কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে আজই প্রথম বার সভাপতিত্ব করলেন তিনি। আর সেই বৈঠকেই নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করে রাহুল গাঁধী বললেন, ‘‘কংগ্রেস কখনও দেশকে এমন প্রধানমন্ত্রী দেয়নি, যিনি নিজের নীতি নির্ধারণের কৌশলটাই তৈরি করেন টিআরপি-র কথা ভেবে। যিনি নিজের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে গিয়ে মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ ডেকে আনেন।’’
হাসপাতাল থেকে সদ্য ফেরা কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী আজ যোগ দিতে পারেননি বৈঠকে। তাঁর অনুপস্থিতিতে সেই বৈঠকে রাহুলের সভাপতিত্ব এবং নোট বাতিল থেকে শুরু করে কাশ্মীর ও পাক নীতি নিয়ে মোদীকে আক্রমণ তাৎপর্যপূর্ণ।
বৈঠকে রাহুলের অভিযোগ, নিজের ভাবমূর্তির মধ্যে বন্দি হয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রতিষ্ঠানকে এড়িয়ে চলছেন। তাঁর গর্ব ও অযোগ্যতার মাসুল দিচ্ছে দেশ। মানুষের স্বর শুনলেই মোদী ভাল প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা চান না। নোট বাতিল প্রসঙ্গে রাহুল বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিদের কথা শুনলে এই বিপর্যয় আসত না। গোটা বিশ্ব অচিরেই টের পাবে, এক অসম্পূর্ণ পরীক্ষা করা হয়েছে। সব নগদই কালো নয়, সব কালোই নগদ নয়। আবার কালোকে সাদা করার নতুন কল তৈরি হয়েছে। আদপে তিনি (মোদী) বিশ্বে সবথেকে দ্রুত বেড়ে ওঠা অর্থনীতির বিরুদ্ধে একা যুদ্ধ ঘোষণা করলেন। সব বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদই এর নিন্দা করছেন।’’
রাহুলের আরও বক্তব্য, ইউপিএ জমানায় পাকিস্তানকে গোটা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা গিয়েছিল। তাতে কাশ্মীরে শান্তি এসেছিল। পর্যটকও। আজ কাশ্মীর পুড়ছে আর মোদী চুপ করে আছেন। কংগ্রেস সহ-সভাপতির কথায়, ‘‘এই প্রধানমন্ত্রীকে ইতিহাস এ ভাবেই মূল্যায়ন করবে, তিনি পিডিপির সঙ্গে সুবিধাবাদী জোট করে ভারত-বিরোধী শক্তিকে রাজনৈতিক পরিসর উপহার দিয়েছেন। তাতে জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। যার মূল্য চোকাচ্ছেন আমাদের বীর সেনারা এবং তাঁদের পরিবার।’’
রাহুলের মন্তব্য নিয়ে কিছু বলতে চাননি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তবে রাতে এবিপি নিউজের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘গাঁধী পরিবার বিরোধী শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ দলের নেতা। তাঁরা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মোদীর সমর্থন করলে ভাল হতো। এখন সরকার সংসদে কথা চাইছে, বিরোধীরাই তা থেকে পালাচ্ছে।’’
বিরোধীদের অনেকেই অবশ্য অন্য ইঙ্গিত দেখছেন। নভেম্বরের গোড়ায় দশ জনপথে থাকলেও অসুস্থতার জন্য এ ভাবেই ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আসেননি সনিয়া। সেই বৈঠকেই রাহুলকে সভাপতি করার সুপারিশ করেছিলেন মনমোহন সিংহ থেকে শুরু করে এ কে অ্যান্টনি। আজকের পরে অনেকেই মনে করছেন, দলের শীর্ষের পথে আরও একধাপ এগোলেন সনিয়া-পুত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy