মঞ্চে পাশবালিশ নিয়ে গদির উপরে হাঁটু মুড়ে বসা নেতাদের এত দিনের ছবিটা উধাও। দিনভর বকবকানির ক্লান্তি কাটাতে বিভিন্ন বিষয় ধরে নেতাদের মধ্যে বিতর্ক। বড় পর্দা, আলোর খেলা, গান-বাজনা— কে বলবে শতাব্দী-প্রাচীন কংগ্রেসের কোনও অধিবেশন!
সভাপতি হওয়ার পরে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন (প্লেনারি)। দলের চেহারা যেমন বদলাতে চাইছেন, অধিবেশনও তেমনই ঝাঁ চকচকে। সকালেই নিজের টুইটার হ্যান্ডলের নাম বদলে নিজের নামে করেছেন। প্রবীণ নেতারা তুললেন নিজস্বী। এমনকী সনিয়াও। তিন দিন ধরে রাত জেগে নেপথ্যে থেকে রাহুলের জন্য মঞ্চ সাজিয়েছেন বোন প্রিয়ঙ্কা। শুধু রাহুলের ছবি দিয়ে সাজিয়ে ভোর চারটে পর্যন্ত কাজ করে ফের সকালে এসেছেন। নতুন স্লোগান বেছেছেন, ‘‘সময় বদলের’’।
কিন্তু নতুন চেহারা দিতে গিয়ে যে রাহুলকে পদে পদে হোঁচট খেতে হবে, তা লুকোলেন না সনিয়া। একে তো দলের সাংগঠনিক শক্তি এখন মজবুত নয়। তার উপর রাহুল যে নতুন মুখ নিয়ে এগোতে চাইছেন, তাতে প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্ব চরমে। এআইসিসি হোক বা রাজ্য নেতায় নেতায় লড়াই থামার লক্ষণ নেই। আজ সেটিই সামাল দিতে নামতে হল রাহুল-সনিয়াকে।
আরও পড়ুন: ব্যালটে ফিরতে চাইছে কংগ্রেস
অধিবেশনের গোড়াতেই রাহুল বললেন, ‘‘ভবিষ্যতের জন্য বদলের কথা বলতে হবে। ঐতিহ্যও বদলাবে। তবে অতীতকে ভুলে নয়। যুবকেরা এগিয়ে নিয়ে যাবে দলকে। কিন্তু অভিজ্ঞদের ছাড়া এগোনো যাবে না। আমার কাজ নবীন ও প্রবীণদের জোড়া লাগানো।’’ আজকের অধিবেশনে প্রবীণদের চেয়ে নবীনদেরই বেশি বলতে দিলেন রাহুল। গুলাম নবি আজাদ, মল্লিকার্জুন খড়্গেদেরও বলতে হল, ‘‘বড় লড়াইয়ের সামনে নিজেদের মধ্যে লড়াই বন্ধ করতে হবে।’’ সনিয়া আরও খোলাখুলি বললেন, ‘‘কঠিন সময়ে রাহুল দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে সকলে মিলে কাজ করতে হবে। অহংবোধ ও আকাঙ্ক্ষার কথা না ভেবে।’’
দু’-এক দিনের মধ্যেই নতুন কর্মসমিতি গড়বেন রাহুল। বাদ যাবেন অনেক প্রবীণ। কিন্তু রাহুলের কাঁধে সনিয়ার দীর্ঘ ছায়াটি থাকায় তা নিয়ে বলার তেমন কিছু থাকবে না। সনিয়ার বক্তব্য শেষে আজ উঠে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানালেন সকলে। আর রাহুল জড়িয়ে ধরলেন মাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy