ব্যাঙ্ক থেকে টাকা না পাওয়ায় চিকিৎসা হল না এক বৃদ্ধার। ব্যাঙ্কের সামনের রাস্তাতেই মৃত্যু হল তাঁর। বিহারের পূর্ণিয়ার রুপৌলি থানা এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে আজ এই ঘটনা ঘটেছে। মৃতের নাম নুরজাহান বিবি (৬৫)। তাঁর বাড়ি স্থানীয় সানথাল গ্রামে। দেশে সাম্প্রতিক নগদ সঙ্কটের প্রথম বলি হিসেবেই এই ঘটনাকে চিহ্নিত করেছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি।
ঘটনার পরে বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা রুপৌলি-কুরসেলা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ গিয়ে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে অবরোধ তোলায়। সমস্ত ঘটনা জানিয়ে পরিবারের লোকেরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।
মৃতার পরিবারের বক্তব্য, গত তিন দিন ধরে বৃদ্ধার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা তুলতে ব্যাঙ্কের চক্কর কাটছেন বৃদ্ধার ছেলে। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নগদ সঙ্কটের কথা বলে টাকা দিতে অস্বীকার করেন। অভিযোগ, তার জেরে কার্যত বিনা চিকিৎসায় অসুস্থ নুরজাহান বিবির মৃত্যু হল। মৃতার পুত্রবধূ রসিদা খাতুন বলেন, “ওই ব্যাঙ্কে আমার স্বামী লাল মহম্মদের খাতায় ১৭ হাজার টাকা রয়েছে। তিন দিন ধরে ওই টাকা তোলার জন্য আমার স্বামী চেষ্টা করছেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক টাকা দিচ্ছে না।’’ আজও পূর্ণিয়ায় হাসপাতালে যাওয়ার পথে ব্যাঙ্কের সামনে অটো নিয়ে তাঁরা দাঁড়ান। সেখানে অটোতে শাশুড়িকে নিয়ে বসেছিলেন রসিদা। লাল মহম্মদ যান ব্যাঙ্কে। অটোতেই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। রুপৌলি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ব্যাঙ্কের সহকারী ম্যানেজার সুধাংশু শেখর নগদের অভাবের কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের ব্যাঙ্কে লাল মহম্মদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সুধাংশু বলেন, “ব্যাঙ্কে নগদ টাকার সমস্যা রয়েছে। সে কারণেই হয়ত টাকা দেওয়া হয়নি। তবে এটা এমার্জেন্সি কেস, তা আমাদের জানা ছিল না। জানলে টাকার অসুবিধা হত না।”
স্থানীয় কৃষক নেতা অনিরুদ্ধ মাহাতো বলেন, “মানুষ ব্যাঙ্কে টাকা রাখে বিপদের সময়ে কাজে লাগবে বলে। কিন্তু ব্যাঙ্কের গাফিলতির জন্য মহিলার মৃত্যু হল। গোটা ঘটনার তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছি।”
উল্লেখ্য, গত চার দিন ধরে বিহারের বিভিন্ন জেলায় নগদ সঙ্কট চলছে। পটনা শহরের এটিএমগুলিতে টাকা মিললেও গয়া, মুজফফরপুর, পূর্ণিয়া-সহ বিভিন্ন জেলা শহরে বেশির ভাগ এটিএম নগদহীন। বেশ কিছু এটিএমের সামনে টাকা না থাকার কথা বোর্ড ঝুলিয়ে জানানো হয়েছে। গ্রামীণ এটিএমগুলির অবস্থা আরও খারাপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy