বিয়ে: ‘রিভলভার রানি’ বর্ষা আর অশোক।
বর্ষা সাহুকে মনে আছে তো? প্রেমিককে ছাদনতলা থেকে ‘বন্দুক দেখিয়ে অপহরণ’ করে নিয়ে গিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। বুন্দেলখণ্ডের সেই মেয়ের নাম হয়ে গিয়েছিল ‘রিভলভার রানি’! সেই প্রেমিকের সঙ্গেই দু’দিন আগে নিজের বিয়েটা সেরে ফেললেন বর্ষা।
গত ১৫ মে’র সেই অপহরণের খবর চমকে দিয়েছিল সবাইকে। অভিযোগ উঠেছিল, বিয়ের আসর থেকে পাত্র অশোক যাদবকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে গিয়েছেন তাঁর ‘প্রত্যাখ্যাত’ প্রেমিকা। দিন তিনেকের মধ্যেই পুলিশের জালে ধরা পড়েন বর্ষা ও অশোক। তার পরেই অবশ্য জানা যায়, যা রটেছিল আর যা ঘটেছিল তার মধ্যে বিস্তর ফারাক। আদতে বর্ষা আর অশোকের বোঝাপড়াতেই অভিনীত হয়েছিল সেই ‘অপহরণ’ নাটক।
বর্ষা আর অশোক বিয়ের মণ্ডপ ছেড়ে বেড়িয়ে যাওয়ার পরই বর ও কনে পক্ষের তরফ থেকে থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে লেখা হয়, মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বরকে তুলে নিয়ে গিয়েছেন বর্ষা সাহু। যদিও পুলিশের কাছে বর্ষা দাবি করেন, বন্দুক নিয়ে যাওয়া তো দূর অস্ত, প্রেমিককে অপহরণও করেননি তিনি। অশোক তাঁর সঙ্গে স্বেচ্ছায় পালিয়েছিলেন। বর্ষার আরও দাবি, তাঁদের সম্পর্কের কথা কনের বাড়ির লোকজনও জানত। এমনকী এটাও জানত যে, ওই বিয়েতে অশোকের মত নেই। তা সত্ত্বেও তাঁরা বিয়ে ঠিক করেছিলেন। এর পরই কনের বাবা লালু যাদব অশোকের বিরুদ্ধে প্রতারনার অভিযোগ দায়ের করেন। বর্ষা ছাড়া পেয়ে গেলেও, প্রতারণার দায়ে গ্রেফতার করা হয় অশোককে।
তদন্তে জানা যায়, কাজের সূত্রে বর্ষার সঙ্গে পরিচয় ও আলাপ অশোক যাদবের। এর পর প্রেম। অশোক-বর্ষার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, ওরা দু’জন গোপনে বিয়েও সেরেছিল। কিন্তু অশোকের বাড়ির লোকজন সে সম্পর্ক মেনে নেয়নি। অন্যত্র ছেলের বিয়েও ঠিক করে ফেলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: গ্রেফতার হলেন ‘রিভলভার রানি’
প্রেমিকের জামিনের জন্য বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয় বর্ষাকে। অবশেষে ৪ জুলাই অশোক জামিনে ছাড়া পান। আর দেরি করেননি ‘রিভলভার রানি’। রবিবার হামিরপুরের মাতা চৌরার মন্দিরে সামাজিক রীতি মেনে বিয়ে সেরে ফেললেন অশোকের সঙ্গে। এই বিয়ের সাক্ষী থাকলেন প্রায় ১০০ জন মানুষ। বিয়ের আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় শিবসেনা নেতা, কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের শিবসেনা সভাপতি রতন ব্রহ্মচারীও। এ দিনই তিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ার কথা ঘোষণা করেন। হিন্দুস্তান টাইমস্-কে তিনি বলেন, “স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নাম দিয়েছি ‘রিভলভার রানি’। সংগঠনের শীর্ষে থাকবেন খোদ বর্ষা সাহু। সমাজে মেয়েদের উপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করবে এই সংগঠন।”
আর কী বলছেন রিভলভার রানি? তিনি বলেন, “এই দিনটির জন্য আমি অনেক লড়াই করেছি। আজ আমি খুব খুশি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy