নরেন্দ্র মোদী।
রীতিমতো ‘এস-ও-এস’।
সব জেলায় অন্তত একটি করে বড় সভা করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। অঙ্কের হিসেবে তো তিরিশটির বেশি সভা! বিজেপির গুজরাত শাখা থেকে এই অশনি-বার্তা পেয়ে এখন হিমশিম খাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়।
গত এক মাসে রাহুল গাঁধী চার বার গিয়েছেন গুজরাতে। হার্দিক পটেল, জিজ্ঞেস মেওয়ানি, অল্পেশ ঠাকুর— তিন তরুণ তুর্কিকে নিয়ে গুজরাত ভোটের সমীকরণটিই পুরো বদলে দিয়েছেন। পাতিদার, ওবিসি, দলিত ও আদিবাসীদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন। মোদীর পালের হাওয়া কেড়ে ঘন-ঘন মন্দির দর্শনও করছেন। হাওয়া ঘোরাতে রাজ্য বিজেপির কাছে এখন একমাত্র তাস মোদীই। পরিত্রাতাও। তারা তাই প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়কে জানিয়েছে, রাজ্যের ৩৩টি জেলার মধ্যে ৩২-টিতেই বড় সভা করতে হবে মোদীকে।
বিজেপির শীর্ষ সূত্র জানাচ্ছে, চলতি সপ্তাহেই দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটির বৈঠক ডেকে গুজরাতের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। তার পরে নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ সে রাজ্যে প্রচার শুরু করতে পারেন মোদী। কিন্তু সব জেলায় সভা করতে হলে তার জন্য তো সময় বার করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে! সেই ‘দুষ্কর’ কাজটিই করে দেখানোর চেষ্টায় নেমেছে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়।
গুজরাতের এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়কে আমাদের দাবি জানিয়ে দিয়েছি। সভার পাশাপাশি অমদাবাদ, বডোদরা, সুরত, রাজকোটের মতো শহরগুলিতে রোড-শোও করা হতে পারে। তাতে অন্তত অনেকটা এলাকা ‘কভার’ করা যাবে।’’ গত ছ’মাসে প্রধানমন্ত্রী দশ বার গুজরাতে গিয়েছেন। কখনও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে বুলেট ট্রেনের কাজ শুরু করাতে, কখনও সর্দার সরোবর বাঁধের উদ্বোধনে। তবু মোদীর রাজ্যে বিজেপি এখন কোনও ঝুঁকিই নিতে চাইছে না। বিজেপির এক নেতা আজ বলেন, ‘‘রাজ্যে অসন্তোষের যে চোরাস্রোত বইছে, একমাত্র মোদীই পারেন তার হাওয়া ঘুরিয়ে দিতে। গুজরাত তাঁর হাতের তেলোর মতো চেনা।’’ সদ্য আজই গুজরাতে প্রচার করে ফিরে কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘এই অসন্তোষ যে বিজেপিকে ভয়ে রেখেছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। রাহুলকে নিয়ে বিজেপি যে ভাবে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে, তাতেই স্পষ্ট ভয় ঢুকেছে বিজেপির মজ্জায়।’’
আরও পড়ুন: কুকুরের ডায়ালিসিস নিয়ে তদন্তে কাউন্সিল
শেষ বাজারে হাওয়া ঘোরাতে মোদী কী করেন, সে দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে কংগ্রেসও। দলের এক নেতার মতে, হাওয়া ঘোরাতে মোদী যা সব থেকে ভাল পারেন, তা হল মেরুকরণের রাজনীতি। বিজেপি চায়, অতীতে সনিয়া গাঁধীর মতো রাহুলও ‘মওত কা সওদাগর’-এর মতো কোনও মন্তব্য করুন, আর বিজেপি তার ফায়দা তুলুক। কিন্তু রাহুল সতর্ক থাকায় সেটি হচ্ছে না। বিজেপি এখন তাই অযোধ্যার মন্দির নিয়ে ধাপে ধাপে হিন্দুত্বের হাওয়া তুলছে। সুপ্রিম কোর্টের শুনানির আগে কাজে লাগানো হচ্ছে রবিশঙ্করকে। এরই সঙ্গে মুসলিম ভোট রাহুলের ঝুলিতে যাওয়া ঠেকাতে সঙ্ঘর লোকজন দরগা-মসজিদে গিয়ে বোঝাতে চাইছেন, কংগ্রেস বিশ্বাসঘাতক। ‘অশ্লীল’ সিডি বের করে বিরোধীদের কাবু করার পুরনো পন্থাও হাতড়াচ্ছে মোদী-শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy