কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাশ্মীর নীতির কড়া সমালোচনায় সরব হলেন কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। তাঁর বক্তব্য, সামরিক বাহিনীর কড়া দমননীতি কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে।
এর আগে কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে উপত্যকায় স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে সওয়াল করে একপ্রস্ত বির্তক বাধিয়েছিলেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদম্বরম। এ বার পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি দেখালেন, দমননীতি নেওয়ায় কাশ্মীরে জঙ্গি নিধন বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু তা উপত্যকায় শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে। চিদম্বরমের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন আর এক কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। গত কাল কাশ্মীরে আইইডি বিস্ফোরণে নিরাপত্তারক্ষীদের মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে সিব্বলের প্রশ্ন, ‘‘প্রায় রোজই সেনা ও পুলিশকর্মী মারা যাচ্ছেন। সরকার কি এর কোনও ব্যাখ্যা দেবে কোনও? এই মৃত্যুমিছিল কবে বন্ধ হবে?’’
পাল্টা সুর চড়িয়েছে বিজেপিও। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘এ ধরনের মন্তব্যে জঙ্গি ও পাকিস্তানের মনোবল বৃদ্ধি হয়। এতে দেশের কোনও ভাল হয় না।’’
গত এক বছরে কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে সর্বাত্মক অভিযানে নেমেছে সেনা। প্রায় দেড় দশক পরে ঘরে-ঘরে ঢুকে তল্লাশি চালানোর নীতি নেওয়া হয়েছে। যার ফলে জঙ্গি নিধনের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই কোণঠাসা হয়ে জঙ্গিরাও পাল্টা প্রত্যাঘাত শুরু করেছে। ফলে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। এ কারণে সরকারের ওই নীতি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন চিদম্বরম। হিসেব দেখিয়ে তাঁর দাবি, ২০১৪ ও ২০১৭ সালের তুলনা করলে জঙ্গি, নাগরিক ও নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৪ সালে যেখানে জঙ্গি ও নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যুর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১১০ ও ৪৭, ২০১৭ সালে তা বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ২১৮ ও ৮৩। তার পরেই সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখেছেন চিদম্বরম, ‘‘দাবি করা হয়েছিল কড়া দমননীতির পথে হাঁটলে কাশ্মীরের জঙ্গি সমস্যা মিটে যাবে। সত্যিই কি তা হয়েছে?’’
প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা দীনেশ্বর শর্মাকে সম্প্রতি কাশ্মীরে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেছে কেন্দ্র। চিদম্বরম কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে সওয়াল করলেও, শর্মার নিয়োগ তাঁর মতে ‘লোক দেখানো’। চিদম্বরমের কথায়, ‘‘গুজরাত ভোটের আগে শর্মার নিয়োগ হয়। কিন্তু তাঁর হাতে ক্ষমতা কতটা রয়েছে সে বিষয়ে স্বচ্ছতা নেই। ফলে ওই নিয়োগের কোনও কার্যকারিতা আছে বলে মনে হয় না।’’
সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে চিদম্বরমের পরামর্শ, ‘‘এখনই কাশ্মীরে রাজ্যপালের শাসন জরি করা হোক। একই সঙ্গে কেন্দ্র জানাক, তারা সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আছে। এমন মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করা হোক, যাঁর সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলার অধিকার থাকবে।’’ তবে এই আলোচনার আগে যে উপযুক্ত পরিবেশ দরকার, সে কথাও উল্লেখ করেন চিদম্বরম। তাঁর মতে, ‘‘আগে সেনা ও আধাসেনা কমাতে হবে উপত্যকা থেকে। আর আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব তুলে দিতে হবে রাজ্য পুলিশের হাতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy