Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মুম্বই-মস্কো করিডর চালু জানুয়ারিতেই

সতেরো বছরের চেষ্টার পরে অবশেষে চালু হতে চলেছে মুম্বই থেকে মস্কো পণ্যপরিবাহী মাল্টিমোডাল করিডর। যার পোশাকি নাম ‘ইন্টারন্যাশনাল নর্থ সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডর’। ১৪ জানুয়ারি এই পথে মুম্বই থেকে প্রথম বার পণ্য রওনা হবে রাশিয়ার উদ্দেশে।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫২
Share: Save:

সতেরো বছরের চেষ্টার পরে অবশেষে চালু হতে চলেছে মুম্বই থেকে মস্কো পণ্যপরিবাহী মাল্টিমোডাল করিডর। যার পোশাকি নাম ‘ইন্টারন্যাশনাল নর্থ সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডর’। ১৪ জানুয়ারি এই পথে মুম্বই থেকে প্রথম বার পণ্য রওনা হবে রাশিয়ার উদ্দেশে। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, এর ফলে পাকিস্তানকে এড়িয়ে ইউরেশিয়া তথা মধ্য এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং কূটনৈতিক যোগাযোগ অনেকটাই বাড়িয়ে নিতে পারবে ভারত। রাশিয়ায় পণ্য পাঠানোর জন্য নির্ধারিত সময় এবং খরচও অনেক কমবে। পাশাপাশি মধ্য এশিয়ায় চিনের প্রভাবকে মোকাবিলা করাও সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

কী ভাবে পাকিস্তানকে এড়িয়ে সম্ভব হবে মধ্য এশিয়ায় ঢোকা?

সূত্রের দাবি, এই বিষয়টিকে সম্ভব করার জন্য লেগে গিয়েছে এতগুলি বছর এবং বহু দেশের সমন্বয়। প্রাথমিক ভাবে রাশিয়া, ইরান এবং ভারত, এই তিনটি দেশ মিলে এই পরিবহণ করিডরের নীল নকশা তৈরি করেছিল। এরপর আরও এগারোটি দেশকেও সঙ্গে নেওয়া হয়, যাদের মধ্যে রয়েছে আর্মেনিয়া, বেলারুস, আজারবাইজান, কাজাখস্তান। মুম্বই থেকে আরব সাগর হয়ে জলপথে পণ্য পৌঁছবে ইরানের পারস্য উপসাগরীয় বন্দর আব্বাসে। বন্দর আব্বাস থেকে ইরানের মূল ভূখণ্ডে সড়কপথে করিডরটি যাবে সে দেশেরই বন্দর ই আব্বাস-এ। তারপর কাস্পিয়ান সাগর দিয়ে জলপথে ভলগার ধারে আস্ত্রাখানে। আস্ত্রাখান থেকে রেলপথ এবং সড়কপথে মস্কো হয়ে সেন্টপিটার্সবার্গ।

এই মুহূর্তে ভারত থেকে রাশিয়ায় পণ্য পৌঁছতে সময় লাগে ৪০ দিনেরও বেশি। নতুন করিডরটি চালু হয়ে গেলে এই সময় কমে দাঁড়াবে ২৫ দিনে। পরিবহণ খরচও প্রায় ৩৫ শতাংশ কমে যাবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। প্রতি বছরে ৩ কোটি টন পণ্য পরিবহণ করা সম্ভব হবে। বিদেশ মন্ত্রক মনে করছে এত দিন মধ্য এশিয়ায় বিনিয়োগের ব্যাপারে মুখ ফিরিয়ে থেকেছে ভারতের বেসরকারি সংস্থাগুলি। কিন্তু এই উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা খুলে যাওয়ার পর ভারতীয় সংস্থাগুলিও উৎসাহিত হবে।

সূত্রের বক্তব্য, বাণিজ্যিক দিকের পাশাপাশি কৌশলগত দিক থেকেও এই করিডরের গুরুত্ব রয়েছে যথেষ্ট। ভারত বরাবরই মধ্য এশিয়াকে নিজেদের বৃহত্তর প্রতিবেশী বলে এসেছে। কিন্তু সে ভাবে সংযোগ গড়ে তুলতে পারেনি। পাকিস্তানের সক্রিয় বিরোধিতায় আফগানিস্তান টপকে মধ্য এশিয়ায় ঢুকতেও পারছিল না দিল্লি। ইতিমধ্যে সেখানে ক্রমশই বেড়ে গিয়েছে চিনের প্রভাব।

আরও একটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সেটা হল ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের মেরামতি। ক্রমশ ইসলামাবাদের দিকে ঝোঁকা মস্কোর সঙ্গে ভারতের পুরনো বন্ধুত্বকে ফেরানো এ বার সহজ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ভারত-রাশিয়া বাণিজ্যিক পথ সুগম হলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও নতুন উৎসাহের সৃষ্টি হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE