Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে চিঠি সিবিআইকে

ফেরায় ‘না’, ভয়ে কাঁটা মেহুলভাই

পিএনবি কেলেঙ্কারিতে অন্যতম অভিযুক্ত সেই মেহুল চোক্সী সিবিআইকে চিঠিতে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে দেশে ফেরা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, তিনি এবং তাঁর পরিবার ভুগছেন চরম নিরাপত্তার অভাবে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০৪:৩৭
Share: Save:

খোদ প্রধানমন্ত্রী খাস সরকারি বাসভবনে এক অনুষ্ঠানে তাঁকে সম্বোধন করেছিলেন ‘মেহুলভাই’ বলে। পিএনবি কেলেঙ্কারিতে অন্যতম অভিযুক্ত সেই মেহুল চোক্সী সিবিআইকে চিঠিতে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে দেশে ফেরা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, তিনি এবং তাঁর পরিবার ভুগছেন চরম নিরাপত্তার অভাবে। যদিও তদন্তের জন্য দেশে ফেরা যে সম্ভব নয়, তা এর আগেও জানিয়েছেন আর এক অভিযুক্ত নীরব মোদীর মামা।

২০১৫ সালে সোনা জমা প্রকল্প ঘোষণার অনুষ্ঠানে গীতাঞ্জলি গোষ্ঠীর কর্ণধার চোক্সীর প্রতি নরেন্দ্র মোদীর ‘মেহুলভাই’ সম্বোধন ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর হয়েছে বিস্তর। পিএনবি কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়েছেন। আর ভারতে ফেরা যে ‘অসম্ভব’, সিবিআইকে এ পর্যন্ত পাঠানো শেষ চিঠিতেও সেই দাবিতে অনড় থেকেছেন এই গুজরাতি শিল্পপতি।

দেশে ফিরে তদন্তে সহায়তার জন্য সিবিআইয়ের পাঠানো নোটিসের জবাবে মার্চের গোড়ায় ই-মেল করে পাসপোর্ট বাতিল হওয়া ও স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে মেহুল বলেছিলেন, ভারতে ফিরতে তিনি অপারগ। আর, ১৬ মার্চ ফের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোকে চিঠি পাঠিয়ে তাঁর সওয়াল, ‘‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি ধোপে টেকে না। ওই সব অভিযোগের কারণে আচমকাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে ব্যবসা। ফলে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছেন ব্যবসার এক সময়ের সহযোগীরাই।’’

সওয়াল

• বাতিল হওয়া পাসপোর্ট হাতে আসেনি এখনও

• স্বাস্থ্যের কারণে যাতায়াতে বিধিনিষেধ

• সিবিআইয়ের আনা অভিযোগ ধোপে টেকে না

• ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে ‘বিচার’ শুরু করেছে সংবাদমাধ্যমই

• কর্মী, ক্রেতা, ঋণদাতা—সকলেই এখন শত্রুর দলে

• আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ নেই

• তদন্তে সহায়তা চাওয়া অন্যায্য

মেহুলের দাবি, আগের চিঠিতে উল্লেখ করা পাসপোর্ট সমস্যা একই জায়গায় রয়েছে। হৃদ্‌রোগের কারণে তাঁর চিকিৎসা চলছে। তাই ৪-৬ মাস যাতায়াতের উপর ডাক্তারি বিধিনিষেধ রয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে এক হাত নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘এরাই ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে নিজে থেকে আমার ‘বিচার’ শুরু করে দিয়েছে। আমার এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আগেও জানিয়েছি। সংবাদমাধ্যমের অপপ্রচারে এখন তা চরমে উঠেছে। ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় ঋণদাতা, কর্মী, ক্রেতা, সকলেই শত্রুতা করছেন।’’

তাঁর আরও দাবি, সিবিআইয়ের এফআইআরে ডায়মন্ড আর আস, স্টেলার ডায়মন্ড, সোলার এক্সপোর্টসের মতো সংস্থার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলির তিনি অংশীদারও নন, তাঁর সঙ্গে ওই সব সংস্থার কোনও রকম সম্পর্কও নেই। মেহুলের কথায়, ‘‘আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সে ব্যাপারে আমি অন্ধকারে। অসহায়ও বটে। তা সত্ত্বেও আমাকে তদন্তে সহায়তা করতে বলা অন্যায্য। অভিযোগগুলি যে ভাবে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে, তাতে আমি আত্মপক্ষ সমর্থনে পুরোপুরি অপারগ।’’

প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রায়ত্ত পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক মামা-ভাগ্নে মেহুল চোক্সী-নীরব মোদীর প্রতারণার কথা সিবিআইকে জানানোর ঠিক আগেই দেশ ছাড়েন তাঁরা। তার পর তদন্তে সহযোগিতা করা ও দেশে ফিরে হাজিরা দেওয়ার জন্য এ মাসের গোড়ায় সিবিআই নোটিস পাঠায় মেহুলকে।

আরও অভিযোগ নীরবের বিরুদ্ধে: পিএনবি কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত নীরবের বিরুদ্ধে ৮৯০ কোটি টাকার হিরে, মুক্তো সরানোর অভিযোগ আনল মুম্বইয়ের আঞ্চলিক রাজস্ব গোয়েন্দা দফতর। সুরাতের বিশেষ আর্থিক অঞ্চল (সেজ) থেকে তিনি ওই অঙ্কের গয়না সরিয়ে দেশের বাজারে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ। সেজ থেকে শুধু রফতানিরই অনুমতি থাকে। সে জন্যই বিনা শুল্কে হিরে ইত্যাদি আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE