নরেন্দ্র মোদী।
সকালেই বলেছিলেন— জন্মদিন পালনের মধ্যে তিনি নেই। ঘনিষ্ঠ সেনাপতি অমিত শাহও এক দীর্ঘ ব্লগে আজ লিখলেন, নরেন্দ্র মোদীকে কোনও দিন নিজের জন্মদিন পালন করতে তিনি দেখেননি।
তাতে কী?
প্রধানমন্ত্রীর ৬৮তম জন্মদিন বলে কথা! ‘পিএমও ইন্ডিয়া’— প্রধানমন্ত্রীর টুইটার হ্যান্ডলে সকালেই বলে দেওয়া হল, জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে হলে কোথায় ‘ক্লিক’ করতে হবে! স্ক্রিনে উড়তে লাগল ডিজিটাল রঙিন বেলুন। মোদীর জন্মদিনকে ‘সেবা দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। অগত্যা। স্মৃতি ইরানি, নির্মলা সীতারামন, রবিশঙ্কর প্রসাদের মতো মন্ত্রীরা ঝাড়ু হাতে ছুটলেন সকালেই। গেলেন অরুণ জেটলিও। এরই মধ্যে শোনা গেল, নতুন পর্যটনমন্ত্রী আলফোন্স কান্নানথানমের সাফাই অভিযানের জন্য এমনিতেই পরিচ্ছন্ন ইন্ডিয়া গেট উদ্যানে কিছু আবর্জনা ছড়াতে হয়েছে স্বেচ্ছাসেবীদের!
ঝাড়খণ্ডে দলের নেতাদের নিয়ে অমিত শাহ ঝাড়ু হাতে একই জায়গা সকলে মিলে সাফাই করলেন। ব্লগে লিখলেন, সর্দার পটেল দেশকে একজোট করেছিলেন, অম্বেডকর সমাজকে একজোট করেছিলেন। তেমনই জিএসটি-জনধন নিয়ে আর্থিক ভাবে একজোট করছেন ‘করুণার প্রতীক, গরিবদরদি’ মোদী। বলতে চাইলেন, মোদী আসলে পটেল-অম্বেডকরেরই উত্তরসূরি।
প্রতিযোগিতায় নামলেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীরাও। মনোহর পর্রীকর বললেন, বছরে একশো ঘণ্টা সাফাই করবেন। রমন সিংহ বললেন, প্রধানমন্ত্রীর টার্গেটের এক বছর আগেই ছত্তীসগড়ে প্রকাশ্যে শৌচ বন্ধ করবেন। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী তো গোটা নর্মদা বাঁধটিই ‘উপহার’ দিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে স্কুল দখল করে বিজেপি নেতারা গান গাইলেন, মিষ্টি বিলোলেন। স্কুলপড়ুয়া থেকে সিয়াচেনের সেনা— সকলকেই নামতে হল সাফাই অভিযানে। কোথাও যজ্ঞ, কোথাও মোদী-পুজো। টুইটারেও ঢল শুভেচ্ছার।
এ বারও জন্মদিনে মায়ের সঙ্গে দেখা করলেন মোদী। সৌরাষ্ট্রের আমরেলির এক অনুষ্ঠানে বললেন— সবুজ বিপ্লব, শ্বেত বিপ্লবের পরে সময় এসেছে নীল বিপ্লব ও মিষ্টি বিপ্লবের। নীল বিপ্লব— অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ জলপথের বহুল ব্যবহার। সৌরাষ্ট্র থেকে কলকাতা বা বিশাখাপত্তনমে কম খরচে জলপথে পণ্য পরিবহণের সম্ভাবনার কথা বললেন। আর সৌরাষ্ট্রের কৃষকদের বললেন মৌমাছি পালন করতে। তাতে চাষিদের আয় বাড়বে। সেটাই মিষ্টি বিপ্লব। অনেকের মতে, মোদী নিজের রাজ্যে বিধানসভা ভোটের জমিটাও তৈরি করে গেলেন।
এরই মধ্যে আজ কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি কটূক্তি করে বিতর্কে জড়ালেন। গুজরাতের কংগ্রেস নেতারা প্রশ্ন তুললেন, ‘‘মোদীর জন্মদিন কবে? কলেজের একটি রেকর্ড তো বলছে, ২৯ অগস্ট। এখানেও মিথ্যাচার?’’ বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের দাপটে ‘মার্শাল’ অর্জন সিংহের শেষকৃত্যটাও হতে পারল না। তা পিছনো হয়েছে আগামিকাল। মোদী অবশ্য অর্জনের কথা বলেছেন বক্তৃতায়। রাতে দিল্লি ফিরেও প্রয়াত ‘মার্শাল’-এর বাড়ি গিয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গাঁধীরা টুইটারে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোদীকে। তবে অনেকেরই প্রশ্ন, জন্মদিন পালন না করেই তো সকলকে দৌড় করালেন প্রধানমন্ত্রী। পালন করলে কী হতো!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy