Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কোবিন্দের মনোনয়নে শক্তি জাহির

এনডিএ-র বাইরে তেলঙ্গানা ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীকে এনে, লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীদের হাজির করিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রামনাথ কোবিন্দের মনোনয়ন পেশকে কার্যত উৎসবে পরিণত করলেন নরেন্দ্র মোদী।

রাম-নাম: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মননোয়ন পেশের পরে রামনাথ কোবিন্দ। পাশে মোদী-আডবাণী। পিটিআই

রাম-নাম: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মননোয়ন পেশের পরে রামনাথ কোবিন্দ। পাশে মোদী-আডবাণী। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০৪:৫২
Share: Save:

শক্তি দেখানোর মঞ্চে আজ ছিলেন না উদ্ধব ঠাকরে, মেহবুবা মুফতি, নীতীশ কুমার, নবীন পট্টনায়ক। তবু এনডিএ-র বাইরে তেলঙ্গানা ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীকে এনে, লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীদের হাজির করিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রামনাথ কোবিন্দের মনোনয়ন পেশকে কার্যত উৎসবে পরিণত করলেন নরেন্দ্র মোদী।

বিরোধী শিবির মীরা কুমারের নাম ঘোষণার পরে অঙ্কের হিসেবে কে কোথায় দাঁড়িয়ে, মোটামুটি স্পষ্ট। কিন্তু তার পরেও আগামী তিন সপ্তাহে বিরোধী শিবির ভাঙিয়ে আরও ৭-৮ শতাংশ ভোট টানতে মরিয়া মোদী ও অমিত শাহ। এক শীর্ষ বিজেপি নেতা আজ বলেন, ‘‘২৮টি দল, ২০ জন মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থন নিয়ে রামনাথের পক্ষে এখনই প্রায় ৬২ শতাংশ ভোট রয়েছে। সেটিকে ৭০ শতাংশে নিয়ে যেতে চাইছি।’’

কী ভাবে?

ওই নেতার কথায়, ‘‘বিরোধী শিবিরের শীর্ষ নেতারা যা-ই সিদ্ধান্ত নিন, তাঁদের দলের অনেকেই চান ২০১৯ সালে বিজেপির সঙ্গে থাকতে। বিবেকের ডাকে তাঁরা বিজেপিকেই ভোট দেবেন।’’ মোদীদের আশা, শরদ পওয়ার গত কাল সনিয়া গাঁধীর বৈঠকে মীরার নামে সায় দিলেও ভবিষ্যতে খেলা ঘুরতে পারে। মুলায়ম সিংহ যাদব তো আগেই রামনাথকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।

রামনাথ জিতছেনই— এই বার্তা জোরালো ভাবে দিতেই আজ সাড়ে তিনশো জনের সই সম্বলিত মনোনয়ন পেশ পর্বকে শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ বানিয়েছিলেন মোদী। সেখানে নীতীশের গরহাজিরা নিয়ে আশা দেখেছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু বিহারের মুখ্যমন্ত্রী সন্ধ্যায় বলে দেন, ‘‘খুবই গর্বের কথা, বিহারের রাজ্যপাল দেশের রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন। এ নিয়ে সংঘাত তৈরি হওয়া উচিত নয়।’’ নবীন-উদ্ধব না এলেও তাঁদের প্রতিনিধিরা এসে মনোনয়নে স্বাক্ষর করে গিয়েছেন। কাশ্মীরের অশান্তির জন্য মেহবুবা আসতে পারেননি। কিন্তু এনডিএ ও তার বাইরের একাধিক মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ঐক্য বোঝাতে আডবাণীর হাত কিছুটা জোর করে তুলে ধরে ছবি তোলেন মোদী নিজেই।

সংসদ চত্বরে এনডিএ-র নেতারা বলেন, মীরার পরাজয় নিশ্চিত। কংগ্রেসের দলিত প্রেম থাকলে মীরাকে আগে প্রার্থী করেনি কেন? রামনাথ বলেন, রাজ্যপাল হওয়ার পর থেকেই তিনি আর কোনও দলের নন। রাষ্ট্রপতির পদ দলের ঊর্ধ্বে। তাই সকলেরই সমর্থন চেয়েছেন। রবিবার থেকেই রামনাথের রাজ্য সফর শুরু। প্রথমেই উত্তরপ্রদেশ।

আগামী সপ্তাহে মনোনয়ন পেশের কথা মীরার। বিজেপিকে প্রচ্ছন্ন খোঁচা দিয়ে তিনি আজ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সকলকে নিয়ে চলা, সামাজিক ন্যায় এবং বহুত্ববাদ— এই মূল্যবোধের ধারক যদি রাষ্ট্রপতি না হতে পারেন, তা হলে সংবিধানকে খাটো করা হবে। রাষ্ট্রপতির পদটা প্রতীকী নয়, জাত-ধর্মের ঊর্ধ্বে।’ ঘরোয়া মহলে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘বিজেপি যদি বিরোধী

শিবির ভাঙার চেষ্টা করে, তা হলে সেটা উল্টো দিক থেকেও হতে পারে।’’ কিন্তু মুখে বললেও কাজে করে দেখানো যাবে কি? বলবে আগামী তিন সপ্তাহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE