Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

অশান্তিতে আর্থিক মদত, ধৃত কাশ্মীরের সাত নেতা

পাকিস্তান এবং লস্কর-ই-তইবা যে তাঁদের ক্রমাগত আর্থিক মদত দেয়, তা-ও ভিডিও-য় স্বীকার করতে দেখা গিয়েছে নইমকে। পরে অবশ্য নইম দাবি করেন, গোটা ভিডিওটাই ভুয়ো। কিন্তু সাত বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার বিরুদ্ধে এনআইএ তদন্ত শুরু করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫০
Share: Save:

পাকিস্তান থেকে আর্থিক মদত নিয়ে কাশ্মীরে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে সাত বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে গ্রেফতার করল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা, এনআইএ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন হুরিয়তের কট্টরপন্থী অংশের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলি শাহ গিলানির জামাই আলতাফ আহমেদ শাহ ফান্টুশ গিলানিও।

কাশ্মীরে অশান্তি ছ়ড়াতে পাকিস্তান থেকে হাওয়ালা-সহ বিভিন্ন বেআইনি পথে টাকা আসছে বলে দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ দিল্লির। মাস তিনেক আগে এ নিয়ে স্টিং অপারেশনে নামে এক বেসরকারি চ্যানেল। মে মাসে একটি ভিডিও প্রকাশ করে তারা। তাতে দেখা যায়, হুরিয়ত নেতা নইম খান ৭০ কোটি টাকার বিনিময়ে গোটা কাশ্মীর স্তব্ধ করে দেওয়ার কথা বলছেন। পাকিস্তান এবং লস্কর-ই-তইবা যে তাঁদের ক্রমাগত আর্থিক মদত দেয়, তা-ও ভিডিও-য় স্বীকার করতে দেখা গিয়েছে নইমকে। পরে অবশ্য নইম দাবি করেন, গোটা ভিডিওটাই ভুয়ো। কিন্তু সাত বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার বিরুদ্ধে এনআইএ তদন্ত শুরু করে।

ওই সাত বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে হাজির হতে দু’বার সমন পাঠিয়েছিল এনআইএ। কিন্তু উপত্যকায় অশান্তির জেরে আটক থাকায় তাঁদের অনেকেই হাজিরা দিতে পারেননি। এনআইএ জানিয়েছে, আজ আলতাফ আহমেদ শাহ ফান্টুশ গিলানি, আয়াজ আকবর খান্ডে, রাজা মেহরাজুদ্দিন কালওয়াল, পির সইফুল্লা, আফতাব হিলালি শাহ ও নইম খান বাদগামের হুমহামা এলাকায় এনআইএ-র গোয়েন্দাদের সামনে হাজিরা দেন। তার পরেই তাঁদের হেফাজতে নেওয়া হয়। ছ’জন নেতার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও অন্য জিনিসপত্র তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন গোয়েন্দারা। সাম্প্রতিক অতীতে জঙ্গি দমন অভিযান বা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে যে কোনও পদক্ষেপের সময়েই বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে উপত্যকা। কিন্তু আজ এই নেতাদের গ্রেফতারির সময়ে কোনও বিক্ষোভকারীকে দেখা যায়নি।

জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের নেতা ফারুক আহমেদ দার ওরফে বিট্টা ক্যারাটেকে দিল্লিতেই গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। বাকি ছয় নেতাকেও দিল্লি আনা হয়েছে। আগামিকাল তাঁদের পাটিয়ালা হাউসে বিশেষ এনআইএ আদালতে তোলা হবে। এনআইএ-র অভিযোগ, লস্কর ই তইবা, জইশ ই মহম্মদের মতো পাক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের। কাশ্মীরে পাথর ছোড়া, স্কুল পোড়ানো, সরকারি সম্পত্তি নষ্টের মতো নাশকতামূলক কাজের জন্য হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পান এই নেতারা। ঘটনার তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জম্মু-কাশ্মীর, দিল্লি ও হরিয়ানা থেকে বহু গোপন নথি, নগদ এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র আটক করেছেন বলে দাবি এনআইএ-র।

নরমপন্থী হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুকের অবশ্য দাবি, সরকার এনআইএ-কে ব্যবহার করে কাশ্মীরের মানুষের আন্দোলনকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। নেতাদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে আগামিকাল কাশ্মীরে হরতালের ডাক দিয়েছে হুরিয়ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE