পৃথক রাজ্যের দাবি আছে জেনেও ভোটের আগে আইপিএফটি-র সঙ্গে জোট করেছিল বিজেপি। নির্বাচনে সাফল্যের পরে সেই দাবি ঘিরেই এ বার টানাপড়েন বাধছে ত্রিপুরার সরকারের দুই শরিকের।
গত কয়েক দিনে পৃথক ভাবে দিল্লিতে দরবার করেছেন ত্রিপুরার বিজেপি এবং আইপিইফটি নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আমলাদের নিয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব। পাশাপাশি আইপিএফটি নেতারা দেশের রাজধানী শহরে মিছিল-সহ কিছু কর্মসূচি নিয়েছিলেন তাঁদের দাবির কথা তুলে ধরতে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবের দাবি, আইপিএফটি এই রকম কোনও আন্দোলনই করেনি!
এই জটিলতার মধ্যেই নতুন মাত্রা যোগ করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য। সংসদে প্রশ্নের জবাবে তারা জানিয়ে দিয়েছে, পৃথক ‘তিপ্রাল্যান্ডে’র দাবি খতিয়ে দেখার জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কোনও কমিটি গড়ার পরিকল্পনাও কেন্দ্রের নেই! ভোটের আগে তেমন আশ্বাস পাওয়ার পরেও এখন কেন্দ্রের অবস্থান এবং সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে যথেষ্টই উষ্মা তৈরি হয়েছে আইপিএফটি শিবিরে। দলের সভাপতি এন সি দেববর্মা জানিয়ে রেখেছেন, সরকারে যোগ দিলেও পৃথক রাজ্যের জন্য আন্দোলনে নামতে কোনও বাধা নেই। এখন চাপে পড়়ে নিজেদের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখার স্বার্থে তাঁরা সরাসরি আন্দোলনের পথেই যাবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে ওই উপজাতি সংগঠনের অন্দরে।
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব আইপিএফটি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘‘তেমন কোনও আন্দোলন ওঁরা করেননি। এন সি আমাদের সঙ্গে আছেন। আসল ব্যাপার হল, বঞ্চনা থেকে অনেক দাবি উঠে আসে।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘সন্তান যেমন মায়ের কাছে দুধ না পেলে পাশের বাড়ি গিয়ে হল্লা করে, এটাও অনেকটা সে রকম!’’
কেন্দ্রের বক্তব্য এবং মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আইপিএফটি-র সাধারণ সম্পাদক তথা ত্রিপুরার উপজাতি কল্যাণমন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘আমরা এখন আলোচনার প্রক্রিয়ায় আছি। এখন মন্তব্য করব না।’’ সংগঠন সূত্রের খবর, অন্তত কমিটি গড়ার দাবি মেনে নেওয়ার জন্য তারা বিজেপির উপরে চাপ বাড়াতে পারে।
বিরোধী দল সিপিএম এমতাবস্থায় মুখ বন্ধ রেখে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘বিজেপি এবং আইপিএফটি-র পরস্পর-বিরোধী বক্তব্যের কথা ভোটের প্রচারেই আমরা বলেছিলাম। কিন্তু মানুষ ওদের ভোট দিয়েছেন। এখনই আমরা কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy