রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে তরুণ প্রজন্মের দৌড় আর গ্রামাঞ্চলে কৃষক বিক্ষোভ— এই দুইয়ের ধাক্কায় নড়বড়ে হয়ে গেলও নিজের রাজ্যে কোনও রকমে দলকে জিতিয়েছেন। কিন্তু এ বার কী হবে, সেটাই অগ্নিপরীক্ষা নরেন্দ্র মোদীর। আগামী মাসেই গুজরাতের স্থানীয় স্তরে নির্বাচন। আর সেই ভোটই এখন বিজেপি তথা মোদীর গলার কাঁটা। এই অবস্থায় ফের হিন্দুত্বের হাওয়ায় ভেসে ভোটে জিততে কাল ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে নিজের রাজ্যে যাচ্ছেন মোদী। গুজরাত ভোটের ফল প্রকাশের পরে এই প্রথম।
৭৫টি পুরসভা, ২টি জেলা পঞ্চায়েত, ১৭টি তালুকা পঞ্চায়েত এবং ১৪০০ গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোট আগামী মাসে। সিংহভাগই বিজেপির দখলে। বিজেপি নেতৃত্বের আশঙ্কা, বিধানসভা ভোটেই গদি উল্টে যাওয়ার অবস্থা হয়। স্থানীয় ভোটে সেটাই না হয়ে যায়! প্রতিপক্ষ রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস যথেষ্ট আক্রমণাত্মক। আজই অশোক গহলৌত ভোটের কৌশল নিয়ে বৈঠক করেছেন। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, বিধানসভায় অল্পের জন্য বাঁচলেও স্থানীয় ভোটে কুপোকাত হবে বিজেপি।
দু’মাসের মাথায় ফের ভোট নিয়ে উদ্বেগ বিজেপির অন্দরেও। তাদের ভরসা সেই মোদীই। ভোটের ফলে ধাক্কা খেয়ে এ যাবৎ নিজের রাজ্যে যাচ্ছেনই না প্রধানমন্ত্রী। পাতিদারদের বাণিজ্য সম্মেলনেও যাননি। কিন্তু কাল যাচ্ছেন। সঙ্গে থাকবেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। দু’জনে রোড-শো করবেন, সাবরমতী আশ্রমেও যাবেন। তাঁদের জন্য বেছে বেছে এমন জেলায় কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, যেখানে আগামী মাসে ভোট।
এক কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, প্যালেস্তাইনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সহ একাধিক কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানই ইজরায়েলকে প্রচণ্ড অপছন্দ করেন। আর তাই ইজরায়েলের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় আরএসএস! মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে ইজরায়েল-বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় বিদেশসচিব পদ খোয়াতে হয় সুজাতা সিংহকে। সেই ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অমদাবাদ গিয়ে মোদী যে আসলে উগ্র হিন্দুত্বেরই বার্তা দিতে চাইছেন, সেটি সবাই বুঝছেন। ওই কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, এত করেও বিজেপি জিততে পারবে না। বিজেপির রাজ্য সভাপতি জিতু ভাগানির পাল্টা দাবি, ‘‘ছ’বার লাগাতার জিতেছি। মানুষের সমর্থন স্থানীয় ভোটেও কাজে লাগবে। গত বারের হারা আসন জেতার কৌশলও আমরা রচনা করেছি।’’ মুখে এ দাবি করলেও দিল্লিতে বিজেপির এক নেতা ঘরোয়া মহলে কবুল করেন, যে ভাবে রাজ্য প্রায় হাতছাড়া হতে বসেছিল, তাতে গুজরাতের মানুষের মনের আঁচ পাওয়া গিয়েছে। ২০১৫ সালেও কংগ্রেস স্থানীয় ভোটে ভাল ফল করেছিল। এখন তো প্রতিপক্ষ একজোট, অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। লড়াই আর একতরফা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy