রাহুল গাঁধী।—ফাইল চিত্র
এক দিকে বিরোধী শিবির থেকে আসা আক্রমণ, অন্য দিকে অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের উপর হামলা না আটকাতে পারায় কাশ্মীরে জোট শরিক পিডিপির সঙ্গে চরম টানাপড়েন— এই মুহূর্তে এই জোড়া অস্বস্তিতে আটকে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
অমরনাথের তীর্থযাত্রীদের উপর হামলা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে আজ কঠোর ভাষায় আক্রমণ করেছেন রাহুল গাঁধী। টুইটারে তাঁর অভিযোগ, ‘‘মোদীর নীতিই কাশ্মীরে জঙ্গিদের জমি তৈরির সুযোগ করে দিয়েছে।’’ এই হামলাকে ভারতের উপর বিরাট আঘাত হিসেবে তুলে ধরে কংগ্রেস সহ-সভাপতির দাবি, ‘‘পিডিপির সঙ্গে জোট গড়ে মোদী রাজনীতিতে তাৎক্ষণিক লাভ তোলার চেষ্টা করছেন। দেশকে যার মাশুল দিতে হচ্ছে বিরাট ভাবে।’’ টুইটারে রাহুলের তোপ, ‘‘মোদীর ব্যক্তিগত লাভ = দেশের নিরাপত্তার ক্ষতি+ সাধারণ মানুষের রক্তপাত।’’ অমরনাথ হামলার পরেই মোদীকে নিশানা করে রাহুল বলেছিলেন, গোটা ঘটনায় নিরাপত্তার বিরাট গাফিলতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উচিত এর দায় স্বীকার করে নেওয়া। বুধবার সেই সমালোচনার সুরকে আরও তীব্র করেছেন রাহুল।
রাহুলের পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপিও। দলের মুখপাত্র মীনাক্ষী লেখির মন্তব্য, ‘‘কাশ্মীর সমস্যার সূত্র খুঁজলে দেখা যাবে, এক জন এ জন্য দায়ী। তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। আর রাহুল গাঁধীর দল তো ১৯৮৪-র দাঙ্গার সঙ্গে যুক্ত। নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে কথা বলার আগে রাহুলের উচিত গাঁধী পরিবারের ইতিহাস জেনে নেওয়া।’’ বিজেপির অভিযোগ নিয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মণু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘অমরনাথ যাত্রীদের উপর হামলা নিয়ে নজর ঘোরাতেই নেহরুকে টেনে আনছে বিজেপি। আসলে নিরাপত্তার যে গাফিলতি সামনে এসেছে, মোদী সরকারের কাছে তার জবাব নেই।’’
বিরোধী শিবির থেকে আসা আক্রমণ ও এই রাজনৈতিক তরজার পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদীর সঙ্কট জোট শরিক পিডিপিকে নিয়েও। হামলার পরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাজ্য সরকারের গাফিলতির প্রসঙ্গ তুলে ধরছিলেন। কিন্তু কাশ্মীর পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখার পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী হংসরাজ আহির আজ মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতি সামলাতে মেহবুবা মুফতি যে ভাবে কাজ করেছেন, তাতে গোটা দেশ অনুপ্রাণিত। এক জন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দায়িত্ব কী ভাবে পালন করতে পারেন, দেশের মানুষ তা উপলব্ধি করেছেন।’’ গত কালই হামলার পিছনে রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক গাফিলতির কথা তুলে ধরেছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। আর আজ মেহবুবাকে মোদীর মন্ত্রীর প্রশংসার পিছনেও রাজনীতির অঙ্ক দেখছেন অনেকে। তাঁদের মতে, কাশ্মীরে নিরাপত্তার সিংহভাগ দায়িত্ব কেন্দ্রের ঘাড়ে। ফলে মেহবুবার দিকে আঙুল তুলেই যে পরিস্থিতি সামলানো যাবে না, সে কথা বুঝছেন মোদীর মন্ত্রীরা। আর কাশ্মীরের উপ-মুখ্যমন্ত্রীই তো বিজেপির। ফলে শরিকের উপর দায় ঠেলে দিয়ে বিশেষ লাভ হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy