রেলে বিনি পয়সার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করতে চলেছে রেল মন্ত্রক। মূলত এই ইন্টারনেট ব্যবহার করে ‘পর্ন ছবি’ দেখার প্রবণতা বাড়ায় উদ্বিগ্ন রেল মন্ত্রক। আর সে কারণেই মন্ত্রকের তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেট নীতি নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। এর ফলে দেশের প্রায় একশোটি ‘প্রিমিয়াম ট্রেন’—রাজধানী ও শতাব্দী এক্সপ্রেসে বিনা খরচের ইন্টারনেট সুবিধা বন্ধ হতে চলেছে। তবে কোনও কারণে ইন্টারনেট প্রয়োজন হলে প্রয়োজনীয় খরচ দিয়ে তা ব্যবহার করা যাবে। এতে রাজস্ব বৃদ্ধির পাশপাশি ইন্টারনেটের অপব্যবহার বন্ধ হবে বলে মনে করছেন মন্ত্রকের
কর্তারা। একই সঙ্গে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলির ‘ওয়াই-ফাই’ পরিষেবা নিয়েও নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।
কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের সময়ে, ২০১৩ সালে হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসে প্রথম বিনা খরচের ইন্টারনেট পরিষেবা শুরু হয়। পরে অন্যত্রও এই পরিষেবা চালু হতে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি একটি সমীক্ষা-রিপোর্ট সামনে আসায় চোখ কপালে উঠেছে রেলকর্তাদের। রেল বোর্ডের বৈঠকে ট্রেনে বিনা খরচের ইন্টারনেট বন্ধ করার প্রস্তাব এসেছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী সুরেশ প্রভুর সঙ্গে কথা বলছেন কর্তারা। স্বাভাবিক ভাবেই মন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেলে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কেন এমন সিদ্ধান্ত? সম্প্রতি রেলটেল কর্পোরেশন রেল নেটওয়ার্কে ‘ওয়াই-ফাই’ পরিষেবার ব্যবহার নিয়ে একটি সমীক্ষা চালায়। তাতে দেশের ২৩টি রেল স্টেশন ও বিভিন্ন ট্রেনে ইন্টারনেট ব্যবহার খতিয়ে দেখা যায়, পর্ণো দেখতেই উৎসাহী সিংহভাগ যাত্রী। প্রিমিয়াম ট্রেনগুলির ক্ষেত্রেও একই সমস্যা। রেল বোর্ডের এক সদস্যের কথায়, ‘‘স্টেশনে ইন্টারনেটের অপব্যবহার এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ইন্টারনেটের অপব্যবহার শুধু রেলের রাজস্ব ক্ষতি করছে না। ট্রেনে বা প্ল্যাটফর্মে সহযাত্রীদের কাছেও ইন্টারনেটের অপব্যবহার বিরক্তিকর হয়ে উঠছে।’’ এর প্রেক্ষিতেই আপাতত প্রিমিয়াম ট্রেনে বিনা খরচের ওয়াই-ফাই বন্ধ করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। পটনায় দেখা গিয়েছে, প্ল্যাটফর্ম টিকিট কেটে মানুষ স্টেশনে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পর্ণো দেখছে।
আগামী তিন বছরে দেশের চারশো রেল স্টেশনে যাত্রীদের ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে বিনা খরচে ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। গত বছর সেপ্টেম্বরে গুগ্লের সঙ্গে চুক্তির পরে মুম্বই সেন্ট্রাল স্টেশনে প্রথম এই পরিষেবা শুরু হয়। পরে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে পরিষেবা চালু হয়েছে। কিন্তু অপব্যবহার রুখতে শুল্ক বসানো ছাড়া আর কোনও পথ নেই বলে মন্ত্রকের সূত্রটি জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy