Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ষোলো বছর পরে দেখা মা-ছেলের

ষোলো বছর আগে ধেমাজি থেকে হারিয়ে যাওয়া মাকে দেহরাদূনে ফিরে পেলেন ছেলে।

পুনর্মিলন: ছেলের সঙ্গে সুভদ্রাদেবী। বুধবার দেহরাদূনে। নিজস্ব চিত্র

পুনর্মিলন: ছেলের সঙ্গে সুভদ্রাদেবী। বুধবার দেহরাদূনে। নিজস্ব চিত্র

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০৪:২৮
Share: Save:

ষোলো বছর আগে ধেমাজি থেকে হারিয়ে যাওয়া মাকে দেহরাদূনে ফিরে পেলেন ছেলে।

২০০১ সাল। ধেমাজির সুভদ্রা পাতি মানসিক ভারসাম্য হারানোয় পরিবারের লোকেরা তাঁকে তেজপুরের মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু ক’দিন পরে ওই এলাকায় ভয়াবহ বন্যা হয়। তখনই হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যান সুভদ্রাদেবী। বহু চেষ্টাতেও খোঁজ মেলেনি তাঁর। তাঁকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেয় পরিবার। মৃত বলে ভোটার তালিকা থেকেও সুভদ্রাদেবীর নাম বাদ পড়ে।

পরের দৃশ্যপট উত্তরাখণ্ডের তেহরি। ২০১৫ সালে হড়পা বানের পরে উদ্ধার হওয়া মানুষদের মধ্যে বছর পঁয়তাল্লিশের এক মহিলাকে দেখতে পেয়ে পুলিশ তাঁকে দেহরাদূন নারী নিকেতনে পাঠায়। অসুস্থ, রুগ্ন ওই মহিলা নিজের নাম জানিয়েছিলেন সুভদ্রা। কিন্তু ঠিক মতো পরিচয় বা ঠিকানা বলতে পারেননি। তাঁর ভাষাও কেউ বুঝতে পারছিলেন না। তখন থেকেই নারী নিকেতনই ছিল তাঁর ঠিকানা। চলছিল চিকিৎসাও।

ক্রমে সুস্থ হয়ে ওঠেন সুভদ্রাদেবী। উত্তরাখণ্ডের বনকর্তা তথা বর্তমানে সমাজকল্যাণ দফতরের অতিরিক্ত সচিব মনোজ চন্দ্রন জানান, এক অসমীয়াভাষীর সাহায্যে কথা বলে জানা যায়, সুভদ্রাদেবীর বাড়ি অসমের ধেমাজি জেলায়। কী ভাবে অসম থেকে এত দূরে চলে এসেছিলেন তিনি, তার স্পষ্ট কোনও জবাব অবশ্য মেলেনি।

আরও পড়ুন: সাত কোটির ওষুধ! অসহায় বাবা-মায়েরা

গত ৬ মার্চ নারী নিকেতনে পৌঁছন দুর্লভরা। মনোজবাবু জানান, সকাল থেকে আবাসের গেটের দিকে তাকিয়ে বসেছিলেন সুভদ্রাদেবী। এত বছরের ব্যবধান, মানসিক রোগের ধাক্কার পরেও ছেলেকে ঠিক চিনতে পারেন মা। ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন দুর্লভকে।

মনোজবাবু জানান, কাল বিমানে গুয়াহাটি পৌঁছবেন সুভদ্রাদেবী। তাঁদের বিমানভাড়ার খরচও বহন করছে উত্তরাখণ্ড সরকারই। আজ তাঁরা দিল্লি রওনা হওয়ার আগে রাজ্যের সমাজকল্যাণ সচিব ভূপেন্দ্র কৌর নিজে সুভদ্রাদেবীকে বিদায় জানাতে এসেছিলেন। তিনি উপহারও দিয়েছেন কিছু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mother Son
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE