Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ওয়াঘায় থমকে গেল ঈদের সৌজন্য

সীমান্তে থামেনি গুলির শব্দ। কিন্তু ঈদের সৌজন্য নিয়ে আজ ভিন্ন চিত্র দেখল ভারত-পাক সীমান্তের তিন অংশ। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ গোলমালে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের গদি টলমল হওয়ার পর থেকেই সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি ভাঙা শুরু করে পাক বাহিনী। সুর কেটে যায় ভারত-পাক সম্পর্কের। রাষ্ট্রপুঞ্জে কাশ্মীর নিয়ে সাম্প্রতিক বাগ্যুদ্ধের পরে উত্তপ্তই রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আবহ। সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি ভাঙাও থামায়নি পাক বাহিনী।

নিহত গ্রামবাসীদের শেষকৃত্যে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। সোমবার। ছবি: পিটিআই

নিহত গ্রামবাসীদের শেষকৃত্যে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। সোমবার। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
অমৃতসর ও শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২৩
Share: Save:

সীমান্তে থামেনি গুলির শব্দ। কিন্তু ঈদের সৌজন্য নিয়ে আজ ভিন্ন চিত্র দেখল ভারত-পাক সীমান্তের তিন অংশ।

পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ গোলমালে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের গদি টলমল হওয়ার পর থেকেই সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি ভাঙা শুরু করে পাক বাহিনী। সুর কেটে যায় ভারত-পাক সম্পর্কের। রাষ্ট্রপুঞ্জে কাশ্মীর নিয়ে সাম্প্রতিক বাগ্যুদ্ধের পরে উত্তপ্তই রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আবহ। সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি ভাঙাও থামায়নি পাক বাহিনী।

রবিবার রাত দশটা নাগাদ জম্মুর আর্নিয়া এলাকায় হামলা শুরু করে পাকিস্তান রেঞ্জার্স। বিএসএফের ১০টি পোস্ট ছাড়াও আর্নিয়ার বিভিন্ন গ্রাম লক্ষ্য করে মর্টার ছুড়তে শুরু করে তারা। জবাব দেয় বিএসএফও। পুলিশ জানিয়েছে, পাক হামলায় পাঁচ জন গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৩৪। সোমবার ভোর পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে বলে জানিয়েছে বিএসএফ। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর্নিয়ার বহু গ্রাম থেকে নিরাপদ এলাকায় সরতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা।

মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার কথায়, “এই হামলা পাকিস্তানের হতাশার প্রকাশ। পাক নেতারা প্রতি বারই বিদেশে গিয়ে কাশ্মীর নিয়ে হইচইয়ের চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। এ বারও ব্যর্থ হয়ে তাঁরা পাক বাহিনীকে হামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন।” রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় কাশ্মীর প্রসঙ্গ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শরিফ। ওমরের ইঙ্গিত সেই ঘটনার প্রতি বলেই মনে করা হচ্ছে।

শ্রীনগরে ঈদের নমাজের পরেই জম্মুতে যান ওমর। আর্নিয়ায় পাক হানায় নিহতদের শেষকৃত্যের সময়ে হাজির ছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। অনেক বাসিন্দাই জানান, পাক মর্টার হামলায় তাঁদের বাড়িঘর প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তাই এখনই ত্রাণশিবিরের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন ওমর। পাকিস্তানকে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার দাবিও জানান বাসিন্দাদের একাংশ। ইতিমধ্যেই ক্ষয়ক্ষতির হিসেব শুরু করেছে জম্মু-কাশ্মীর সরকারের এক প্রতিনিধি দিল। রাজ্যে সাম্প্রতিক বন্যার সময়ে অবহেলার অভিযোগ উঠেছিল ওমরের বিরুদ্ধে। রাজনীতিকদের মতে, এ বার আর সেই ঝুঁকি নিতে রাজি নন তিনি।

পাকিস্তানের অবশ্য পাল্টা দাবি, ভারতই হামলা চালিয়েছে। তাতে চার পাকিস্তানি নিহত হয়েছেন।

ভারত-পাক সীমান্তের নানা অংশে ঈদ, দীপাবলি, স্বাধীনতা দিবসে মিষ্টি বিনিময় করেন সীমান্তরক্ষীরা। ওই উৎসবে হাজির থাকেন দু’পক্ষের কম্যান্ডাররাও। পঞ্জাবের ওয়াঘায় এ বার সৌজন্য রক্ষা করতে বিশেষ আগ্রহী হয়নি পাকিস্তান। বিএসএফ সূত্রে খবর, মিষ্টি বিনিময়ের জন্য কোনও সময় স্থির করতে অস্বীকার করে পাক বাহিনী। বিএসএফও বিশেষ উদ্যোগী হয়নি। ফলে, সোমবার বন্ধই ছিল ওয়াঘার গেট। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরের চাকন-দা-বাগ ও রাজস্থানের বিকানেরে মিষ্টি বিনিময় হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বক্তব্য, “আমরা ঐতিহ্য রক্ষা করেছি।”

নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদের সম্পর্কে সৌজন্য ফিরবে কি না, তা জানা নেই কোনও পক্ষেরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE