Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লাইনচ্যুত মুরি এক্সপ্রেস, মৃত ৩

ফের রেল দুর্ঘটনা। সোমবার রৌরকেলা থেকে জম্মু-তাওয়াইগামী মুরি এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হল উত্তরপ্রদেশে। কৌশাম্বীর কাছে এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিন যাত্রী। আহত অনেকে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথের দিন মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উত্তরপ্রদেশে উল্টে যায় গোরক্ষধাম এক্সপ্রেস। মারা যান কমপক্ষে ২৫ জন। কেন্দ্রে মোদী সরকারের বর্ষপূর্তির দিন ফের দুর্ঘটনার শিকার রেল।

লাইনচ্যুত মুরি এক্সপ্রেসের কামরা। ইলাহাবাদ থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে। সোমবার। ছবি: এএফপি

লাইনচ্যুত মুরি এক্সপ্রেসের কামরা। ইলাহাবাদ থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে। সোমবার। ছবি: এএফপি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৫ ০৩:১৩
Share: Save:

ফের রেল দুর্ঘটনা। সোমবার রৌরকেলা থেকে জম্মু-তাওয়াইগামী মুরি এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হল উত্তরপ্রদেশে। কৌশাম্বীর কাছে এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিন যাত্রী। আহত অনেকে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথের দিন মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উত্তরপ্রদেশে উল্টে যায় গোরক্ষধাম এক্সপ্রেস। মারা যান কমপক্ষে ২৫ জন। কেন্দ্রে মোদী সরকারের বর্ষপূর্তির দিন ফের দুর্ঘটনার শিকার রেল। এবং ঘটনাচক্রে সেই উত্তরপ্রদেশেই।
সোমবার ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে মিত্তল ও বোর্ড সদস্য (ট্র্যাফিক) অজয় শুক্ল। কী ভাবে এই ঘটল তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। রেলওয়ে কমিশনার (সেফটি)-কে দেওয়া হয়েছে সেই দায়িত্ব। তবে যে ভাবে পরপর আটটি কামরা বাইরে বেরিয়ে এসেছে তাতে দুর্ঘটনাস্থল ঠাওর করা কঠিন বলে দাবি রেল মন্ত্রকের। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, গরমে লাইন বেঁকে গিয়েছিল। আর তার ফলেই লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে কামরা। তবে এটাই যদি দুর্ঘটনার কারণ হয়, সে ক্ষেত্রে ওই লাইনের প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ হয়েছিল কি না— সেই প্রশ্ন উঠছে।

রেলেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, লাইন মেরামতির কাজ এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া থাকে। আর গোলমাল বাধে সেখানেই। দেখভালের কাজ বেসরকারি হাতে চলে যাওয়ায় রেলের নিজস্ব নজরদারি একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। আর তাতেই বাড়ছে বিপত্তি। সোমবার দুর্ঘটনায় যে তিন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে তাঁরা হলেন, গোবিন্দ কুমার (৩০), সীতা দেবী (৪৫) ও মোহিনী শেট্টি। অন্তত চার জনের আঘাত গুরুতর। তবে বেসরকারি হিসেবে মৃত ও আহতের সংখ্যাটা আরও বেশি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময়ে ট্রেনের গতিবেগ ছিল ৬৫ থেকে ৭০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। ট্রেনটি খুব জোরে না যাওয়ার ফলে আরও বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে বলে মনে করছেন রেলকর্তারা। দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র চিকিৎসক ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এনডিআরএফ)-কে তলব করা হয়।

ইলাহাবাদের কাছে এই দুর্ঘটনার ফলে সোমবার পূর্ব ও পশ্চিম-ভারতমুখী প্রায় ৮০টি ট্রেন অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব ভারতগামী ট্রেনগুলির জন্য মূলত দু’টি বিকল্প পথ ব্যবহার করা হচ্ছে— কানপুর-লখনউ-বারাণসী হয়ে মোগলসরাই ও কানপুর-লখনউ-ইলাহাবাদ হয়ে মোগলসরাই। রেল সূত্রে খবর, যে ট্রেনগুলির যাত্রাপথ পরিবর্তিত হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে— শিয়ালদহ ও হাওড়া রাজধানী, পটনা রাজধানী, ভুবনেশ্বর রাজধানী, পূর্বা এক্সপ্রেস, কালকা মেলের মতো বহু দূরপাল্পার ট্রেন। ঘুরপথে যাওয়ার কারণে মঙ্গলবার গন্তব্যে পৌঁছতে তাদের কিছুটা দেরি হবে।

সোমবার কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক বছর পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষে গোটা দেশে শুরু হয়েছে ‘রেল যাত্রা উপভোক্তা পক্ষ’। উদ্দেশ্য একটাই, গত এক বছরে রেলের উন্নয়নের ছবিটা সকলের সামনে তুলে ধরা। কিন্তু প্রচার শুরুর দিনেই দুর্ঘটনা ঘটায় খানিক বিপাকে রেল মন্ত্রক। এমনিতেই পরিষেবা সংক্রান্ত যাত্রীদের নানা প্রশ্ন নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন কর্তারা। সোমবারের পর সেই অস্বস্তি আরও বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE