রামনাথ কোবিন্দ ও বিপিন রাওয়ত
দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে মুষ্ঠিযুদ্ধের এক সপ্তাহের মধ্যেই একই সঙ্গে লাদাখে পা রাখছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়ত।
ডোকলাম নিয়ে এমনিতেই ভারত ও চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চরমে। চলতি সপ্তাহে তার ছায়া এসে পড়েছিল লাদাখে। ১৫ অগস্ট প্যাংগং হ্রদের কাছে চিনা সেনার অনুপ্রবেশ রুখতে চলতি সপ্তাহেই দুই সেনার মধ্যে পাথর ছোড়াছুড়ি, লাঠালাঠি, মুষ্ঠিযুদ্ধ হয়েছে। তার মধ্যেই রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধানের লাদাখ সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিক ও সেনাকর্তারা। কারণ, রাষ্ট্রপতি হিসেবে সেনাবাহিনীর সুপ্রিম কম্যান্ডার হওয়ার পরে এটাই দিল্লির বাইরে প্রথম সফর কোবিন্দের।
আরও পড়ুন: সীমা লঙ্ঘন না করতে শরদকে বার্তা নীতীশের
রাজ্য সরকারের বা কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে নয়, কোবিন্দ যাচ্ছেন একেবারে সেনারই অনুষ্ঠানে। সোমবার তিনি লেহ-তে সেনাবাহিনীর ১৪ কোরের সদর দফতরে ‘লাদাখ স্কাউট’ নামের রেজিমেন্টকে ‘প্রেসিডেন্সিয়াল কালার্স’-এ পুরস্কৃত করবেন। যা সেনার যে কোনও বাহিনীর কাছেই অত্যন্ত সম্মানের। সফরের সময়টি তাৎপর্যপূর্ণ হলেও রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রে বলা হচ্ছে, এই কর্মসূচি আগে থেকেই ঠিক ছিল। কিন্তু এটা ঘটনা যে, রাষ্ট্রপতি নিজে চিন সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় গিয়ে বাহিনীকে পুরস্কৃত করলে জওয়ানদের মনোবল বাড়বে। শেষ বার কোনও রাষ্ট্রপতি লাদাখে গিয়েছিলেন ৭ বছর আগে। ২০১০-এ লাদাখে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল লাদাখে যান।
রাষ্ট্রপতি যাবেন সোমবার। তিন দিনের সফরে সেনাপ্রধান পৌঁছবেন আগামিকাল। উধমপুরের নর্দান কম্যান্ডের এক উচ্চপদস্থ সেনা অফিসার বললেন, ‘‘সেনাপ্রধান চিন সীমান্ত বরাবর নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবেন। কম্যান্ডারদের সঙ্গে বাহিনীর রণকৌশলগত খুঁটিনাটি দিকগুলি নিয়েও বৈঠক করবেন। সোমবার লেহ-র অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানও হাজির থাকবেন।’’
চিনের সরকার ও সেনা, এমনকী তাদের সংবাদমাধ্যমও নিয়মিত ভারতকে চোখ রাঙাচ্ছে। যুদ্ধ হলে ভারতের সেনাকে হাওয়ায় মিশিয়ে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছে তারা। এই পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধানের সফরের মূল উদ্দেশ্য, জওয়ানদের মনোবল চাঙ্গা করা। সেনা সূত্রের খবর, তিন দিনের সফরে সেনাপ্রধান এলএসি (প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা)-তে সেনা চৌকিগুলিতে মোতায়েন জওয়ানদের সঙ্গেও দেখা করবেন। স্বাভাবিক ভাবেই সেনাপ্রধানের এই সফরে চিন অখুশি। কূটনৈতিক স্তরে নিজেদের অসন্তোষের কথাও জানিয়েছে তারা। কিন্তু সাউথ ব্লক এতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজি নয়।
কূটনৈতিক সূত্রের ব্যাখ্যা, চিন রোজই হুমকি দিচ্ছে। গরম-গরম কথা বলছে। ভারত সরকারি স্তরে তার পাল্টা কোনও জবাব দেয়নি। কূটনৈতিক ভাবে অনেক পরিণত মনস্কতার পরিচয় দিতে চাইছে নয়াদিল্লি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধানের সফরে এটা স্পষ্ট যে, ভারতও নিজেদের মতো প্রস্তুত থাকছে। দেশের মধ্যেও এতে বার্তা যাবে, বেজিংয়ের সঙ্গে স্নাযুর যুদ্ধে জমি ছাড়ছে না মোদী সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy