পূর্বের দিকে আলাদা নজর দিতেই, আঞ্চলিক দলগুলিকে কাছে টানতে বিজেপি হিমন্তবিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে নেডা (নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স) গঠন করেছিল। এ বার মানুষের বিচ্ছিন্নতা বোধকে কাজে লাগিয়ে তাদের কাছে টানতে আরএসএস পুরো দমে জনসংযোগ কর্মসূচিতে নামছে। সঙ্ঘ নেতাদের বক্তব্য, আরএসএস-এর পুরনো সংগঠন রয়েছে। অধিকাংশ রাজ্যে বিজেপি সরকার তৈরির পর এ বার প্রচারকরা আরও সক্রিয় হবেন।
আরও পড়ুন: মেঘালয়ে গভীর রাতে রাজভবনে কংগ্রেস, জোট বাড়াচ্ছে বিজেপি
মোদীর এক মন্ত্রীর যুক্তি, ‘‘ত্রিপুরার ভোটে বিজেপির জয় থেকেই স্পষ্ট, মানুষ উন্নয়ন চাইছে। দীর্ঘদিন ধরে অনগ্রসর রাজ্যের মানুষের মনে উচ্চাকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আশা-আকাঙ্ক্ষা সব থেকে বেশি। তাঁরাই এখন বিজেপির উপরে আস্থা রাখছেন।’’ ওই মন্ত্রীর দাবি, ত্রিপুরাতেও তরুণ প্রজন্মের ভোটের সিংহ ভাগ বিজেপি পেয়েছে। আগরতলায় রেললাইন পৌঁছে যাওয়ার ফলে উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা আরও জোরালো হয়েছে।
মেঘালয়ে কংগ্রেস সরকার গড়তে ব্যর্থ হলে, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির মধ্যে মিজোরামই রাহুলের দলের হাতে থাকবে। এ বছরই সেই রাজ্যে ভোট। মিজোরামের মতো উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে পাখির চোখ করেই বাজেটে ‘ব্যাম্বু মিশন’-এ অর্থ বরাদ্দ করেছেন মোদী। অরণ্য আইনে বাঁশকে গাছের বদলে ঘাসের তকমা দেওয়া হয়েছে, যাতে বাঁশ কাটা বা পরিবহণে আইনি বাধা না থাকে।
ইতিমধ্যেই ৫,৩০০ কোটি টাকার ‘উত্তর-পূর্ব বিশেষ পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প’ তৈরি হয়েছে। উত্তর-পূর্বে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কেন্দ্র এত দিন ৯০ শতাংশ অনুদান দিত। এখন ১০০ শতাংশই দিচ্ছে। উত্তর-পূর্বে আর্থিক করিডর গড়ে তোলার জন্য ৩,২৪৬ কিলোমিটার সড়ক উন্নত করা হবে। দেশের ১০০টি অনগ্রসর জেলার মধ্যেই উত্তর-পূর্বের ১৪টি জেলাকে চিহ্নিত করে কাজ শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy