সম্মান: লেহ-তে লাদাখ স্কাউটস রেজিমেন্টের হাতে সামরিক সম্মান ‘প্রেসিডেন্টস কালারস’ তুলে দিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ছবি: পিটিআই।
ডোকলামে এখনও দু’প্রান্তে সঙ্গিন উঁচিয়ে দু’পক্ষ। তবুও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের দাবি, দ্রুত মিটবে ডোকলামের সীমান্ত সমস্যা। কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, চলতি বছরের শেষে চিনে কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস রয়েছে। সেখানেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। ভারত আশা করছে, বেজিং-এ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলেই সীমান্ত পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
তবে এই মুহূর্তে অন্তত ভারত-চিনের স্নায়ুযুদ্ধ চরমে। যার জেরে ১৫ অগস্ট লাদাখের প্যাংগং হ্রদের কাছে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে ভারতীয় ও চিনা বাহিনী। ওই ঘটনা নিয়ে তখন কোনও মন্তব্য করেনি বেজিং। কিন্তু আজ চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, প্যাংগং হ্রদের কাছে ভারতীয় জওয়ানদের সঙ্গে প্রবল লড়াইয়ের ফলে কয়েক জন চিনা জওয়ান আহত হয়েছেন। বেজিংয়ের দাবি, চিনা জওয়ানেরা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নিজেদের এলাকাতেই টহল দিচ্ছিলেন। ভারতীয় জওয়ানেরাই তাঁদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনইংয়ের বক্তব্য, ‘‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি বজায় রাখতে দু’দেশের সমঝোতা রয়েছে। এমন ঘটনায় স্থিতাবস্থা নষ্ট হয়। চিন নানা স্তরে এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছে।’’
সূত্রে খবর, প্যাংগং হ্রদের কাছে চিনা সেনার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়েছে ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের (আইটিবিপি)। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ ডোকলাম নিয়ে বার্তা দেওয়ার জন্য আইটিবিপি-র অনুষ্ঠানের মঞ্চকেই বেছে নেন রাজনাথ। ১৯৬২-তে ভারত-চিন যুদ্ধের কয়েক মাস আগে গঠিত ওই আধা সামরিক বাহিনী উত্তরে লাদাখ থেকে পূর্বে অরুণাচল পর্যন্ত ৩৪৮৮ কিলোমিটার ভারত-চিন সীমান্ত পাহারার দায়িত্বে রয়েছে। অনুষ্ঠানে বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসার পাশাপাশি শান্তির বার্তা দিয়ে রাজনাথ বলেন, ‘‘আলোচনার মাধ্যমেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আশা করব চিনের পক্ষ থেকে এই বিবাদ মেটানোর জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ করা হবে।’’
ভারতীয় সেনা সরে না আসা পর্যন্ত নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনায় বসতে খুব একটা রাজি নয় বেজিং। যদিও রাজনাথ মনে করছেন খুব দ্রুত সমাধান সূত্র পাওয়া যাবে। কারণ, রাজনাথের কথায়, ‘‘ভারত কখনও কোনও দেশকে আগ বাড়িয়ে আক্রমণ করেনি। ভারতের নিজেদের সীমানা বাড়ানোর কোনও ইচ্ছেও নেই।’’ রাজনাথের হুঁশিয়ারি, ‘‘তবে আমাদের জওয়ানেরা যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।’’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো আইটিবিপি-র অফিসারেরাও মনে করছেন আগামী দু’-তিন মাসের মধ্যে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা ঠাণ্ডা হয়ে আসবে। যুক্তি, চলতি বছরের শেষে সে দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন রয়েছে। ফলে রাজনৈতিক ভাবেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং এখন চাইছেন পার্টির মধ্যে ভারত বিরোধিতার প্রশ্নে নিজের সবল অবস্থান তুলে ধরতে। যা তাঁকে নির্বাচনে সুবিধে দেবে।
চিনের উদ্দেশে শান্তিবার্তার পাশাপাশি বাহিনীর ক্ষোভ নিরসনেও উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। বিভিন্ন কারণে গত ছ’বছর ধরে পদোন্নতি বন্ধ ছিল আইটিবিপিতে। বিষয়টি নিয়ে বাহিনীর মধ্যে ক্রমশ ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে দেখে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা। তারপরেই আজ এক ধাক্কায় অফিসার-জওয়ান মিলিয়ে ১৬৫৪ জনকে পদোন্নতি দেয় আইটিবিপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy