Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
National News

আপাতত জল মেপেই চলতে চান নীতীশ কুমার

জেডিইউ নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, পরিস্থিতি বুঝেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নীতীশ। রাজ্যের স্বার্থে তিনি যে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনাতে প্রস্তুত তা মোদীর সঙ্গে বৈঠক করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আবার সনিয়া গাঁধীর ডাকা বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন মতের মিল হলে বিরোধী জোটের রাষ্ট্রপতি প্রার্থীকে সমর্থন করতে আপত্তি নেই নীতীশের।

পরিস্থিতি বুঝেই পদক্ষেপ করছেন নীতীশ। —ফাইল চিত্র।

পরিস্থিতি বুঝেই পদক্ষেপ করছেন নীতীশ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও পটনা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ২১:৫৮
Share: Save:

আপাতত মেপেই পা ফেলার পক্ষে নীতীশ কুমার! এক দিকে সনিয়া গাঁধী ও অন্য দিকে নরেন্দ্র মোদী— দু’নৌকায় পা রেখেই আপাতত চলার পক্ষপাতী তিনি।

শুক্রবার সনিয়া গাঁধীর ডাকা ১৭টি দলের বৈঠকে উল্লেখজনক অনুপস্থিতি ছিল নীতীশ কুমারের। তিনি নিজে না আসলেও, শরদ যাদবকে প্রতিনিধি হিসাবে দলীয় বৈঠকে পাঠান। যা নিয়ে বিরোধী শিবিরের মধ্যে প্রশ্ন তো উঠেছিল, এরই মধ্যে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর মধ্যাহ্নভোজনে উপস্থিত হওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই নীতীশের অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায় রাজধানীর রাজনৈতিক মহলে। যা চলে এ দিনও। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি ব্যাখ্যায় এগিয়ে আসেন খোদ নীতীশ। বলেন, ‘‘রাজ্যের স্বার্থে, গঙ্গায় বন্যা রুখতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে দিল্লি এসেছি আমি। এ ছাড়া মরিশাসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করাটাও আসার উদ্দেশ্য ছিল।’’

জেডিইউ নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, পরিস্থিতি বুঝেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নীতীশ। রাজ্যের স্বার্থে তিনি যে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনাতে প্রস্তুত তা মোদীর সঙ্গে বৈঠক করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আবার সনিয়া গাঁধীর ডাকা বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন মতের মিল হলে বিরোধী জোটের রাষ্ট্রপতি প্রার্থীকে সমর্থন করতে আপত্তি নেই নীতীশের। এমনকী, অগস্ট মাসে লালু প্রসাদের ডাকা পটনার জনসভাতেও নীতীশ থাকবেন বলে কথা দিয়েছেন। ফলে বিরোধী শিবিরের পাশে যে তিনি রয়েছেন তা এই পদক্ষেপগুলি থেকেই স্পষ্ট। জেডিইউ-এর এক নেতার কথায়, ‘‘এটা ভারসাম্যের রাজনীতি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি কোন পক্ষে থাকবেন সেই তাস এখনই ফেলতে চাইছেন না ওই কূর্মি নেতা। তাই দু’পক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চতে চাইছেন তিনি।’’

আরও পড়ুন

বিজেপির ‘দলিত’ অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিলেন রাহুল

মোদী-নীতীশ নৈকট্য যে বাড়ছে তা অজানা নয় বিহারের শরিক দল আরজেডি-র। দুর্নীতি-সহ একাধিক কারণে লালুপ্রসাদের দলের সঙ্গে সরকার চালাতে যে অসুবিধা হচ্ছে সেই ইঙ্গিত ঘনিষ্ঠ মহলে দিয়ে রেখেছেন নীতীশ। যার সুযোগ নিয়ে ঘরোয়া ভাবে প্রাক্তন শরিক নীতীশের কাছে ইতিমধ্যেই সরকার গড়ার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে বিজেপি। পিছিয়ে নেই নীতীশও। নোট বাতিল থেকে গুজরাতের ধাঁচে মদ বিক্রি বন্ধ করা— একাধিক বার মোদীর প্রশংসায় নীতীশ যে ভাবে পঞ্চমুখ হয়েছেন তাতে দুই নেতার আগেকার তিক্ততা যে অনেকটাই কমে এসেছে তা স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে সনিয়ার আমন্ত্রণে না আসার পিছনে বিজেপি এবং নীতীশের পরিকল্পিত রাজনীতি রয়েছে বলে সরব হয়েছে সরকারের অন্যতম শরিক আরজেডি। দলের সহ-সভাপতি রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ এ দিন বলেন, “নীতীশের ট্র্যাক রেকর্ড দেখলেই বোঝা যাবে আমাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই সব সময়ে তিনি দাঁড়িয়েছেন। এতে নতুন কিছু নেই!” আর দলের নেতা তথা উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব দিল্লি যাওয়া নীতীশের ‘নিজস্ব বিষয়’ বলে এড়িয়ে গিয়েছেন।

আরজেডি-র প্রশ্ন, কেন এক দিন আগে দিল্লি গিয়ে সনিয়ার বৈঠকে থাকলেন না নীতীশ। আরজেডি নেতাদের মতে, মোদীকে ইতিবাচক বার্তা দিতেই সনিয়ার আমন্ত্রণ এড়িয়ে গিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। সেই যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা নীতীশের বক্তব্য, ‘‘আমি তো রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে ২০ এপ্রিলই সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তখনই তো আলোচনা হয়ে গিয়েছিল। তা ছাড়া, গত কালের বৈঠকে তো দলের প্রতিনিধি ছিল।’’ এ দিনের এই বৈঠকের পর মোদীর সঙ্গে নতুন বোঝাপড়ার জল্পনাও উড়িয়ে নীতীশ বলেন, ‘‘গঙ্গার পলি জমার সমস্যা ভয়াবহ মাত্রা নিচ্ছে। ফি বছর বন্যা হচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে এসেছিলাম।

আর বিরোধী ঐক্য?

নীতীশের দাবি, ‘‘একদম অটুট।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE