Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সীমান্তে যাচ্ছেন রাজনাথ

সংঘর্ষ থামার কোনও লক্ষণই নেই জম্মু-কাশ্মীরের ভারত-পাক সীমান্তে। গতকাল সারা রাত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর একাধিক সেনা ছাউনি ও গ্রামে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরে পাক বাহিনী এত বড় হামলা চালায়নি বলে জানিয়েছে বিএসএফ। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাবাহিনীর মনোবল বাড়াতে চলতি মাসের শেষে সীমান্ত পরিদর্শনে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২৩
Share: Save:

সংঘর্ষ থামার কোনও লক্ষণই নেই জম্মু-কাশ্মীরের ভারত-পাক সীমান্তে। গতকাল সারা রাত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর একাধিক সেনা ছাউনি ও গ্রামে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরে পাক বাহিনী এত বড় হামলা চালায়নি বলে জানিয়েছে বিএসএফ। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাবাহিনীর মনোবল বাড়াতে চলতি মাসের শেষে সীমান্ত পরিদর্শনে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

সম্প্রতি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক গোলযোগ বাড়া ও ভারত-পাক বিদেশসচিব বৈঠক বাতিল হওয়ার পরেই সীমান্তে পাক হামলার তীব্রতা বাড়ে। তবে যে ভাবে প্রায় গত তিন সপ্তাহ ধরে পাক বাহিনী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তা শান্তির সময়ে নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন বিএসএফের ডিজি ডি কে পাঠক।

পাক বাহিনীকে কড়া জবাব দেওয়ার জন্য প্রথম থেকেই নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সামগ্রিক ভাবে পরিস্থিতি বুঝতে গতকাল একাধিক গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আগামী ২৯ অগস্ট উপদ্রুত এলাকায় সীমান্ত সফরে যাবেন বলে ঠিক করেছেন তিনি। গোয়েন্দা কর্তারা রাজনাথকে জানান, বড় মাপের জঙ্গি অনুপ্রবেশের লক্ষ্যেই পরিকল্পিত ভাবে ওই আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। উপত্যকায় শীত শুরু হওয়ার আগেই জঙ্গি অনুপ্রবেশ সেরে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছে পাকিস্তান। মন্ত্রকের মতে, গোটাটাই পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের পরিকল্পনামাফিক হচ্ছে। মন্ত্রকের একটি সূত্রের দাবি, উৎসবের মরসুমে ভারতে একাধিক বড় মাপের নাশকতামূলক হামলা চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে আইএসআই। তাই মরিয়া হয়ে হামলা চালাচ্ছে পাক বাহিনী। রাজনাথের সফরের আগে ওই আক্রমণের তীব্রতা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা।

অনুপ্রবেশ করতে জঙ্গিরা যে সীমান্তে অপেক্ষা করে আছে তা মেনে নিয়েছেন বিএসএফের ডিজি। আজ বিএসএফের জম্মুর মিরন সাহিব সদর দফতরে পাঠক জানান, “জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে ২৫-৩০টি স্থানে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জঙ্গিরা ভারতে প্রবেশের জন্য লুকিয়ে অপেক্ষা করছে।”

পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে নয়াদিল্লির। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ইস্তফার দাবিতে ইমরান খান ও তাহির-উল-কাদরির নেতৃত্বে ইসলামাবাদে এখনও বিক্ষোভ চলছে। আজ সেই বিক্ষোভ ও কাশ্মীর সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে পাক সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নওয়াজ। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে দু’দেশের সম্পর্ক ঠিক করতে উদ্যোগী হন নওয়াজ। গোয়েন্দাদের মতে, তা পছন্দ হয়নি পাক সেনার একাংশের। তাই নওয়াজকে রাজনৈতিক ভাবে দুর্বল করতে ইমরান-কাদরির বিক্ষোভে গোপনে মদত দিয়েছে তারা। সীমান্তে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে। বিপাকে পড়ে নওয়াজ এখন পাক সেনার উপরে অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা দিল্লির।

পাক বাহিনীর হামলায় ইতিমধ্যেই বিএসএফের একাধিক জওয়ান নিহত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন গ্রামবাসীও। আজ কূপওয়ারায় জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে ধনঞ্জয় কুমার নামে এক সেনা জওয়ান নিহত হয়েছেন। নিহত হয়েছে এক জঙ্গিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE