জাতীয় স্বাস্থ্য বিমার রূপরেখা কী হবে তা ঠিক করতে রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করল কেন্দ্র। আজ দিল্লিতে এ নিয়ে সমস্ত রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তারা। বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় অনুদান বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করা হয়। আয়ুষ্মান ভারত বা জাতীয় স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পে কেন্দ্রের দেওয়ার কথা ৬০%। বাকি ৪০% অর্থ জোগাবে রাজ্যগুলি। আজ বৈঠকে একাধিক রাজ্যের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় অনুদান বৃদ্ধির দাবিতে সওয়াল করেন।
প্রকল্পটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নীতি আয়োগের আশঙ্কা ছিল— যে সব রাজ্যে আগে থেকেই স্বাস্থ্যবিমা চালু রয়েছে, তারা ওই প্রকল্পে যোগ না-ও দিতে পারে। যেমন পশ্চিমবঙ্গ বা তামিলনাড়ু। তাদের প্রকল্প কেন্দ্রের থেকে ভাল, ওই যুক্তি দেখিয়ে পিছিয়ে আসতে পারে ওই রাজ্যগুলি। দিল্লিতে কেন্দ্রের ডাকা অন্যান্য বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিদের না-আসাটা রেওয়াজে পরিণত হলেও আজ বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। বৈঠকে প্রকল্পটি নিয়ে তাঁরা নেতিবাচক মন্তব্য না-করায় স্বস্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বৈঠকের শেষে তামিলনাড়ু সরকারের এক প্রতিনিধি জানান, এ’টি প্রথম বৈঠক। ভাল-মন্দ বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সরকারের এই বিমা প্রকল্পকে অনেকেই ‘ওবামা কেয়ার’-এর অনুকরণে ‘মোদী কেয়ার’ বলছেন। সম্প্রতি ওমানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেও এই প্রকল্পকটিকে ‘মোদী কেয়ার’ বলে বর্ণনা করেন। সব রাজ্য যাতে ‘মোদী কেয়ার’ গ্রহণ করে সে জন্য যে রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য প্রকল্প চালু রয়েছে, তাদের জন্য মধ্যপন্থার খোঁজ করছে নীতি আয়োগও। এক আয়োগ কর্তা বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবদের বলেছি, রাজ্যের যে প্রকল্প রয়েছে তা মূলত গরিবদের জন্য। কেন্দ্রও যে ১০ কোটি পরিবারকে বিমার আওতায় আনছে, তার মধ্যে ৮ কোটি মানুষ বিপিএল তালিকাভুক্ত। বাকি ২ কোটি মানুষ আর্থ-সামাজিক জাতিগত সুমারিতে বঞ্চিতদের তালিকায় রয়েছেন। অর্থাৎ তাঁরাও গরিব মানুষ।’’ নীতি আয়োগের ওই কর্তার কথায়— উভয়েরই লক্ষ্য গরিব মানুষকে বিমার আওতায় নিয়ে আসা। কেন্দ্র একেবার নীচের শ্রেণির মানুষদের পাশে দাঁড়াক। আর রাজ্য বরং নিজেদের পরিসীমা বাড়িয়ে নিম্ন মধ্যবিত্তদের বিমার আওতায় আনুক। রাজ্য ও কেন্দ্র একযোগে কাজ করলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ বিমার আওতায় আসবেন।
তবে প্রকল্পের কৃতিত্ব নেওয়া নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের বিবাদের আশঙ্কা করছেন নীতি আয়োগের কর্তারা। এক কর্তার পরামর্শ, ‘‘কেন্দ্রের অর্থে যাদের বিমা হবে, তারা ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর আওতায় থাকুক। আর রাজ্যের অর্থের বিনিময়ে যারা স্বাস্থ্য বিমার সুবিধে পাচ্ছেন বা পাবেন, সেই প্রকল্পকে রাজ্য বরং নিজের নামে চালাক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy