Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লভ জেহাদ বিতর্কে উদাহরণ করিনা!

নীল রঙের একটি বইয়ে বলা হয়েছে, হিন্দু মহিলাদের ধর্ম পরিবর্তনে গত হাজার বছর ধরে লভ জেহাদকে ব্যবহার করে আসছেন মুসলিমরা।

মুম্বইয়ের পরে এ বার রাজস্থানে। থামছে না লভ জেহাদ নিয়ে বিতর্ক।

মুম্বইয়ের পরে এ বার রাজস্থানে। থামছে না লভ জেহাদ নিয়ে বিতর্ক।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫১
Share: Save:

সম্প্রতি মুসলিম স্বামীর বিরুদ্ধে মারধর ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন মডেল রশ্মি শাহবাজকের। এ বার ‘লভ জেহাদ’ নিয়ে সচেতন করতে বলিউডের মুসলিম তারকাদের ছবি দেওয়া প্রচারপত্র ও বই স্কুলের ছাত্রীদের হাতে তুলে দিতে চেয়ে বিতর্কের মুখে পড়ল রাজস্থান সরকারের শিক্ষা দফতর।

সূত্রের খবর, রাজ্যের ছাত্রীদের লভ জেহাদ নিয়ে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে সরকারের তরফে নির্দেশিকা পাঠিয়ে বিভিন্ন স্কুলকে জানানো হয়েছে, ‘হিন্দু স্পিরিচুয়ালিটি অ্যান্ড সার্ভিস ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংস্থার আয়োজন করা মেলায় ছাত্রীদের পাঠাতে। সেখানে বজরং দলের স্টলে রাখা আছে ওই প্রচারপত্র ও বই। ছাত্রী ও তরুণীরা নিজেদের কী ভাবে ‘লভ জেহাদ’ নামে মুসলিম ছেলেদের এই ফাঁদ থেকে বাঁচাবে, তারই বিবরণ রয়েছে তাতে।

নীল রঙের একটি বইয়ে বলা হয়েছে, হিন্দু মহিলাদের ধর্ম পরিবর্তনে গত হাজার বছর ধরে লভ জেহাদকে ব্যবহার করে আসছেন মুসলিমরা। এর উদাহরণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে বলিউড তারকা আমির খান ও সইফ আলি খানের নাম। অভিযোগ তোলা হয়েছে, এই দু’জনই হিন্দু স্ত্রীদের ত্যাগ করে আবার হিন্দু মহিলাদেরই বিয়ে করেছেন। ব্যবহার করা হয়েছে করিনা কপূর খানের ছবিও। বলা হয়েছে, কী ভাবে হিন্দু মেয়েদের প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ধর্ম পরিবর্তন করতে বাধ্য করেন মুসলিমরা। সেটা কী রকম?

বইয়ে বলা হয়েছে, ‘হিন্দু বাড়িতে মুসলিম ছেলেদের নিত্য যাতায়াত, পরিবারের মেয়েদের সঙ্গে গল্প করা, মা-বাবাকে মাতাজি-পিতাজি বলে ডাকা— সবই লভ জেহাদ নামক পরিকল্পনার অংশ। তার পর প্রেমে পড়ে ওই ছেলেকেই বিয়ে করার জেদ ধরে মেয়েটি। বাড়ি রাজি না হলে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। তার পর ধর্ম পরিবর্তন করে ফেলে।’ এ সংক্রান্ত অন্য একটি বইয়ে আবার লেখা, ‘বিয়ের পরে দেহব্যবসা বা জেহাদ ছড়ানোর জন্য কাজে লাগানো হয় মেয়েদের।’

শিক্ষার এই ‘অভিনব’ ভাবনায় ক্ষুব্ধ বিরোধী দল কংগ্রেস। তাদের দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার কোনওটাই পূরণ করতে পারেননি। তাই এই সব ব্যাপার উস্কে জনতার দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। দলের নেতা সচিন পায়লটও বলেন, ‘‘স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে যে সংগঠনগুলি বিষ ছড়াচ্ছে, রাজস্থান সরকার খোলাখুলি তাদের সমর্থন করছে। এই ঘটনা থেকেই তা স্পষ্ট। ভোটের জন্য চাকরি ও দুর্নীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ থেকে জনতার নজর ঘোরাতে চাইছে রাজ্য।’’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে বজরং দল। বিতর্ক শুরু হওয়ার পরেই রবিবার তাদের স্টল থেকে এই সংক্রান্ত বইগুলি সরিয়ে ফেলা হয়। পরে তারা দাবি করে, এমন কোনও বই তারা বিক্রিই করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE