Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

নেপথ্যে কি স্বজনপোষণ, রাজধানীতে ভাড়া বিতর্ক

আপাতত এই প্রশ্নেই তোলপাড় রেলের অন্দরমহল। দেশের সব প্রান্তের রাজধানীর যাত্রীরাও রেল বোর্ডের এই সিদ্ধান্তে হতবাক!   

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪৯
Share: Save:

রেলমন্ত্রীর নিজস্ব এলাকা বলেই কি নয়াদিল্লি-মুম্বই নতুন রাজধানী এক্সপ্রেসে ফ্লেক্সি ফেয়ার তুলে দেওয়া হলো? যার জেরে আসলে কম ভাড়া দিতে হবে এই ট্রেনের যাত্রীদের?

আপাতত এই প্রশ্নেই তোলপাড় রেলের অন্দরমহল। দেশের সব প্রান্তের রাজধানীর যাত্রীরাও রেল বোর্ডের এই সিদ্ধান্তে হতবাক!

নয়াদিল্লি-মুম্বই রুটে দু’টি রাজধানী ট্রেন ছিল। সোমবার থেকে চালু হয়েছে নয়াদিল্লি-মুম্বই স্পেশ্যাল রাজধানী এক্সপ্রেস চালু হয়েছে। অন্যান্য রাজধানীর থেকে এই ট্রেনের ভাড়া খাতায়কলমে একটু বেশি হলেও এই রাজধানীতে ফ্লেক্সি ফেয়ার নেই। ফলে সাধারণত রাজধানীর যা ভাড়া থাকে, তার থেকে এই ট্রেনের ভাড়া অনেকটাই কম।

কতটা কম ভাড়া পড়বে এই ট্রেনে? রেল সূত্রের খবর, সর্বাধিক ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’-এর থেকে স্পেশ্যাল রাজধানীর ভাড়া প্রায় ১৯% কম। এই রাজধানীতে বাতানুকূল তৃতীয় শ্রেণির সর্বাধিক ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ ভাড়ায় ছাড় পাওয়া যাবে ৫০০-৬০০ টাকা। দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৭০০-৮০০ টাকা। ট্রেনটি চলবে সপ্তাহে তিন দিন।

সাধারণ রাজধানীর চেয়ে দু’ঘণ্টা কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছবে। যাত্রাপথের সময় কমানোর জন্য ট্রেনটিতে লাগানো হচ্ছে দু’টি ইঞ্জিন। এই ট্রেনে একটি বাতানুকূল প্রথম শ্রেণি, দু’টি বাতানুকূল দ্বিতীয় শ্রেণি এবং ১২টি বাতানুকূল তৃতীয় শ্রেণির কামরা থাকছে।

শুধু মাত্র এই রাজধানীর ক্ষেত্রে ফ্লেক্সি ফেয়ার অনুযায়ী ভাড়া না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যাত্রীদের দাবি, রাজধানী-সহ সব প্রিমিয়াম ট্রেন থেকেই ফ্লেক্সি ফেয়ার তুলে দেওয়া হোক। যাত্রীদের ওই দাবির যথেষ্ট যৌক্তিকতা আছে বলে মনে করছেন রেল কর্তাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘বিশেষ একটি রাজধানীতে এইভাবে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।’’ রেল কর্তাদের একাংশ মনে করেন, রেলমন্ত্রী পীষূষ গয়াল মুম্বইয়ের বাসিন্দা। তাই রাজনৈতিক কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে রেল মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, রাজধানী ও অন্যান্য ট্রেন থেকেও ফ্লেক্সি ফেয়ার তুলে দেওয়ার ভাবনা চলছে।

প্রায় এক বছর ধরে রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্ত-সহ বিভিন্ন প্রিমিয়াম ট্রেনে বিমান ভাড়ার মতো ফ্লেক্সি ফেয়ার চালু হয়েছে। তাতে ট্রেন ছাড়ার দিন যত এগোবে ততই বাড়বে ভাড়া। এই নিয়মে ভাড়া বেড়ে অনেক সময়ে বিমান ভাড়াকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ প্রায় প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ের অন্তত চার-পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছচ্ছে দেশের বেশির ভাগ রাজধানী। তা হলে ফ্লেক্সি ফেয়ার দিয়ে লাভ কী— সেই প্রশ্ন উঠেছে।

রেল সূত্রের খবর, ফ্লেক্সি ফেয়ারের সিদ্ধান্তের জেরে গত এক বছরে রাজধানী, দুরন্ত, শতাব্দীর মতো ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা কমেছে। ওই সব যাত্রীর অনেকেই এখন বিমানে যাতায়াত করছেন। রেল কর্তাদের একাংশ মনে করেন, এই ‘অবাস্তব’ সিদ্ধান্তে আখেরে লাভ হচ্ছে বিমান সংস্থাগুলোর। তবু টনক নড়ছে না রেল কর্তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE