Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
National News

উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে উত্তর-পূর্বেও সি-প্লেনকেই এগিয়ে দিলেন মোদী

কংগ্রেস মুক্ত উত্তর-পূর্ব গড়ার জন্য মিজোরাম-মেঘালয়-ত্রিপুরা জয়ে জোরকদমে নেমেছে বিজেপি। এ দিন মেঘালয়ের জনসমাগম দেখে মেঘালয় দখলের আগাম ভবিষ্যদ্বাণীই করে গেলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে গোলাপ দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা। ছবি- পীতাম্বর নেওয়ার।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে গোলাপ দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা। ছবি- পীতাম্বর নেওয়ার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৮:৫৭
Share: Save:

সি-প্লেন নিয়ে চলতে থাকা বিতর্ককে ফ্রন্টফুটে খেলে, মিজোরাম-মেঘালয়ে উত্তর-পূর্বের নির্বাচনী সফরের সূচনা করতে এসে সেই সি-প্লেনকেই সামনে এগিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শিলংয়ের জনসভায় তিনি বলেন, “আমি কয়েক দিন আগে গুজরাতে সি-প্লেনের ট্রায়াল দিলাম। তেমন বিমান এখানকার পর্যটনে দারুণ সম্ভাবনাময়। উত্তর-পূর্বে সি-প্লেনে চড়ে পর্যটকেরা জল থেকে উড়তে বা জলে নামতে পারবেন।”

কংগ্রেস মুক্ত উত্তর-পূর্ব গড়ার জন্য মিজোরাম-মেঘালয়-ত্রিপুরা জয়ে জোরকদমে নেমেছে বিজেপি। এ দিন মেঘালয়ের জনসমাগম দেখে মেঘালয় দখলের আগাম ভবিষ্যদ্বাণীই করে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “অসম জয়ের পর থেকে একে একে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি আমাদের সঙ্গে এসেছে। ১৫ বছর কংগ্রেসের অপশাসনে থাকার পরে এ বার মেঘালয়বাসীরও সেই পরিবর্তনের শরিক হওয়ার সময় এসেছে।”

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বার মিজোরামে এলেন মোদী। খ্রিস্টপ্রধান মিজোরামে বিজেপির ভিত দুর্বল। রাজ্যের প্রথম বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তুরিয়ালের উদ্বোধন করে মোদী বলেন, “এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের ফলে মিজোরাম বিদ্যুৎ-উদ্বৃত্ত রাজ্য হবে। ৪৫ বর্গ কিলোমিটারের জলাধার বিস্তীর্ণ জমিতে সেচের ব্যবস্থা করবে। ১৯৯৮ সালে বাজপেয়ীর আমলে ঘোষিত প্রকল্প এত দিনে শেষ হল। এতেই আগের সরকারের অনাগ্রহ ও এই সরকারের আন্তরিকতা প্রমাণ হয়।” তিনি জানান, মিজোরামে দু’টি পর্যটন প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যে ১১৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তাঁর আশা, ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে মিজোরাম ‘কার্বন নেগেটিভ’ ও ‘অরগ্যানিক’ রাজ্যে পরিণত হবে।

আরও পড়ুন- ওরা ভাঙে, আমরা গড়ি, কংগ্রেস সভাপতি হয়েই মোদীকে নিশানা রাহুলের​

আরও পড়ুন- ‘হিন্দু মানে ত্রাস নয়, বিশ্বাসটা ফিরিয়ে দিয়েছিল কলকাতা’​

শিলং ও আইজলে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, উত্তর-পূর্বে যোগাযোগ বিকাশে ৬০ হাজার কোটি টাকা, ভারতমালা প্রকল্পে ৩০ হাজার কোটি, ১৫টি নতুন রেলপথ তৈরিতে ৪৭ হাজার কোটি খরচ করবে কেন্দ্র। উড়ান যোগাযোগে ৫২টি নতুন রুট চালু হবে। চালু হবে ১৯টি বন্ধ বিমানঘাঁটি। তাঁর কথায়, “অর্থাভাব সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ১০০ শতাংশ কেন্দ্রীয় সাহায্য ও উত্তর-পূর্বের প্রকল্পগুলিতে ৫৩০০ কোটি বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। মন্ত্রীরা গত তিন বছরে ১৫০ বার উত্তর-পূর্ব সফর করেছেন। এখানকার বিকাশে আমরা বদ্ধপরিকর।”

উত্তর-পূর্বে বাঁশ চাষ ও বাঁশ শিল্পে উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রেখে বন আইনের বদল ও বাঁশকে অরণ্যের আওতা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর আশা, এই বদলের ফলে ২০২২ সালের মধ্যে বাঁশ চাষি ও শিল্পীদের আয় দ্বিগুণ হবে।

মিজোরাম ও মেঘালয়ের বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদদের কথা উল্লেখ করে ক্রীড়াক্ষেত্রে কেন্দ্রের ঢালাও সাহায্যের আশ্বাস দেন মোদী।

শিলংয়ে ২৩১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ শিলং-নংস্টোইন-তুরা সড়কের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মোরারজি দেশাইয়ের পরে আমিই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যে উত্তর-পূর্ব পরিষদের বৈঠকে অংশ নিয়েছি। এনডিএ আমলে উত্তর-পূর্বে বিনিয়োগ আগের সরকার অপেক্ষা চার-পাঁচ গুণ বেড়েছে।” মেঘালয়ে পর্যটন বিকাশে ১০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করার বার্তা দিয়ে মোদী বলেন, “মেঘালয়ে সব রয়েছে, নেই কেবল সুশাসন ও সরকারি সদিচ্ছা। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ডাক্তার হলেও রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বেহাল। অসমের পথে পা মিলিয়ে মেঘালয়েরও তাই পরিবর্তন প্রয়োজন। ২০২২ সালে দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছরের পাশাপাশি মেঘালয়েরও ৫০তম প্রতিষ্ঠা দিবস। তাই এখনই নতুন দিন আনার জন্য শপথ গ্রহণের উপযুক্ত সময়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE