ডাক্তারি পড়ার জন্য সর্বভারতীয় অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা এ বছরেই প্রথম নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দেশ জুড়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা চালু করার বিষয়টি আপাতত স্থগিত রাখল কেন্দ্র। রাজ্যগুলি এই বিষয়ে যত দিন না সহমত হচ্ছে, তত দিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য সারা দেশে একটিই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না বলে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের খবর।
এর আগে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ২০১৮-’১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে হবে সারা দেশের ছাত্রছাত্রীদের। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ু এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরকে চিঠিও দেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাই কেন্দ্রীয় সরকার যে শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখল, তার পিছনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমিকা খুবই বড় বলে মনে করছে শিক্ষা শিবিরের একটি বড় অংশ।
তাঁদের আপত্তি-প্রতিবাদে কাজ হয়েছে বুঝে পার্থবাবুও খুশি। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক এ দিন ওই অভিন্ন প্রবেশিকার সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছে জেনে শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘ওদের শুভবুদ্ধি জাগ্রত হয়েছে।’’
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রের খবর, দেশ জুড়ে একই সঙ্গে পরীক্ষার পরে ভর্তির কাউন্সেলিং কী ভাবে হবে, সেই বিষয়েও সব রাজ্যের সঙ্গে সবিস্তার আলোচনা দরকার। সব জট কাটিয়ে ২০১৮-’১৯ সাল থেকে এই পরীক্ষা চালু করা সম্ভব নয়।
মেডিক্যালে ভর্তির জন্য বিভিন্ন রাজ্য এত দিন আলাদা আলাদা জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ব্যবস্থা করত। কিন্তু ভর্তিতে টাকা লেনদেন-সহ বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, সারা দেশে ডাক্তারির একটিই প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্যের আবেদন-নিবেদনে শুধু গত বছরের জন্য ডাক্তারির আলাদা ভর্তি-পরীক্ষা নেওয়ার বন্দোবস্ত বহাল রাখে শীর্ষ আদালত। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত আটকাতেও অগ্রণী ভূমিকা নেয় তৃণমূল সরকার।
মার্চে দিল্লিতে এক বৈঠকে রাজ্যের পক্ষ থেকে এই নিয়ে প্রথম আপত্তি জানায় পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ু। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সচিব বিবেক কুমার সেখানে পাঠ্যক্রমের পার্থক্যের প্রসঙ্গ তেলেন। প্রশাসনের বক্তব্য, অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষায় মূলত সিবিএসই-র পাঠ্যক্রম অনুসরণ করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পাঠ্যক্রম সিবিএসই-র পাঠ্যক্রমের থেকে অনেকটাই আলাদা। তাই এই ধরনের অভিন্ন পরীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের পড়ুয়ারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তার পরে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীকে চিঠি দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy