দিল্লির মেট্রোয় মোদী। শনিবার সকালে পিটিআইয়ের ছবি।
ভূকম্পের দাপট তখনও শুরু হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর টুইট-দেওয়ালে ভেসে উঠল দু’টি ছবি। এই প্রথম দিল্লির মেট্রোতে সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সকালবেলায় দিল্লির দ্বারকায় জাতীয় গোয়েন্দা অ্যাকাডেমির অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। তাই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে সঙ্গে নিয়ে সড়ক পথে না গিয়ে মেট্রোকেই বেছে নিলেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় জানাচ্ছে, সড়ক পথে নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি এড়াতেই এই পদক্ষেপ।
কিন্তু টুইটে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, অনেক দিনই মেট্রো সফরের ইচ্ছা ছিল তাঁর। ছবি পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘শ্রীধরনজি (দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশনের প্রাক্তন প্রধান ই শ্রীধরন, যিনি ‘মেট্রো ম্যান’ বলে পরিচিত) সব সময় আমাকে মেট্রো চড়ার অভিজ্ঞতার কথা বলেন। আজ সেই সুযোগ হল আমারও।’’
কিন্তু মোদীর মেট্রো সফরের সময় নিয়ে অন্য রাজনীতিও দেখছেন অনেকে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনে রাহুল গাঁধীর অতি-সক্রিয় হয়ে ওঠার সঙ্গেও একে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। সংসদে কোনও না কোনও বিষয় নিয়ে মোদীকে নিশানা করছেন রাহুল। কৃষক আত্মঘাতী হওয়ার খবর পেয়েই সোজা হাসপাতাল ছুটছেন। যে কেদারের পুনর্গঠন নিয়ে এক সময় মোদী তৎপর হয়েছিলেন, আজ সেখানেই পদযাত্রা করে রোজ প্রচারের আলোয় রাহুল। কংগ্রেস নেতারা কথায় কথায় প্রশ্ন তুলছেন, কোথায় প্রধানমন্ত্রী? আম-আদমির পাশে দাঁড়াচ্ছেন কোথায়? অকাল বর্ষণে কৃষকদের মাথায় হাত, তবু প্রধানমন্ত্রী কেন ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে যাচ্ছেন না?
কংগ্রেস নেতারা জানেন, হুটহাট যত্রতত্র ছুটে যেতে পারেন না প্রধানমন্ত্রী। তাঁর যে কোনও সফরের আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাটো করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তার পরোয়া না করেই রাহুল এখন ছুটে বেড়াচ্ছেন এ দিক-ও দিক। দীর্ঘ অজ্ঞাতবাসের পর দলকে চাঙ্গা করতে গোটা দেশ চষে বেড়াবেন তিনি। আর মোদী সরকার আম-আদমির পাশে নেই, কৃষকদেরও বিরুদ্ধে- গোটা কংগ্রেস শিবির এই প্রচার করে যাচ্ছে লাগাতার। এই পরিস্থিতিতেই নিজেকে আম-আদমির প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিপন্ন করতে তৎপর হয়েছেন মোদী। দিল্লিতে কৃষক আত্মহত্যার পর তিনি সংসদের ভিতর ও বাইরে সক্রিয় হয়েছেন। অকাল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য সাহায্য ঘোষণা করেছেন। আর আজ মেট্রো চেপে মোদী বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি আম জনতার সঙ্গেই আছেন। প্রধানমন্ত্রী হয়ে নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনির মধ্যে থাকতে হলেও তাঁদের মতো জীবনযাপন করতে চান।
মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের অবশ্য মত, মোদী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মন্ত্রীদের সাইকেল ব্যবহারের নির্দেশ আগেই দিয়েছেন। আজ দিলেন মন্ত্রীদের মেট্রো ব্যবহারের বার্তা। সংসদীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর মন্তব্য, ‘‘বিমানবন্দর থেকে বাড়ি যেতে মেট্রোতে চড়াই পছন্দ করি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের মতামতও জানা যায়।’’ বিজেপি সাংসদ অর্জুন মেঘওয়াল তো কয়েক দিন ধরে সাইকেল চেপে সংসদে আসতে শুরু করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy