Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

রাহুল বলার আগেই সরতে চান প্রবীণেরা

তা হলে সেটা প্রকাশ্যে বলছেন না কেন? অন্তত একটি টুইটও তো করে দিতে পারেন, ইস্তফা দেননি! এ বারে ব্যাকফুটে প্রাক্তন অভিনেতা।

রাজ বব্বর। —ফাইল চিত্র।

রাজ বব্বর। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৮ ০৪:০৬
Share: Save:

সকাল বেলায় সংসদ চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাজ বব্বর। রাত থেকেই চাউর হয়েছে, উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। প্রশ্ন করলে বলছেন, ‘‘কে যে রটাচ্ছে? আমি অন্তত ইস্তফা দিইনি!’’

তা হলে সেটা প্রকাশ্যে বলছেন না কেন? অন্তত একটি টুইটও তো করে দিতে পারেন, ইস্তফা দেননি! এ বারে ব্যাকফুটে প্রাক্তন অভিনেতা। জিভ কেটে বললেন, ‘‘সে দিন রাহুল গাঁধী বলেছেন, সংগঠনের খোলনলচে বদলে ফেলবেন। তিনি যাঁকে চাইবেন, উত্তরপ্রদেশের সভাপতি করবেন। আমাকে যে দায়িত্ব দেবেন, সেটাই পালন করব।’’

রবিবার কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনের শেষ দিনে রাহুল যেই না বলেছেন, প্রবীণদের সম্মান রেখে যুবকদের নেতৃত্বে নিয়ে আসবেন— ‘ইস্তফার’ হিড়িক পড়েছে। গুজরাতের প্রদেশ সভাপতি ভরত সোলাঙ্কিও ইস্তফা দিয়েছেন বলেও রটেছে। তাঁর দফতরও সে খবর অস্বীকার করেছে। পরিবার নিয়ে আমেরিকায় যাওয়ার কথা ছিল, শেষ মুহূর্তে সেটাও বাতিল করেছেন সোলাঙ্কি।

তবে গোয়ার প্রদেশ সভাপতি শান্তারাম নাইক কিন্তু খোলাখুলি বলেছেন, রাহুলের বক্তৃতায় ‘অনুপ্রাণিত’ হয়ে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। আর যে সব নেতা এখনও ইস্তফার খবর স্বীকার করছেন না, ঘরোয়া মহলে তাঁরা এই কথাই বলছেন।

ঠিক যেন ‘কামরাজ প্ল্যান’। ১৯৬৩ সালে কুমারস্বামী কামরাজ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কংগ্রেসের সব প্রবীণ নেতার মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলের কাজ করা উচিত। কংগ্রেস জিতলেও জনতার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে। এই পরিকল্পনার পর নেহরুও সরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কামরাজ তাঁকে বিরত করেন। কিন্তু লালবাহাদুর শাস্ত্রী, জগজীবন রাম, মোরারজি দেশাইের মতো ছ’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কামরাজ, বিজু পট্টনায়ক, এস কে পাটিল-সহ ছ’জন মুখ্যমন্ত্রীও পদত্যাগ করেন।

প্লেনারিতে রাহুলের পরিকল্পনা শুনে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতারাও এখন অনেকটা সেই পথ ধরছেন। খাতায় কলমে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে ইস্তফা দিন বা না-দিন, রাহুল গাঁধী যাতে সংগঠন ঢেলে সাজতে পারেন, তার জন্য আগেই পদ ছেড়ে দিতে চাইছেন প্রবীণ নেতারা। কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘রাহুল ছেড়ে দিতে বলার আগে নিজে পদ ছেড়ে দেওয়াটাই সম্মানের। তার পর তিনি সেই পদে রাখলে ভাল, অন্য দায়িত্ব দিলে দেবেন। নেতারা তাই ইস্তফার খবর নিজেরাই ছাড়াচ্ছেন সুকৌশলে।’’ কোন নবীন মুখ নতুন পদে আসেন, তা নিয়েও পারদ চড়ছে জল্পনার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE