Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অধ্যাদেশ নিয়ে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীকে তির রাহুলের

আমলা ও বিচারকদের বিরুদ্ধে তদন্ত সংক্রান্ত অধ্যাদেশ নিয়ে বসুন্ধরা রাজেকে বিঁধলেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সহ-সভাপতির দাবি, একবিংশ শতাব্দীতে এমন সিদ্ধান্ত অচল।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪৮
Share: Save:

আমলা ও বিচারকদের বিরুদ্ধে তদন্ত সংক্রান্ত অধ্যাদেশ নিয়ে বসুন্ধরা রাজেকে বিঁধলেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সহ-সভাপতির দাবি, একবিংশ শতাব্দীতে এমন সিদ্ধান্ত অচল।

দেওয়ালির সময়ে নয়া অধ্যাদেশ এনেছে রাজস্থানের বসুন্ধরা রাজে সরকার। সেই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কাজ করার সময়ে কোনও আমলা বা বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে রাজ্য বা কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়া তদন্ত করা যাবে না। সেই অনুমতি পেতে সর্বোচ্চ ছ’মাস সময় লাগতে পারে। তদন্তের সরকারি নির্দেশ আসার আগে সংবাদমাধ্যমও ওই অভিযোগের কথা প্রকাশ করতে পারবে না। এই অধ্যাদেশ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজনীতিতে। বিরোধীদের দাবি, দুর্নীতিগ্রস্তদের আড়াল করতে চাইছে রাজস্থানের বিজেপি সরকার। রাজে সরকারের পাল্টা দাবি, অন্যায় অভিযোগ এনে আমলা বা বিচারকদের হেনস্থা করা হয়। তা রুখতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। আগামিকাল রাজস্থান বিধানসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে। সেই অধিবেশনেই এ নিয়ে বিল আনতে পারে রাজে সরকার।

আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার পথে টিপুর পরিবার

আজ রাহুল টুইটারে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়া, সবিনয়ে জানাচ্ছি আমরা একবিংশ শতাব্দীতে পৌঁছে গিয়েছি। এটা ২০১৭, ১৮১৭ নয়।’’ এই টুইটের সঙ্গে জাতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি রিপোর্টও ‘ট্যাগ’ করেছেন রাহুল। সেই রিপোর্টে অধ্যাদেশের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আইনজ্ঞেরা।

প্রাক্তন আইনমন্ত্রী শান্তি ভূষণ ও প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল সোলি সোরাবজির মতো আইনজীবীদের মতে, এতে অবাধে দুর্নীতি করার সুযোগ দেওয়া হবে। সোলি সোরাবজির কথায়, ‘‘এই অধ্যাদেশ আদৌ বৈধ কিনা, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।’’ প্রাক্তন বিচারপতি এ পি শাহের মতে, সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের বিচারপতির বিরুদ্ধে কী ভাবে পদক্ষেপ করতে হবে তা নিয়ে শীর্ষ আদালতের নির্দিষ্ট রায় আছে। সে ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির অনুমতি নিতে হয়। আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহের কথায়, ‘‘এই অধ্যাদেশ বিচারপতিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বলেই আমার মনে হয়। ম্যাজিস্ট্রেটদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হলেও সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির অনুমতি নিতে হয়। ফলে বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে এই অধ্যাদেশ ঠিক কোন কাজে লাগবে, বুঝতে পারছি না।’’

এই অধ্যাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হাত দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিচারপতি শাহের মতে, কয়েকটি ক্ষেত্রে বাক্‌স্বাধীনতার উপরে নিয়ন্ত্রণের কথা সংবিধানেই রয়েছে। এই অধ্যাদেশ তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা দেখতে হবে। তাঁর মতে, এই অধ্যাদেশের সঙ্গে লোকপাল ও লোকায়ুক্ত আইনের সংঘাত দেখা দিতে পারে। আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে মনে করেন, রাজে সরকারের এই সিদ্ধান্তে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। নাগরিকের কাছ থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে‌ লড়াইয়ের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE