বিজয়া দশমীতে নাগপুরে আরএসএসের বার্ষিক মহাযজ্ঞে বিশেষ অতিথি ছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। এই মুহূর্তে দলে কার্যত ব্রাত্য আডবাণীকে নাগপুরে ডেকে নিয়ে মোদী সরকারকে সঙ্ঘ কী বার্তা দিতে চাইছে, তা নিয়েই দিল্লিতে এখন তোলপাড় চলছে।
অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এক দিন আগেই নাগপুরে পৌঁছন আডবাণী। সঙ্গে কন্যা প্রতিভা আর সচিব দীপক চোপড়া। সেখানে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের সঙ্গে আডবাণীর দীর্ঘ আলোচনা হয়। সঙ্ঘের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব বিজয়া দশমীতেই হয়। এখানে সরসঙ্ঘচালক ছাড়া কেউ বক্তব্য রাখেন না। আর সঙ্ঘের গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে নিতিন গডকড়ী ছাড়া মোদী সরকারের কোনও মন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন না।
এক ঘণ্টার বক্তৃতায় আর্থিক ও কৃষি ক্ষেত্রে সঙ্কট, কর্মসংস্থানের সমস্যা নিয়ে সরকারকে সতর্ক করেন ভাগবত। তখন আডবাণী তাঁর পাশে, মঞ্চে। এই আপাততুচ্ছ ঘটনা নিয়েই তোলপাড় চলছে রাজধানীতে। কারণ, আডবাণী নিজে যেতে চাইলেও আমন্ত্রণ ছাড়া তাঁর পক্ষে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়। বিজয়ার অনুষ্ঠানে সঙ্ঘ কাকে ডাকবে না ডাকবে, তা হিসেব করেই হয়। তাই বিজেপিতে যিনি পরিত্যক্ত, তাঁকেই কেন এত গুরুত্ব দিয়ে বেছে নেওয়া হল, তা নিয়ে দলে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। আর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এ বারই প্রথম ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন আডবাণী। ভাগবত ও আডবাণী সরকারকে কোণঠাসা করতে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ গ্রহণ করেছেন— এমন খবর নেই। তবে আডবাণীকে ডাকাকে সঙ্ঘের বার্তা বলেই ধরে নিচ্ছেন অনেকে।
মোদী সরকার তিন বছর পেরিয়েছে। নোট বাতিল, চাষিদের আত্মহত্যা, জিএসটি থেকে বিদেশনীতি— সঙ্ঘের মুখে সমালোচনার সুর। কিছু দিন আগে দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ভাগবত। সঙ্ঘ সূত্রের খবর, মোদী সরকার থাকায় আরএসএস অনেক সুবিধা পাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের ক্ষোভ দেখতে পাচ্ছে নাগপুর। এই পরিস্থিতিতে আডবাণীকে আমন্ত্রণ তাৎপর্যের।
রামমন্দির আন্দোলনকে সামনে রেখে সঙ্ঘের সঙ্গে মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল আডবাণীর। কিন্তু জিন্না বিতর্কে তা নষ্ট হয়ে যায়। আর বিজেপিতে তাঁকে অপ্রাসঙ্গিক করে দেওয়া হলেও মোদীর বিরুদ্ধে কখনওই মুখ খোলেননি আডবাণী। বরং ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, ‘‘বিজেপি আর মোদী আমার সন্তানের মতো। মুখ খুলব কি করে?’’ তাই এখন প্রশ্ন, নিজের রাজনৈতিক পরিবারে কি এ বার ক্ষোভ জানিয়ে এলেন আডবাণী?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy