রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু।
উত্তরপ্রদেশের খতৌলীতে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিজেদের গাফিলতি মেনে নিল রেল। শুধু চুনোপুঁটিরা নন, শাস্তির কোপে পড়লেন রাঘববোয়ালেরাও। মুজফ্ফরনগরের কাছে খতৌলীতে পুরী-হরিদ্বার কলিঙ্গ উৎকল এক্সপ্রেস গত কাল বিকেলে দুর্ঘটনায় পড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রেলবোর্ডের সদস্য (ইঞ্জিনিয়ারিং) এ কে মিত্তল, উত্তর রেলের জিএম আর কে কুলশ্রেষ্ঠ, সংশ্লিষ্ট ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার আর এন সিংহ এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার (ট্র্যাক) এ কনসল-কে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। সাসপেন্ড হয়েছেন ৪ অফিসার।
গত কাল কোনও কোনও মহল নাশকতার কথা বললেও সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ (জিআরপি) আজ এফআইআর দায়ের করে। তাতে রেলের গাফিলতির কথাই বলা হয়। কারণ, গত কালই ঘটনাস্থলে জড়ো হওয়া তিন-চার হাজার স্থানীয় বাসিন্দা প্রশাসন ও পুলিশকে জানিয়েছেন, মেরামতির সময় লাইন খুলে রাখাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। যাতে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। দুপুরে রেলবোর্ডও তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করে জানায়, তারাও গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে। রাতে দুর্ঘটনায় দায় কবুল করে শাস্তির কথা ঘোষণা করে বোর্ড।
প্রশ্ন হল, কর্তাদের ছুটিতে পাঠিয়ে বা বদলি করে আদৌ সুরক্ষা বাড়বে কি রেলে? রেলের আধিকারিকদের অনেকেই মনে করছেন, কিছুটা সুফল অবশ্য মিলবে। বড় কর্তারাও শাস্তির মুখে পড়লে, সকলের উপরেই মানসিক চাপ পড়বে। বার্তা যাবে নিচুতলা পর্যন্ত। কাজে গাফিলতির প্রবণতা কিছুটা কমতে পারে এতে।
আরও পড়ুন: দায় কার? রেলের মধ্যেই চলছে দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপ
শুধু গত ১৫ মাসেই উত্তরপ্রদেশে ৬টি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বিরোধীদের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন এর দায় নিচ্ছেন না? রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুই বা কেন ইস্তফা দিচ্ছেন না? রেলের গাফিলতিতে এতগুলি মানুষের মৃত্যুতে অফিসারদের ছুটিতে পাঠানোকে গুরু পাপে লঘু দণ্ড বলেই মনে করছেন তাঁরা। রেলের বক্তব্য, সবেমাত্র প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। তদন্তের পরে কাউকেই রেয়াত করা হবে না।
রেলমন্ত্রী প্রভু আজ সকালেই বলে দিয়েছিলেন রাতের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে। তার ভিত্তিতেই এই শাস্তির পদক্ষেপ। প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ থেকে প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বা কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালারা যদিও বলছেন, প্রধানমন্ত্রী বুলেট ট্রেন চালাতে চাইছেন, আর যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে! মোদী জমানার তিন বছরে ২৭টি রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। শুধু গত ১৫ মাসেই উত্তরপ্রদেশে ৬টি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রতি বারই নতুন-নতুন তত্ত্ব হাজির করে দায় ঝেড়ে ফেলেছে সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy