গত কালই সুর চড়িয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী। এ বার ইসলামাবাদকে কড়া বার্তা দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। আজ সরাসরিই তিনি বলে দিলেন, কাশ্মীর নিয়ে তৃতীয় কোনও পক্ষের নাক গলানো বরদাস্ত করবে না দিল্লি।
হিজবুল মুজাহিদিন কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই অশান্ত গোটা কাশ্মীর উপত্যকা। সেনা-পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৪৭ জনের। আহত বহু। এই অবস্থায় দু’দিনের কাশ্মীর সফরে কাল শ্রীনগর পৌঁছেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আজ মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি-সহ রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে প্রথমে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকের পরে রাজনাথ বলেন, ‘‘কাশ্মীর সমস্যা সমাধান করতে আমরা এখানকার মানুষের সঙ্গে গভীর আবেগের সম্পর্ক তৈরি করতে চাই। এর জন্য যে কোনও কাশ্মীরির সঙ্গে কথা বলতে আমরা প্রস্তুত। কিন্তু তৃতীয় কোনও পক্ষ নাক গলাতে এলে কেন্দ্র কোনও ভাবেই তা বরদাস্ত করবে না।’’ দিল্লির অভিযোগ, কাশ্মীরে নতুন করে শুরু হওয়া অশান্তিতে গত কয়েক দিন ধরেই ইন্ধন জুগিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। দু’দিন আগেই তিনি বলেছেন, কাশ্মীর কবে পাকিস্তানের অংশ হবে, তার জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। আজ রাজনাথ এর জবাবে জানান, পাকিস্তানের মানসিকতা বদলের সময় এসেছে। বলেন, ‘‘কাশ্মীর নিয়ে ওদের ভূমিকা আদৌ পাক (শুদ্ধ) নয়। এখানে শান্তি ফেরানোর জন্য কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের প্রয়োজনই নেই।’’
শুধু রাজনাথই নন। কাশ্মীরের যুব সম্প্রদায়কে ইন্ধন জোগানোর জন্য আজ মুখ্যমন্ত্রী মুফতিও একহাত নিয়েছেন ইসলামাবাদকে। বলেছেন, ‘‘একটা কাশ্মীরি শিশু হাতে বন্দুক তুললে ওরা (পাকিস্তান) তাকে নেতার আসনে বসায় আর বলে সে খুব ভাল কাজ করছে। ওদের মাদ্রাসার শিশুরা সেই একই কাজ করলে তাকে ড্রোন হানায় মারে, নয়তো ফাঁসিতে ঝোলায়। এ ভাবে আমাদের ছেলেদের মদত দেওয়া ছেড়ে বরং নিজেদের নীতি বদলাক পাকিস্তান।’’ তবে সেই সঙ্গে পরীক্ষামূলক ভাবে কাশ্মীর থেকে আফস্পা প্রত্যাহার নিয়ে কেন্দ্রকে চাপও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সুষমা-রাজনাথ-মেহবুবার এই আক্রমণকে অবশ্য আজ রাতের মধ্যেই ফিরিয়ে দিয়েছেন পাক বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ। শরিফের সুরে সুর মিলিয়েই আজ আজিজ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নজরদারিতে অবিলম্বে জম্মু-কাশ্মীরে গণভোটের ব্যবস্থা করা উচিত।’’
গত কয়েক দিনের থেকে উপত্যকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আজ কার্ফু জারি ছিল বারামুলা, সোপিয়ান, কুলগাম, কুপওয়ারা আর অনন্তনাগে। রাজধানী শ্রীনগরের আট থানা এলাকাতেও আজ ছিল কার্ফু। বেড়েছে হামলায় নিহতের সংখ্যাও। আজই মৃত্যু হয়েছে সংঘর্ষে আহত এক পুলিশ ও এক সাধারণ নাগরিকের। বিক্ষোভ সামলাতে যাতে ছররা গুলি ব্যবহার না করা হয়, তার জন্য ফের সেনা-পুলিশকে অনুরোধ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy