২৬/১১-র মুম্বই হামলার পর এই প্রথম মুম্বইয়ে পা রাখল মোশে। ছবি: এএফপি।
সন্ত্রাসের সেই ভয়াবহ রাতের পর কেটে গিয়েছে নয় নয়টি বছর। সে রাতের জঙ্গি হামলায় মা-বাবা দু’জনকে একসঙ্গে হারিয়েছিল শিশুটি। কোনও রকমে রক্ষা পেয়েছিল সে নিজে। তখন তার বয়স মাত্র দুই।
সেই ছোট্ট মোশের বয়স এখন ১১। সে রাতের পর এই প্রথম সে পা রাখল মুম্বইয়ে।
২০০৮ সালে ২৬/১১-র মুম্বই হামলায় মোশের মা-বাবার সঙ্গে নিহত হয়েছিলেন মোট ১৬৪জন। নরিম্যান হাউসে হামলা হলেও ন্যানি সান্দ্রা স্যামুয়েলের তৎপরতায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল ছোট্ট মোশে। ২৬/১১-র সন্ত্রাসের বলি নিরপরাধ মানুষদের প্রতীক হয়ে ওঠে তার ভয়ার্ত মুখ।
এর পর নিজের দেশ ইজরায়েলে ফিরে যায় সে। উত্তর ইজরায়েলের আফুলাতে দাদু-দিদার সঙ্গেই থাকে এখন। মোশের ইচ্ছে ছিল, ১৩ বছর বয়সে মুম্বইয়ে ফিরে আসবে সে। ইজরায়েলের সামাজিক রীতি, ১৩ বছর বয়সে কিশোরদের বার-মিৎসবা বা উপনয়ন হয়।
কিন্তু, তার বছর দুয়েক আগেই মুম্বইয়ে পা রাখল মোশে। সৌজন্যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণ। গত বছর ইজরায়েল সফরে গিয়ে মোশেকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোদী। সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করতেই এ দেশে আসা মোশের।
এ দিন সকালে মুম্বইয়ে এসে পৌঁছয় মোশে। তাজ হেটেলের সামনে দিয়ে তার ট্যাক্সি এগোচ্ছে যখন, ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে সে বলে ওঠে, “বহুত খুশি।’’
আরও পড়ুন
দিদি ওয়েস্ট বেঙ্গলকে বেস্ট বেঙ্গল বানাচ্ছেন: অম্বানী
নরিম্যান হাউসেও যাবে মোশে। ন’বছর আগে এখানেই ইজরায়েলের কূটনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন তার মা-বাবা রিভকা এবং গাব্রিয়েল হোলৎসবার্গ। মোশের আসার খবর পেয়ে খানিকটা স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়লেন নরিম্যান হাউসের ডিরেক্টর ইজরায়েল কোজলভস্কি। তিনি বলেন, “মোশের সঙ্গে দেখা হবে, এটা ভেবেই খুবই উত্তেজিত আমরা। এখন সে আর বাচ্চা নয়। তবে আমাদের কাছে মোশে তো সব সময় বাচ্চাই থেকে যাবে।” সেই রাতের আতঙ্কের কথা মনে করে তাঁর মন্তব্য, “মোশের কাছে নরিম্যান হাউসের এই সফরটা বেশ আবেগ জড়ানো। এবং একই সঙ্গে অত্যন্ত সংবেদনশীল।”
আরও পড়ুন
আইবি দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে, বিস্ফোরক তোগাড়িয়া
আগামী বৃহস্পতিবার এই নরিম্যান হাউসেই একটি স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন করবেন এ দেশে সফররত ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু। মোশের মা-বাবা ছাড়াও ২৬/১১-র নিহতদের স্মরণে তৈরি হয়েছে স্মৃতিসৌধটি। রাবাই কোজলভস্কি জানিয়েছেন, ওই বিল্ডিংয়ের উপরের দুই তলা এবং বারান্দাটা মুম্বই হামলায় নিহতদের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। তার মধ্যেই একটি বিশেষ জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে মোশের মা-বাবার স্মরণে। মা-বাবাকে ‘দেখতে’ সেখানেই যাবে মোশে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy