এ বছরে রেকর্ড হবে, সেটা ভেঙে আগামী বছরে তৈরি হবে নয়া রেকর্ড। নরেন্দ্র মোদী সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে কৃষিক্ষেত্রে এমন সাফল্যের দাবি ঘিরে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই উড়ে আসছে তীব্র সমালোচনা।
নিজেকে কৃষক দরদী প্রমাণে মরিয়া মোদী সরকারের কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহের ভবিষ্যৎবাণী, এ বছর দেশে রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন হতে চলেছে। কৃষিমন্ত্রীর দাবি, ২০১৬-’১৭-র ফসলের মরসুমে ২৭৩৩ লক্ষ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হতে চলেছে। এখনও পর্যন্ত খাদ্যশস্য উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছিল মনমোহন সিংহ জমানায়, ২০১৩-’১৪-তে। তার পর টানা দু’বছরের খরার ধাক্কা কাটিয়ে কৃষিক্ষেত্র ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে রাধামোহনের যুক্তি। তাঁর মতে, বর্ষা স্বাভাবিক হলে আগামী বছর এর থেকেও বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদন হবে।
ঠিক এখানেই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। তাঁদের প্রশ্ন, কৃষিতে উৎপাদনের রেকর্ড হলে কৃষক আত্মহত্যা কমছে না কেন? সরকারের নিজের হিসেবই বলছে, চাষি ও ক্ষেতমজুর মিলিয়ে প্রতি বছর গড়ে ১২ হাজার জন আত্মহত্যা করছেন। মোদী সরকারের চিন্তা বাড়িয়ে
বিজেপির কৃষক-দরদ নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলেছে এনডিএ-র শরিক শিবসেনাও। মহারাষ্ট্র এমনিতেই কৃষক আত্মহত্যায় দেশের মধ্যে এক নম্বরে। শিবসেনার অভিযোগ, মহারাষ্ট্র সরকার মুম্বই-নাগপুরের মধ্যে এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করলে কৃষক আত্মহত্যা আরও বাড়বে। কারণ ওই এক্সপ্রেসওয়ের জন্য সেচের সুবিধাযুক্ত জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে মার খাচ্ছেন কৃষকরা।
মোদী সরকারের দাবির বেলুন ফুটো করতে মাঠে নেমেছে কংগ্রেসও। তাদের যুক্তি, মোদী সরকারের তিন বছরে কৃষিতে বৃদ্ধির গড় হার মাত্র ১.৭ শতাংশ। আজ দলের নেতা রাজীব শুক্ল বলেন, ‘‘মোদী জমানায় সবথেকে খারাপ দশা কৃষকদেরই। প্রতি দিন অসংখ্য কৃষক আত্মহত্যা করছেন। কৃষিঋণ লাঘব করতেও কেন্দ্র কিছু করছে না।’’
কংগ্রেসের অভিযোগের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, কেন্দ্র শুধু ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি বাড়ানোর বিপক্ষে। আর চাষ থেকে আয় বাড়নোর লক্ষ্যে বীজ-সারের মতো খরচ কমাতে সক্রিয় কেন্দ্র। একই সঙ্গে তিনি জানান, কৃষিঋণ মকুবে কেন্দ্র কিছু করবে না। চাইলে রাজ্যগুলি করতে পারে। বিরোধীদের অভিযোগ, ফসলের ন্যূনতম দাম না বাড়ালে বা কৃষিঋণ মকুবে কেন্দ্র পদক্ষেপ না করলে কৃষক আরও বিপন্ন হবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy