Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কমছে শাখা, নতুন প্রজন্মে জোর সঙ্ঘের

হাফ ছেড়ে ফুলপ্যান্ট ধরেছে আরএসএস। ভাবনাকেও আধুনিক করার চেষ্টা হচ্ছে। তবু আরএসএসের শাখার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বেশ কিছু জায়গার নাম। নতুন শাখার খোলার হারও কমতে শুরু করেছে। কোয়াম্বত্তূরে সম্প্রতি শেষ হওয়া আরএসএসের প্রতিনিধিসভায় ভাইয়াজি জোশী এই রিপোর্ট পেশ করেছেন।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩২
Share: Save:

হাফ ছেড়ে ফুলপ্যান্ট ধরেছে আরএসএস। ভাবনাকেও আধুনিক করার চেষ্টা হচ্ছে। তবু আরএসএসের শাখার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বেশ কিছু জায়গার নাম। নতুন শাখার খোলার হারও কমতে শুরু করেছে। কোয়াম্বত্তূরে সম্প্রতি শেষ হওয়া আরএসএসের প্রতিনিধিসভায় ভাইয়াজি জোশী এই রিপোর্ট পেশ করেছেন।

সঙ্ঘের হিসেব বলছে, গত বছর যেখানে গোটা দেশে ৩৬ হাজার ৮৬৭টি জায়গায় শাখা হতো, সেটি এ বারে কমে হয়েছে ৩৬ হাজার ৭২৯। শাখার বৃদ্ধি সামান্যই। ৫৬,৮৫৯ থেকে ৫৭,১৮৫। শাখায় যাঁরা যেতে পারেন না, তাঁদের জন্য তৈরি মণ্ডলীর সংখ্যাও কমেছে। ৮,২২৬ থেকে হয়েছে ৭,৫৯৪। সঙ্ঘ শিবিরের অনেকেরই উদ্বেগ, ২০১০ থেকে, বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে যে ভাবে হু-হু করে শাখা বাড়ছিল, তাতে কেন ভাটা পড়ছে? তবে কি হিন্দুত্বের গোড়ামি থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন?

আরএসএসের দিল্লি প্রান্তের সহসঙ্ঘচালক অলোক কুমার অবশ্য এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁর মতে, ‘‘নতুন প্রজন্ম আসছে না, এই যুক্তি ভুল। আমাদের শাখার ৯০ শতাংশই ৪৫ বছর ও তার কম বয়সি। ৫৩ শতাংশ শাখা ছাত্রদের নিয়ে।’’ অলোক কুমার স্বীকার করেন, শাখার স্থান সামান্য কমেছে। তাঁর যুক্তি, গত কয়েক বছর লাগাতার বৃদ্ধির পর আরএসএস-ই এখন আরও সংগঠিত হতে চাইছে।

আরএসএস সূত্রের মতে, নতুন প্রজন্মকে কাছে টানার জন্য অনেক আগেই একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হয়েছে। পোশাকের বদল তো আছেই, এমনকী নতুন প্রজন্মকে কাছে টানতে কিছু ক্ষেত্রে সংস্কৃত ছেড়ে সমার্থক ইংরেজি শব্দেরও ব্যবহার শুরু হয়েছে। বছর কয়েক আগে দত্তাত্রেয় হোসবোলের মতো সঙ্ঘ নেতা মুম্বইয়ে ‘জেন-নেক্সট’ স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলেন। তাতে বিষয় ছিল ‘ফেসবুক’। সম্প্রতি নানাবিধ বিতর্কে জড়িয়ে পড়া দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিন ধরে ‘উড়ান’ নামক একটি অনুষ্ঠান করা হয়।

এ ধরনের বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে এ বারে সঙ্ঘের সদস্য হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ পেয়েছেন নতুন ১ লক্ষ ব্যক্তি। ৭৫ বছর হলে আরএসএসে কোনও পদের দায়িত্ব এমনিতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। ফলে আরও বেশি করে ছাত্র ও তরুণ পেশাদারদের সঙ্ঘের সঙ্গে জোড়ার চেষ্টা চলছে। সে কারণেই কোয়ম্বত্তূরের প্রতিনিধি সভায় সঙ্ঘের সংগঠনেও রদবদল করা হয়েছে। কিছু রাজ্যের সাংগঠনিক রদবদলের পাশাপাশি সঙ্ঘের সব থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের আহ্বায়ক করে আনা হয়েছে প্রচারক নন্দ কুমারকে।

বাংলা-ভাবনা

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও নয়াদিল্লি

সঙ্ঘ পরিচালিত স্কুল রাজ্য সরকার বন্ধ করে দেওয়ায় ইদানিং একটু অসুবিধা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু রাজ্যে তৃণমূল সরকার থাকে তাদের অন্য কোনও অসুবিধা নেই বলেই জানাল আরএসএস। বামেদের সঙ্গে সঙ্ঘের বিরোধ মতাদর্শগত। সেই তুলনায় তৃণমূল জমনায় শাখার সংখ্যা বেড়েছে রাজ্যে। আরএসএসের মুখপাত্র জিষ্ণু বসুর যুক্তি, বাম জমানায় তাঁরা আরও বাধা মোকাবিলা করে এগিয়েছেন। সামাজিক সংগঠন হিসাবে রাজনৈতিক দলকে নিয়ে তাঁরা বিশেষ ভাবিতও নন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে দিল্লি প্রান্তের সহ-সঙ্ঘ চালক আলোক কুমার আবার জানিয়েছেন, তৃণমূল সরকারের কাজকর্মের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে তাঁদের প্রচার চলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

RSS Youth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE